রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। ইউরোপ সেরা হওয়ার আশা শেষ হয়েছে তাদের। এবার লা লিগার শিরোপা স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার লড়াই ডিয়াগো সিমিওনের দলের। কারণ বার্সেলোনার বিপক্ষে ঘরের মাঠে হারলেই লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে বেশ পিছিয়ে যাবে অ্যাতলেটিকো। 

অন্যদিকে শীর্ষস্থান থেকে তিনে নেমে যাওয়া বার্সেলোনা আবার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে উঠবে। শুধু তাই নয় শিরোপার পথে একটা বড় বাধা অতিক্রম করবে তারা। মৌসুম শেষে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার এই ম্যাচটিই তাই শিরোপা নির্ধারণী হয়ে উঠেছে। উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচটি রোববার (দিবাগত) রাত ২টায় মাঠে গড়াবে।

লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদ শীর্ষে আছে। তারা বার্সার চেয়ে এগিয়ে আছে ৩ পয়েন্টে। তবে ম্যাচ খেলেছে দুটি বেশি। অর্থাৎ ২৮ ম্যাচে লস ব্লাঙ্কোসদের পয়েন্ট ৬০। বার্সা ২৬ ম্যাচে তুলেছে ৫৭ পয়েন্ট। অ্যাতলেটিকোর বিপক্ষে জিতলে এক ম্যাচ কম খেলে ৬০ পয়েন্ট হবে কাতালানদের। গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে উঠে যাবে।

অন্য দিকে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদও ভালোভাবেই আছে শিরোপার লড়াইয়ে। তারা ২৭ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট তুলেছে। রাতের ম্যাচে বার্সাকে হারাতে পারলে রোজি ব্লাঙ্কোসদের পয়েন্ট হবে ৫৯। অর্থাৎ ২৮ ম্যাচে রিয়াল ৬০, সমান ম্যাচে অ্যাতলেটিকো ৫৯ ও এক ম্যাচ কম খেলে বার্সার থাকবে ৫৭ পয়েন্ট। ডিয়াগো সিমিওনের দল জিতলেই তাই জমে যাবে লা লিগার শিরোপা লড়াই।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ ল য় ন আলভ র জ

এছাড়াও পড়ুন:

খরচই ওঠে না, ভেঙে ফেলা হচ্ছে সিনেমা হল

দুপুরের কড়া রোদ্দুর মাথায় গলে পড়ছে। কোনোমতে গামছা প্যাঁচিয়ে জিরানোর ছলে কী যেন ভাবছিলেন হাতুড়ি পিটিয়ে দেয়াল ভাঙার শব্দ শুনতে শুনতে। ষাটোর্ধ্ব বয়সী রিকশাচালক আবুল মিয়া এই শহরেই রিকশা চালান তিন যুগের বেশি সময় ধরে। চোখের সামনেই তাঁর কৈশোর-যৌবনের বিনোদনের জায়গাটা ভাঙা হচ্ছে। জানালেন বেদের মেয়ে জোছনা ছবিটা তাঁর খুব প্রিয়। এই শহরে সিনেমাটি যখন আসে টানা ১০ বার দেখেছেন। শেষে মায়ের বানানো গোবরের লাকড়ি বিক্রি করে সিনেমা দেখেছেন। তাঁর মতে সিনেমা দেখতে এত ভিড় অন্য কোনো সিনেমায় দেখেননি। একটা সময় পর নানা কারণে ছবি দেখা ছেড়ে দেন তিনি।
বেশির ভাগ অংশের ভাঙার কাজ শেষ, সামনের অংশটুকু গুঁড়িয়ে দিলেই আর চেনা যাবে না ময়মনসিংহ নগরীর পূরবী সিনেমা হলটি। এই বিনোদন কেন্দ্র ভাঙতে দেখে কৈশোরের স্মৃতিচারণ ও আক্ষেপ করলেন গোহাইলকান্দি এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক আবুল মিয়া।
মালিক পক্ষ জানায়, কয়েক বছর ধরে প্রতি শোতে পাঁচ-সাতজন দর্শক হয়। অনেক সময় 
দর্শক না থাকায় শো বন্ধ থাকে। দিনের পর দিন স্টাফ খরচও না ওঠায় হল ভাঙার সিদ্ধান্ত 
নিতে হয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন করে দর্শক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে পূরবী সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
অনেকে বলছেন, আগেও যতগুলো সিনেমা হল ভাঙা হয়েছে কর্তৃপক্ষের ছিল একই উছিলা। সিনেপ্লেক্সের জায়গায় হয়েছে মোবাইল, প্রসাধনীর জমকালো দোকান। এর আগে ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর অলকা, অজন্তা, ছায়াবাণী ও পূরবী সিনেমা হলে একজোগে বোমা হামলা হয়। এর পরই মূলত সিনেমা হলগুলোয় দর্শকসংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে। করোনার পর থেকে সেই সংখ্যা আরও বাড়ে। হলের নিচতলায় ৭০০ আসন, দ্বিতীয় তলায় ডি চেয়ার ছিল ৩২০টি এবং বক্স ছিল ২০টি। এ ছাড়া মানসম্মত সিনেমা তৈরি না হওয়ায় দর্শক হারিয়েছে সিনেমা হলগুলো।
গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, ৮-১০ জন শ্রমিক দেয়াল ভেঙে ইট, পাথর ও লোহা সরানোর কাজ করছেন। শ্রমিক মুকুল মিয়া বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে হল ভাঙার কাজ শুরু করেছি। দৈনিক গড়ে ১২-১৪ জন শ্রমিক কাজ করছি। প্রথম-দ্বিতীয় তলার ছাদ এবং দেয়াল ভাঙা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভাঙতে আরও কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে।’
ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘১৫ লাখ টাকায় পূরবী সিনেমা হলের পুরাতন মালপত্র 
ক্রয় করেছি। আমরা সেগুলো ভেঙে এখন জায়গা খালি করছি। সব মিলিয়ে আমাদের চার মাস 
সময় লাগবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া জানান, এই হলটি দেখতে দেখতে বড় হয়েছেন তারা। এক 
সময় সিনেমার জোয়ার ছিল। তাই মানুষ হলের আশপাশে অনেক ভিড় জমাত। এখন ছবি না চলার কারণে মালিকপক্ষ হল ভাঙছে। এতে খারাপ লাগলেও মালিক তো আর বছরের পর বছর লোকসান গুনবেন না।
পূরবী সিনেমা হলের ম্যানেজার মোখতার হোসেনের ভাষ্য, দেশের নামকরা কয়েকটি হলের একটি ছিল পূরবী। স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর আগে হলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন ভালো ভালো ছবি নির্মিত হওয়ায় হলভর্তি দর্শক হতো। বিশেষ করে করোনার পর হলের দর্শক একেবারে ধস নামে। তিনি বলেন, ‘সবশেষ এক মাস আগে আমরা একবুক জ্বালা ছবিটি চালিয়েছিলাম। আমার কিছু আর জানা নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ