জাবিতে শিবিরের ইফতারে শিক্ষার্থীদের ঢল
Published: 16th, March 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্যও সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
রবিবার(১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ইফতারের আয়োজন করা হয়। এ সময় দুই সহস্রাধিক রোজাদার ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
হলে হলে জাবি ছাত্রদলের ইফতার
পরীক্ষায় পরিকল্পিতভাবে নাম্বার কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ জাবি শিক্ষার্থীর
উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “সবাইকে নিয়ে ইফতারের উদ্দেশ্যে শিবির চমৎকার আয়োজন করেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। শিবির মানুষ গড়ার কারিগর। তারা ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৎ ও যোগ্যরুপে গড়ে তোলে। আশা করি তারা তাদের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করে যাবে।”
ইফতার নিয়ে জাবি শাখা শিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, “ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ছাত্রকল্যাণমূলক কাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গণইফতার ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ইফতারে আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করছি। আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অংশগ্রহণ ছিলো অনেক বেশি। এ ইফতার মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাবিয়ান বন্ধন অটুট হবে ও ইসলামি সংস্কৃতির প্রচার প্রসারে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।”
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অতিথি হিসাবে ছিল সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খরচই ওঠে না, ভেঙে ফেলা হচ্ছে সিনেমা হল
দুপুরের কড়া রোদ্দুর মাথায় গলে পড়ছে। কোনোমতে গামছা প্যাঁচিয়ে জিরানোর ছলে কী যেন ভাবছিলেন হাতুড়ি পিটিয়ে দেয়াল ভাঙার শব্দ শুনতে শুনতে। ষাটোর্ধ্ব বয়সী রিকশাচালক আবুল মিয়া এই শহরেই রিকশা চালান তিন যুগের বেশি সময় ধরে। চোখের সামনেই তাঁর কৈশোর-যৌবনের বিনোদনের জায়গাটা ভাঙা হচ্ছে। জানালেন বেদের মেয়ে জোছনা ছবিটা তাঁর খুব প্রিয়। এই শহরে সিনেমাটি যখন আসে টানা ১০ বার দেখেছেন। শেষে মায়ের বানানো গোবরের লাকড়ি বিক্রি করে সিনেমা দেখেছেন। তাঁর মতে সিনেমা দেখতে এত ভিড় অন্য কোনো সিনেমায় দেখেননি। একটা সময় পর নানা কারণে ছবি দেখা ছেড়ে দেন তিনি।
বেশির ভাগ অংশের ভাঙার কাজ শেষ, সামনের অংশটুকু গুঁড়িয়ে দিলেই আর চেনা যাবে না ময়মনসিংহ নগরীর পূরবী সিনেমা হলটি। এই বিনোদন কেন্দ্র ভাঙতে দেখে কৈশোরের স্মৃতিচারণ ও আক্ষেপ করলেন গোহাইলকান্দি এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক আবুল মিয়া।
মালিক পক্ষ জানায়, কয়েক বছর ধরে প্রতি শোতে পাঁচ-সাতজন দর্শক হয়। অনেক সময়
দর্শক না থাকায় শো বন্ধ থাকে। দিনের পর দিন স্টাফ খরচও না ওঠায় হল ভাঙার সিদ্ধান্ত
নিতে হয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন করে দর্শক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে পূরবী সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
অনেকে বলছেন, আগেও যতগুলো সিনেমা হল ভাঙা হয়েছে কর্তৃপক্ষের ছিল একই উছিলা। সিনেপ্লেক্সের জায়গায় হয়েছে মোবাইল, প্রসাধনীর জমকালো দোকান। এর আগে ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর অলকা, অজন্তা, ছায়াবাণী ও পূরবী সিনেমা হলে একজোগে বোমা হামলা হয়। এর পরই মূলত সিনেমা হলগুলোয় দর্শকসংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে। করোনার পর থেকে সেই সংখ্যা আরও বাড়ে। হলের নিচতলায় ৭০০ আসন, দ্বিতীয় তলায় ডি চেয়ার ছিল ৩২০টি এবং বক্স ছিল ২০টি। এ ছাড়া মানসম্মত সিনেমা তৈরি না হওয়ায় দর্শক হারিয়েছে সিনেমা হলগুলো।
গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, ৮-১০ জন শ্রমিক দেয়াল ভেঙে ইট, পাথর ও লোহা সরানোর কাজ করছেন। শ্রমিক মুকুল মিয়া বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে হল ভাঙার কাজ শুরু করেছি। দৈনিক গড়ে ১২-১৪ জন শ্রমিক কাজ করছি। প্রথম-দ্বিতীয় তলার ছাদ এবং দেয়াল ভাঙা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভাঙতে আরও কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে।’
ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘১৫ লাখ টাকায় পূরবী সিনেমা হলের পুরাতন মালপত্র
ক্রয় করেছি। আমরা সেগুলো ভেঙে এখন জায়গা খালি করছি। সব মিলিয়ে আমাদের চার মাস
সময় লাগবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া জানান, এই হলটি দেখতে দেখতে বড় হয়েছেন তারা। এক
সময় সিনেমার জোয়ার ছিল। তাই মানুষ হলের আশপাশে অনেক ভিড় জমাত। এখন ছবি না চলার কারণে মালিকপক্ষ হল ভাঙছে। এতে খারাপ লাগলেও মালিক তো আর বছরের পর বছর লোকসান গুনবেন না।
পূরবী সিনেমা হলের ম্যানেজার মোখতার হোসেনের ভাষ্য, দেশের নামকরা কয়েকটি হলের একটি ছিল পূরবী। স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর আগে হলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন ভালো ভালো ছবি নির্মিত হওয়ায় হলভর্তি দর্শক হতো। বিশেষ করে করোনার পর হলের দর্শক একেবারে ধস নামে। তিনি বলেন, ‘সবশেষ এক মাস আগে আমরা একবুক জ্বালা ছবিটি চালিয়েছিলাম। আমার কিছু আর জানা নেই।’