জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্যও সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

রবিবার(১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ইফতারের আয়োজন করা হয়। এ সময় দুই সহস্রাধিক রোজাদার ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।

ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.

মাহফুজুর রহমান, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, ছাত্রশিবির জাবি শাখার সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

আরো পড়ুন:

হলে হলে জাবি ছাত্রদলের ইফতার

পরীক্ষায় পরিকল্পিতভাবে নাম্বার কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ জাবি শিক্ষার্থীর

উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “সবাইকে নিয়ে ইফতারের উদ্দেশ্যে শিবির চমৎকার আয়োজন করেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। শিবির মানুষ গড়ার কারিগর। তারা ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৎ ও যোগ্যরুপে গড়ে তোলে। আশা করি তারা তাদের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করে যাবে।”

ইফতার নিয়ে জাবি শাখা শিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, “ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ছাত্রকল্যাণমূলক কাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গণইফতার ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “ইফতারে আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করছি। আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অংশগ্রহণ ছিলো অনেক বেশি। এ ইফতার মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাবিয়ান বন্ধন অটুট হবে ও ইসলামি সংস্কৃতির প্রচার প্রসারে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।”

সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অতিথি হিসাবে ছিল সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এত বড় লোকসানের বোঝা সইবেন কী করে

ছোট্ট একটি ভূখণ্ডে সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের খাবারের জোগান নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের জন্যই বিশাল চ্যালেঞ্জের কাজ। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, মূল্যস্ফীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি—এ সবকিছু ছাপিয়ে বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই এ দেশের মানুষ এখনো টিকে আছে, তার সবচেয়ে বড় অবদান কৃষকের। অথচ দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে সবচেয়ে অবহেলার শিকার হন তাঁরা। এবার আলুচাষিরা তাঁদের উৎপাদিত আলু নিয়ে যে সীমাহীন দুর্ভোগ ও লোকসানের মুখে পড়েছেন, তাতে মনে হতেই পারে, আলু উৎপাদন করে তাঁরা কি অপরাধ করে ফেলেছেন?

আমনের মৌসুমে দফায় দফায় বন্যা হওয়ায় চালের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে চালের দাম এখন গত বছরের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। এ অবস্থাতেও শীতের সবজির ওপর ভর করে প্রায় দুই বছর পর গত মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০-এর নিচে নেমেছে। এ ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান কৃষকের। কিন্তু শীতের সবজি চাষে এ বছর তাঁরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। এবার পেঁয়াজ উৎপাদনেও কৃষকেরা চমক দেখিয়েছেন, ফলে ভোক্তারা তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কিন্তু পেঁয়াজেও কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেননি। আলুর ক্ষেত্রেও কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।

এবার যে আলুর উৎপাদনও বেশি হবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। আগাম বুঝতে পেরে হিমাগারের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে হিমাগারের ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কৃষকেরা মানববন্ধন করে, রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ করে হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানান। সরকার কিছুটা ভাড়াও কমান। কিন্তু প্রথম আলোসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হিমাগারের মালিকেরা কৃষকদের চেয়ে ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আলু সংরক্ষণের অনুমতিপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কতটা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অধিকাংশ আলুচাষি।

হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং হিমাগারে সংরক্ষণের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় কৃষকদের মাঠ থেকেই তাঁদের আলু বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ১ কেজি আলু উৎপাদনে যেখানে কৃষকদের খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা, সেখানে মাঠ থেকে মাত্র ১৪ টাকায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। এত বড় লোকসানের বোঝা তাঁরা সইবেন কী করে!

শীতের সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম এতটা পড়ে যাওয়ার পেছনে হঠাৎ করেই হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি উঠেছে। সরকার যদি একের পর এক ফসলে কৃষকের এই ক্রমাগত লোকসানের দিকে নজর না দেয়, তাহলে স্বল্প মেয়াদে বাজারে স্বস্তির দেখা মিললেও দীর্ঘ মেয়াদে বড় সংকট তৈরি করবে। হিমাগারের মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে কেন হাজার হাজার কৃষক লোকসানের মুখে পড়বেন? সরকারকে অবশ্যই কৃষকদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ