ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার ঢাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মর্তুজা
Published: 16th, March 2025 GMT
সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন আরো একজন। তিনি হলেন রাজধানীর শনির আখড়ায় তুষারধারা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আলী মর্তুজা।
পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলী মর্তুজা ওয়ালটনের কাছ থেকে পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা। এর আগে দেশজুড়ে চলমান ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এ ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন ফরিদপুরের কলেজ শিক্ষার্থী রাসেল ফকির এবং নেত্রকোণার কৃষক খোকন মিয়া।
শনিবার (১৫ মার্চ, ২০২৫) দুপুরে শনিরআখড়ার নয়াপাড়া এলাকায় ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম ‘ইলেক্ট্রো ভিশন’ এ আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে সৌভাগ্যবান ক্রেতা মর্তুজার হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন চিত্রনায়ক আমিন খান এবং ওয়ালটনের চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ।
আরো পড়ুন:
স্বাধীনতা দিবস ওয়ালটন আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা প্রতিযোগিতা শুরু
ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হলেন নেত্রকোণার খোকন
আসন্ন ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে ‘দেশজুড়ে তোলপাড়, ওয়ালটন পণ্য কিনে হতে পারেন আবারো মিলিয়নিয়ার’ স্লোগানে সারা দেশে চলছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২। এর আওতায় চলতি বছরের ঈদুল আজহা পর্যন্ত দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন অথবা বিএলডিসি ফ্যান ক্রেতাদের জন্য রয়েছে ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ। এছাড়া আছে লাখ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ নিশ্চিত উপহার।
এই ক্যাম্পেইনের আওতায় চলতি মাসের ৮ তারিখ শনির আখড়ায় ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম ‘ইলেক্ট্রো ভিশন’ থেকে ৪৬ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে একটি ফ্রিজ কেনেন মর্তুজা। ফ্রিজটি কেনার পর তার নাম, মোবাইল নম্বর এবং ক্রয়কৃত ফ্রিজের মডেল নম্বর ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হয়।এর কিছুক্ষণ পরই তার মোবাইলে ওয়ালটনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা পাওয়ার একটি মেসেজ যায়। ঈদের আগে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ১০ লাখ টাকা পাওয়ায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন ১ ছেলে ও ১ মেয়ের বাবা মর্তুজা।
অনুষ্ঠানে আলী মর্তুজা বলেন, “ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ১০ লাখ টাকা পাওয়া পাবো এটা কখনো ভাবনায় ছিল না। অনেক কোম্পানি ক্রেতাকে দেওয়া কথা রাখে না। ওয়ালটন সেখানে ব্যতিক্রম। সেজন্য ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।”
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনিরুল হক মনা, ওয়ালটন ফ্রিজের ব্র্যান্ড ম্যানেজার মুস্তাফিজুর রহমান এবং ইলেক্ট্রো ভিশন শোরুমের স্বত্ত্বাধিকারী কাজী বেলায়েত হোসাইন প্রমুখ।
ঢাকা/সাহেল/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ ল খ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
খরচই ওঠে না, ভেঙে ফেলা হচ্ছে সিনেমা হল
দুপুরের কড়া রোদ্দুর মাথায় গলে পড়ছে। কোনোমতে গামছা প্যাঁচিয়ে জিরানোর ছলে কী যেন ভাবছিলেন হাতুড়ি পিটিয়ে দেয়াল ভাঙার শব্দ শুনতে শুনতে। ষাটোর্ধ্ব বয়সী রিকশাচালক আবুল মিয়া এই শহরেই রিকশা চালান তিন যুগের বেশি সময় ধরে। চোখের সামনেই তাঁর কৈশোর-যৌবনের বিনোদনের জায়গাটা ভাঙা হচ্ছে। জানালেন বেদের মেয়ে জোছনা ছবিটা তাঁর খুব প্রিয়। এই শহরে সিনেমাটি যখন আসে টানা ১০ বার দেখেছেন। শেষে মায়ের বানানো গোবরের লাকড়ি বিক্রি করে সিনেমা দেখেছেন। তাঁর মতে সিনেমা দেখতে এত ভিড় অন্য কোনো সিনেমায় দেখেননি। একটা সময় পর নানা কারণে ছবি দেখা ছেড়ে দেন তিনি।
বেশির ভাগ অংশের ভাঙার কাজ শেষ, সামনের অংশটুকু গুঁড়িয়ে দিলেই আর চেনা যাবে না ময়মনসিংহ নগরীর পূরবী সিনেমা হলটি। এই বিনোদন কেন্দ্র ভাঙতে দেখে কৈশোরের স্মৃতিচারণ ও আক্ষেপ করলেন গোহাইলকান্দি এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক আবুল মিয়া।
মালিক পক্ষ জানায়, কয়েক বছর ধরে প্রতি শোতে পাঁচ-সাতজন দর্শক হয়। অনেক সময়
দর্শক না থাকায় শো বন্ধ থাকে। দিনের পর দিন স্টাফ খরচও না ওঠায় হল ভাঙার সিদ্ধান্ত
নিতে হয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন করে দর্শক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে পূরবী সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
অনেকে বলছেন, আগেও যতগুলো সিনেমা হল ভাঙা হয়েছে কর্তৃপক্ষের ছিল একই উছিলা। সিনেপ্লেক্সের জায়গায় হয়েছে মোবাইল, প্রসাধনীর জমকালো দোকান। এর আগে ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর অলকা, অজন্তা, ছায়াবাণী ও পূরবী সিনেমা হলে একজোগে বোমা হামলা হয়। এর পরই মূলত সিনেমা হলগুলোয় দর্শকসংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে। করোনার পর থেকে সেই সংখ্যা আরও বাড়ে। হলের নিচতলায় ৭০০ আসন, দ্বিতীয় তলায় ডি চেয়ার ছিল ৩২০টি এবং বক্স ছিল ২০টি। এ ছাড়া মানসম্মত সিনেমা তৈরি না হওয়ায় দর্শক হারিয়েছে সিনেমা হলগুলো।
গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, ৮-১০ জন শ্রমিক দেয়াল ভেঙে ইট, পাথর ও লোহা সরানোর কাজ করছেন। শ্রমিক মুকুল মিয়া বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে হল ভাঙার কাজ শুরু করেছি। দৈনিক গড়ে ১২-১৪ জন শ্রমিক কাজ করছি। প্রথম-দ্বিতীয় তলার ছাদ এবং দেয়াল ভাঙা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভাঙতে আরও কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে।’
ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘১৫ লাখ টাকায় পূরবী সিনেমা হলের পুরাতন মালপত্র
ক্রয় করেছি। আমরা সেগুলো ভেঙে এখন জায়গা খালি করছি। সব মিলিয়ে আমাদের চার মাস
সময় লাগবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া জানান, এই হলটি দেখতে দেখতে বড় হয়েছেন তারা। এক
সময় সিনেমার জোয়ার ছিল। তাই মানুষ হলের আশপাশে অনেক ভিড় জমাত। এখন ছবি না চলার কারণে মালিকপক্ষ হল ভাঙছে। এতে খারাপ লাগলেও মালিক তো আর বছরের পর বছর লোকসান গুনবেন না।
পূরবী সিনেমা হলের ম্যানেজার মোখতার হোসেনের ভাষ্য, দেশের নামকরা কয়েকটি হলের একটি ছিল পূরবী। স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর আগে হলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন ভালো ভালো ছবি নির্মিত হওয়ায় হলভর্তি দর্শক হতো। বিশেষ করে করোনার পর হলের দর্শক একেবারে ধস নামে। তিনি বলেন, ‘সবশেষ এক মাস আগে আমরা একবুক জ্বালা ছবিটি চালিয়েছিলাম। আমার কিছু আর জানা নেই।’