ফেনীতে পরীক্ষা দিতে এসে  শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয়েছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতা। তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

রবিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটক শিক্ষার্থীর নাম আবদুল্লাহ আল নোবেল। তিনি শহরের রামপুর এলাকার এনামুল হকের ছেলে। নোবেল ফেনী পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। 

আরো পড়ুন:

যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলায় আহত ১০, থানায় অভিযোগ

দেড় ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল শুরু  

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নোবেল ফেনী কম্পিউটার ইন্সটিটিউটের টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আজ দুপুরে ফেনী কম্পিউটার ইন্সটিটিউটে পরীক্ষা দিতে আসলে তাকে আটক করেন ছাত্র প্রতিনিধিরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

ফেনী কম্পিউটার ইন্সটিটিউটের ছাত্র প্রতিনিধি সালাউদ্দিন বলেন, আটক নোবেল গত বছরের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। সেদিনের হামলার বিভিন্ন ছবি-ভিডিওতে তার উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া এতোদিন তিনি ক্লাসে আসেননি। আজ পরীক্ষার সুবাদে ক্যাম্পাসে আসলে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, “ছাত্র প্রতিনিধিদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে(নোবেল) আটক করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

এত বড় লোকসানের বোঝা সইবেন কী করে

ছোট্ট একটি ভূখণ্ডে সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের খাবারের জোগান নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের জন্যই বিশাল চ্যালেঞ্জের কাজ। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, মূল্যস্ফীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি—এ সবকিছু ছাপিয়ে বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই এ দেশের মানুষ এখনো টিকে আছে, তার সবচেয়ে বড় অবদান কৃষকের। অথচ দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে সবচেয়ে অবহেলার শিকার হন তাঁরা। এবার আলুচাষিরা তাঁদের উৎপাদিত আলু নিয়ে যে সীমাহীন দুর্ভোগ ও লোকসানের মুখে পড়েছেন, তাতে মনে হতেই পারে, আলু উৎপাদন করে তাঁরা কি অপরাধ করে ফেলেছেন?

আমনের মৌসুমে দফায় দফায় বন্যা হওয়ায় চালের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে চালের দাম এখন গত বছরের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। এ অবস্থাতেও শীতের সবজির ওপর ভর করে প্রায় দুই বছর পর গত মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০-এর নিচে নেমেছে। এ ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান কৃষকের। কিন্তু শীতের সবজি চাষে এ বছর তাঁরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। এবার পেঁয়াজ উৎপাদনেও কৃষকেরা চমক দেখিয়েছেন, ফলে ভোক্তারা তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কিন্তু পেঁয়াজেও কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেননি। আলুর ক্ষেত্রেও কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।

এবার যে আলুর উৎপাদনও বেশি হবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। আগাম বুঝতে পেরে হিমাগারের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে হিমাগারের ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কৃষকেরা মানববন্ধন করে, রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ করে হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানান। সরকার কিছুটা ভাড়াও কমান। কিন্তু প্রথম আলোসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হিমাগারের মালিকেরা কৃষকদের চেয়ে ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আলু সংরক্ষণের অনুমতিপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কতটা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অধিকাংশ আলুচাষি।

হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং হিমাগারে সংরক্ষণের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় কৃষকদের মাঠ থেকেই তাঁদের আলু বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ১ কেজি আলু উৎপাদনে যেখানে কৃষকদের খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা, সেখানে মাঠ থেকে মাত্র ১৪ টাকায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। এত বড় লোকসানের বোঝা তাঁরা সইবেন কী করে!

শীতের সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম এতটা পড়ে যাওয়ার পেছনে হঠাৎ করেই হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি উঠেছে। সরকার যদি একের পর এক ফসলে কৃষকের এই ক্রমাগত লোকসানের দিকে নজর না দেয়, তাহলে স্বল্প মেয়াদে বাজারে স্বস্তির দেখা মিললেও দীর্ঘ মেয়াদে বড় সংকট তৈরি করবে। হিমাগারের মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে কেন হাজার হাজার কৃষক লোকসানের মুখে পড়বেন? সরকারকে অবশ্যই কৃষকদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ