পটুয়াখালীতে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বড় ভাইকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যান ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে। ১০ মার্চের এ ঘটনায় আজ রোববার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিচার দাবি করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

ভুক্তভোগীর বড় ভাই (২৫) বর্তমানে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় সদর উপজেলার বড় বিঘাই ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামাল হোসেন (৪০) এবং তাঁর ১৪ বছর বয়সী ছেলে ও ভাগনে মো.

রুম্মনের (১৮) নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন ওই কিশোরীর মা। পুলিশ মামলাটির তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কিশোরীর মা অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়ার পথে নানা সময় উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন, তাঁর ছেলে, ভাগনে রুম্মনসহ তাঁদের সহযোগীরা। মেয়ে বিষয়টি পরিবারকে জানালে তাঁর ছেলে অভিযুক্ত রুম্মন ও তাঁর লোকজনকে জিজ্ঞেস করেন এবং উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করেন। এতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ছেলেকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন এবং মাথা ফাটিয়ে দেন। হামলার নেতৃত্ব দেন ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন। হামলার পর তাঁর ছেলে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ওই কিশোরীর মা আরও বলেন, হামলার ঘটনায় তিনি ১৩ মার্চ সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লিখিত ব্যক্তিদের আসামি করেছেন। থানায় মামলা করার পর থেকে তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে বলছেন আসামিরা। এ জন্য পরিবার নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বড় বিঘাই ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামাল হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি না ধরায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

যোগাযোগ করলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। শুনেছেন, অপর পক্ষ নিজেদের নির্দোষ দাবি করে এলাকায় মানববন্ধন করেছে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমন্ত স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে হাত-পা থেঁতলে দিয়েছেন স্বামী

লক্ষ্মীপুরে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে এক গৃহবধূর পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন তার স্বামী, সেই সঙ্গে তাকে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে আঘাত করে শরীর থেঁতলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

রগ কেটে কর্তনের শিকার নারীর নাম রিনা বেগম। তার স্বামী আলমগীর হোসেন। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালু হাজী সড়কে ভাড়া থাকেন। সেখানেই ঘটনাটি ঘটেছে।

ররিবার (১৬ মার্চ) রিনার ভাই অ্যাম্বুলেন্স চালক হোসেন আহমেদ রাইজিংবিডি ডটকমকে অভিযোগটির বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া রগ কাটার পায়ের ছবি দিয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

গোদাগাড়ীতে ৫ কেজি হেরোইন উদ্ধার, ২ নারী গ্রেপ্তার

মাগুরায় ঘুমিয়ে গেল আছিয়া, জাগিয়ে গেল দেশ

হোসেন আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিনা বেগমের স্বামী আলমগীর ১৫ মার্চ রাতে বটি দিয়ে তার স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে ফেলেন। একইসঙ্গে রিনার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে বটি দিয়ে কোপান। একপর্যায়ে পাথর দিয়ে হাত-পা থেঁতলে দেন তার স্বামী।

আলমগীর লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর বাঞ্চানগর এলাকার কসাই বাড়ির লেদু মিয়ার ছেলে, যিনি পেশায় নির্মাণশ্রমিক।

রিনা বেগমের পরিবারের সদস্যদের কথা বলে জানা গেছে, রিনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ। পরিবারের লোকজন ঢাকা থেকে ফিরে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

হোসেন আহমেদের সঙ্গে হলে তিনি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, বাড়িতে ঘর না থাকায় রিনা ও তার স্বামী আলমগীর কালু হাজী সড়কে সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। শনিবার রাতে রিনা খাবার শেষে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তার স্বামী আলমগীর বাসায় এসে ঘুমন্ত স্ত্রীর মাথায় ধারালো বটি দিয়ে আঘাত করে। পরে তার দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। একপর্যায়ে পাথর দিয়ে দুই হাত-পা থেঁতলে দেয়। 

আহত রিনাকে ফেলে রেখে আলমগীর পালিয়ে যায় জানিয়ে হোসেন আহমেদ বলেন, প্রতিবেশীরা রিনাকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাঠান।
হোসেন আহমেদ বলেন, “আলমগীর আমার বোনকে কুপিয়েছে। হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, সে মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত।”

ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে আলমগীর হোসেন। রাইজিংবিডি ডটকম তার বক্তব্য নিতে পারেনি।

সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাদেরকে জানায়নি। তবে জানতে পেরেছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/লিটন/রাসেল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ