নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের পরিকল্পনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অধ্যয়নরত নওগাঁ জেলার শিক্ষার্থীরা। এমন কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে নওগাঁ জেলাকে বিচ্ছিন্নসহ সারাদেশে খাদ্যপণ্য সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে পদার্থবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈকত হোসেন বলেন, “নওগাঁ মেডিকেল কলেজ ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়নি। কিন্তু ক্যাম্পাস নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করে কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।”

আরো পড়ুন:

স্টেশনে ভিক্ষা করলেও স্বপ্ন ব্যাংকার হওয়ার

চবির বি ইউনিটে পাসের হার ২০ শতাংশ

তিনি বলেন, “বিগত বছরগুলোতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মাধ্যমে নেওয়া পেশাগত পরীক্ষায় ২৪টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজ অন্যতম শীর্ষে অবস্থান করেছে। এখানকার অ্যাকাডেমিক মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগই নেই। মানহীন তকমা দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, “কোনোভাবে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা হলে নওগাঁ জেলাকে বিচ্ছিন্ন করে সারাদেশে খাদ্যপণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। নওগাঁ থেকে আমরা চাল সাপ্লাই বন্ধ করে দেব। সারাদেশে নওগাঁর শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”

তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, আমাদের এমন কঠোর হতে বাধ্য করবেন না। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ যদি কিন্তু ছাড়াই বহাল রাখুন। সেই সঙ্গে দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যবস্থা করুন।”

সম্প্রতি নওগাঁ মেডিকেল কলেজসহ ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খুচরায় কঠোর, কোম্পানিতে উদার অধিদপ্তর

পণ্যের সংকট কিংবা বাড়তি দাম যাই ঘটুক, ভোক্তা অধিদপ্তরের দৌড় ঘুরেফিরে খুচরা বাজারে। জরিমানা করা হয় এদের। কিন্তু উৎপাদন বা কোম্পানি পর্যায়ে সংস্থার ভূমিকা অনেকটা দায়সারা। ভোজ্যতেলের বাজারে কারসাজি হলেও সম্প্রতি কোনো কোম্পানিকে শাস্তির কথা জানাতে পারেনি সংস্থাটি।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানান, পণ্যের কৃত্রিম সংকট, সরবরাহ কমার দোহাই দিয়ে দাম বাড়ানো, মানহীন কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রিসহ নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ভোক্তা। দিন দিন বাড়ছে অভিযোগ। বিদ্যমান আইনে ই-কমার্স, ব্যাংক, বীমা ও স্বাস্থ্যসেবা, টেলিকম, বাড়িভাড়াসহ অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত নেই। এসব খাতে প্রতারিত হলেও প্রতিকার চাওয়ার পথ নেই ভুক্তভোগীর।
ভোক্তা হয়রানি ও আইনের সীমাবদ্ধতার এমন প্রেক্ষাপটে আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য– ‘একটি টেকসই জীবনধারায় ন্যায়সংগত রূপান্তর’। প্রতি বছর জাঁকজমকভাবে দিবসটি উদযাপন হলেও এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তা পালনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে ঘরোয়াভাবে দিবসটি পালন করবে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের বেশির ভাগ অভিযান হয় খুচরা বাজারে। এ নিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। অভিযানের ভয়ে নাম বলতে নারাজ কারওয়ান বাজারের এমন এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী গত বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, তিন মাস ধরে কোম্পানিগুলো তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এটা সরকারও জানে। অথচ ভোক্তা অধিদপ্তর ছোটখাটো ভুলের জন্য বড় মাশুল নিচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। এটা রীতিমতো জুলুম।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ভোজ্যতেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় সম্প্রতি তিন কোম্পানিকে কারণ দর্শাতে (শোকজ) বলেছে অধিদপ্তর। তবে দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এর জবাব পেয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, ‘প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি তদারকি দল খুচরা বাজার পর্যবেক্ষণ করছে।’
আইনের সীমাবদ্ধতা
২০০৯ সালে ভোক্তাবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, বিরোধ নিষ্পত্তি, ক্ষতিপূরণ, প্রতারণা রোধ এবং গণসচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে ভোক্তা অধিকার-সংরক্ষণ আইন হয়। গত প্রায় দেড় দশকে শহরকেন্দ্রিক অধিদপ্তরের কার্যক্রমে কিছু সুফল মিললেও বঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে নিষ্পত্তি হচ্ছে না অনেক মামলা। আইনে বলা আছে, ভোক্তা প্রতারিত হলে মামলা করতে পারবেন। কিন্তু কীভাবে- কোন পদ্ধতিতে মামলা করবেন, তা সুস্পষ্টভাবে বলা নেই। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অপরাধের ধরন ও মাত্রা বদলালেও আইনে এসব ধারা যুক্ত হয়নি। সেজন্য অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
আইন সংস্কারের উদ্যোগ
অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, শুধু খুচরায় নয়, পাইকারি ও উৎপাদনসহ সব পর্যায়ে নিয়মিত তদারকি হচ্ছে। যারা অপরাধ করছে আইন অনুযায়ী তাদের জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন অভিযোগ শুনানি ও নিষ্পত্তি হচ্ছে। তাছাড়া ভোক্তার স্বার্থে বিদ্যমান আইনে কিছু সংস্কার প্রক্রিয়াধীন। আইনে নতুন করে কয়েকটি সেবা খাত যুক্ত হবে। আরও কী ধরনের সংস্কার দরকার সেই বিষয়ে পরামর্শ দিলে তা বিবেচনা করা হবে।
তারা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল জনবল দিয়ে কোটি কোটি ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা সংস্থার জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়টিও ভাবতে হবে।
গড়ে ১৫০ অভিযোগ
অনলাইনে কেনাকাটা নিয়ে নানা অভিযোগ ও অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ার পরও অপরাধ থেমে নেই। নিত্যনতুন কৌশলে এই প্রতারণা চলছে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১৫০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়ে। সরাসরি ও অনলাইনে এসব অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। এসবের বেশির ভাগ ই-কমার্সসংক্রান্ত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, গত বছরের তুলনায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ অভিযোগ বেড়েছে। ঢাকায় মাসে ১৬০ থেকে ১৭০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রতি মাসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাক জরিমানা আদায় করা হয়। বেশি অভিযোগ জমা পড়ার কারণে নিষ্পত্তি গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশের মতো কমেছে।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
এ বিষয়ে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পুরো বাংলাদেশ যেন ঠকা ও প্রতারণার হাট। ভোক্তাকে বঞ্চিত করাটাই রীতি। বৈষম্য বিলোপের কথা বলে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। অথচ তাদের আমলে সরকারিভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা বললে আইন প্রয়োগকারী ও প্রশাসনের লোকজন আঁতকে ওঠেন। কারণ দীর্ঘদিন তারা ব্যবসায়ীদের আনুকূল্যে ছিলেন। এই মধুর স্মৃতি ভুলতে পারেন না। নতুন করে অনলাইনে প্রতারণা ও গ্রাহক ঠকানোর শত শত প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আগের অভিযোগগুলোর বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে অপরাধীরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার-সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, আইনে কী ধরনের সংস্কার দরকার সেই বিষয়ে জনপ্রতিনিধি বা ভোক্তা-সংশ্লিষ্টরা প্রস্তাব দিক। তাদের পরামর্শ বিবেচনা করা হবে।
খুচরা বাজারে অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার রোজা উপলক্ষে প্রতিটি জেলায় অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তো ইচ্ছা করে খুচরা পর্যায়ে অভিযান করছে না। বড়-ছোট সব জায়গায় তদারকি হচ্ছে। যেখানে অনিয়ম পাচ্ছে, সেখানে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অতএব, এ অভিযোগ যথাযথ নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিশুকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছেন হিটু শেখ
  • ভারতের চালের রপ্তানি মূল্য কমেছে
  • ঈদ বোনাসসহ সব বকেয়া পরিশোধের দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের মানববন্ধন
  • হুতি কারা, কেন গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে বড় হামলা শুরু করলেন ট্রাম্প
  • চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ বিক্ষোভ
  • চট্টগ্রাম মেডিকেলে নবজাতকের মৃত্যু, আয়ার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ
  • নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ হলে চাল সরবরাহও বন্ধের হুঁশিয়ারি
  • নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ হলে চাল-আম সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি
  • খুচরায় কঠোর, কোম্পানিতে উদার অধিদপ্তর