সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর বিষয়ে আরও চারটি রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তাদের মতামত দিয়েছে। এ নিয়ে কমিশনের কাছে ১১টি দল তাদের মতামত দিল।

পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই সময়ের মধ্যে সাতটি দল মতামত জানিয়েছিল।

আজ রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আরও চারটি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। আজ পর্যন্ত মোট ১১টি রাজনৈতিক দলের মতামত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১৮টি রাজনৈতিক দল পূর্ণাঙ্গ মতামতের জন্য অতিরিক্ত কয়েক দিন সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে কমিশন পুনরায় যোগাযোগ করছে।

ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, নতুন করে যে চারটি দল মতামত দিয়েছে সেগুলো হলো—রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এর আগে এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে ওলামা ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, এনডিএম ও আমজনতার দল মতামত জানিয়েছিল। যে দলগুলো ইতিমধ্যে মতামত দিয়েছে তাদের নিয়ে চলতি সপ্তাহ থেকে আলোচনা শুরু করার চিন্তা আছে। আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ছয়টি কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব কমিশনের প্রধানদের নিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার। ঐকমত্য কমিশন বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশে একমত হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে তৈরি হবে ‘জুলাই চার্টার’ বা জুলাই সনদ।

পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। প্রথমটি হলো সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে দলগুলো একমত কি না। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয়টি হলো প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ছয়টি ঘর রয়েছে। সেগুলো হলো সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়ন ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেওয়ার একটি জায়গা রাখা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মত মত দ য় ছ ত দ র মত মত মত মত জ ন মত মত চ দলগ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর মতামত জানাল ইসলামী আন্দোলন

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারের ওপর মতামত জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে সংসদ ভবনে কমিশন কার্যালয়ে দলটি তাদের মতামতের কাগজ জমা দেয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে।

আরো পড়ুন:

সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর মতামত জানাল ইসলামী আন্দোলন

মানুষ বলছে, আপনাদেরকে আরো ৫ বছর দেখতে চাই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

ইসলাম আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সংসদ ভবনে যায়। এ সময় সেখানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন। 

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন  কাজ করছে।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সেগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। 

ঐকমত্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৩২টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরইমধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি এবং নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে আলোচনা করেছে কমিশন। 

শনিবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাসদ এবং জাকের পার্টির সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আলী আকন, যুগ্ন-মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম ও সহকারী মহাসচিব আহমদ আবদুল কাইয়ুম।

ঢাকা/আসাদ/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিসেম্বর থেকে জুনে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ
  • ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে একমত নয় বিএনপি
  • সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে নির্বাচনে গেলে শঙ্কা দেখা দেবে: জামায়াত
  • সংস্কার দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
  • ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
  • ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার এগিয়ে নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাসদের আলোচনা  
  • ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ জাসদের বৈঠক 
  • নীলাভ সবুজে ধানের মাতৃভূমি
  • সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর মতামত জানাল ইসলামী আন্দোলন