ঢাকার ধামরাইয়ে ভাড়াটিয়া সেজে আসা দুর্বৃত্তরা এক সাংবাদিকের বাসা থেকে নগদ দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা লুটে নিয়েছে। এ সময় চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে ফেলা হয় ওই সাংবাদিকের ছেলেকে। রোববার দুপুরে সাংবাদিক আবু হাসানের ধামরাই থানালাগোয়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

আবু হাসান দৈনিক কালের কণ্ঠের ধামরাই প্রতিনিধি। তাঁর বাসাটি থানার কয়েক কদম দূরে। আবু হাসানের ছেলে মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘আমি বাসায় একা ছিলাম। দুইজন বোরকা পড়া নারী ও একজন যুবক আসে বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য। তাদের সাথে একজন বাচ্চাও ছিলো। রুম দেখার সময় পিছন থেকে ওই যুবক আমার নাক-মুখে কী যেনো চেপে ধরে। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা পর আমার জ্ঞান ফিরে।’

এরপর দুর্বৃত্তরা ওই বাসার পাঁচটি কক্ষে হানা দিয়ে আলমারি, শোকেস ভেঙে তছনছ করে। তারা ২ লাখ ২৫ টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে জানান সাংবাদিক আবু হাসান। তিনি বলেন, বিষয়টি ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলামকে জানানো হলে তাৎক্ষণিক তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের তিনি দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কারা জড়িত তাদের শনাক্ত করতে কাজ চলছে। দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল টপ ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘পোলারে মাইর্যা ফালাইছে, নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো’

বরগুনায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করার পর বাবাকে হত্যার ঘটনায় পরিবারটি শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। একদিকে কিশোরীটির দুর্দশা, অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে আর্থিক অনিশ্চয়তা তাদের ঘিরে ধরেছে। ওই পরিবারের প্রবীণ নারী ছেলে হারিয়ে, নাতনির অবস্থা দেখে আক্ষেপ করে বলছিলন, ‘আমরা বাঁচমু ক্যামনে? পোলারে মাইর্যা ফালাইছে। নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো। এহন আমাগো দ্যাখবে কেডা?’

পরিবারটির ভাষ্য, বরগুনা সদরের বাড়ি থেকে ৪ মার্চ বিকেলে প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ওই কিশোরী (১৪)। পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে সিজিত রায় নামের এক বখাটের নেতৃত্বে কয়েকজন মুখে কাপড় গুঁজে কিশোরীকে অপহরণ করে। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরের দিন ৫ মার্চ সকালে ওই কিশোরীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পার্কে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা (৩৭) ওই দিন রাতেই বরগুনা সদর থানায় সিজিত রায়সহ দুজনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন। পরের দিন স্থানীয় জনতা দুজনকে ধরে পুলিশে দেয়। পুলিশ সিজিতকে আটক করে এবং তার বন্ধুকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়। কিশোরীর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে এবং ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে শাসাতে থাকে আসামিপক্ষ। এরপর ১১ মার্চ কর্মস্থলে গিয়ে নিখোঁজ হন কিশোরীর বাবা। ওই দিন রাত সোয়া ১২টার দিকে মুঠোফোনের রিংটোনের সূত্র ধরে বাড়ির পাশের ঝোপ থেকে কিশোরীর বাবার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামির বাবাসহ চারজনকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, এসব ঘটনার ধকলে সেই কিশোরী এখন নির্বাক। সে খাবার খাচ্ছে না, সারাক্ষণ চুপচাপ থাকছে, কারও সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলছে না। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আর নীরবে চোখের পানি ফেলে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটির সবাই দিশাহারা। প্রতিবেশী ও অন্যরা সাময়িকভাবে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করলেও দীর্ঘ মেয়াদে কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। টাকার অভাবে কিশোরীকে চিকিৎসকের কাছেও নিতে পারছেন না বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

ছয়জনের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন কিশোরীর বাবা। ছোট্ট কাঠ-টিনের জরাজীর্ণ ঘর ও তার চারপাশ দেখে দারিদ্র্য টের পাওয়া যায়। কিশোরীর মা বললেন, ‘আমাগো আর কী জিগাইবেন? এর চাইতে আমাগো মাইর্যা হালাইলেও বাঁইচ্চা যাইতাম।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম গতকাল দুপুরে কিশোরীর বাড়িতে যান। তিনি পরিবারটির খোঁজখবর নেন। তিনি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, হত্যা মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ধর্ষণ মামলার আসামিরা কারাগারে আছে। পরিবারটি কঠিন সময় পার করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাদের এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল হালিম আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ও তার এক বন্ধুকে আটক করা হয়েছিল। এরপর তাদের ওই কিশোরীর মুখোমুখি করা হয়। তখন একজনকে কিশোরী শনাক্ত করেনি। তাই মুচলেকা রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিশোরীর বাবা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে একজনের ব্যাপারে তদন্ত করে এই ঘটনায় জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল তদন্ত করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরগুনার সেই পরিবারটির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান, পাশে থাকার আশ্বাস
  • মাগুরার শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা, বোন ছিলেন রান্নাঘরে
  • কখন আসছেন হামজা, গন্তব্য কোথায়?
  • দেশে বয়ে চলেছে বছরের প্রথম তাপপ্রবাহ
  • ‘পোলারে মাইর্যা ফালাইছে, নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো’
  • ৪৮ সেকেন্ডে মেশিনে তৈরি হচ্ছে রান্না করা নুডলস
  • অটোরিকশায় করে কিশোরীকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই তরুণ, লাফ দিয়ে প্রাণে রক্ষা
  • ঈশ্বরের গিনিপিগ
  • বহুমুখী প্রতিভার অলিভিয়ার টড