পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলে আলোচনায় আসা ব্যবসায়ী লিপি খান গ্রেপ্তার
Published: 16th, March 2025 GMT
ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ তোলার পর আলোচনায় আসা রংপুরের অন্যতম ব্যবসায়ী লিপি খান ভরসাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। লিপি খান রংপুরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ভরসা পরিবারের পুত্রবধূ এবং এসএল ভরসা গ্রুপের চেয়ারম্যান।
লিপি খান গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্রও কেনেন। গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থ যোগানের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তিনি ১৯ জুলাই রংপুরের সিটি বাজার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলির ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলার ১৭৯ নম্বর আসামি।
ঘটনার শুরু এ মামলা থেকেই। সম্প্রতি মামলাটি থেকে নাম বাদ দিতে রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মোহাম্মদ শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ তোলেন লিপি। গত ১১ মার্চ এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর, মহানগর পুলিশ কমিশনার ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মামলার আসামি তালিকা থেকে নাম সরাতে রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক অমিত বণিকের মাধ্যমে তার কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চান উপকমিশনার শিবলী কায়সার।
এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করতে লিপি তার ম্যানেজার পলাশ হাসানকে রংপুর কোতোয়ালি থানায় পাঠান। সেখানে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শিবলী কায়সার থানার ভেতরেই পলাশকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে শিবলীর নাম বাদ দিয়ে চেম্বারের পরিচালক অমিত বণিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় অমিতকে কারাগারেও পাঠানো হয়। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত শনিবার দুপুরে শিবলী কায়সারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে ফেরানো হয়েছে। এরপর লিপিকেও গ্রেপ্তার করা হলো।
মহানগর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ব্যবসায়ী লিপিকে গুলশান থানায় নেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে রংপুরে এনে আদালতে তোলা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়