শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে নিহত নেতাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১৬ মার্চ) শহরের সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই ইফতার মাহফিলে বিএনপির প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। ঝিনাইদহ-৪ সংসদীয় আসনের একটি পৌরসভা ও ১৫ টি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা ইফতারে যোগ দেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম সাইদুল।

ইফতারের আগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহাবুবার রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ডা.

নুরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম তোতা, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম সাইদুল, ইলিয়াস রহমান মিঠু, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, জবেদ আলী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

আরো পড়ুন:

থানায় কৃষকদল নেতাকে লাথি মারলেন আসামি

আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক
দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে: ফখরুল

প্রধান অতিথি সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, “বিগত সরকারের সময় আমরা এভাবে ইফতারের আয়োজন করতে পারিনি। ধর্মীয় সভা-সমাবেশেও বাধা দেওয়া হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার সরকার মানুষের সবকিছু কেড়ে নিয়েছিল। আগামী দিনে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যেন মাথা চাড়া না দিতে পারে, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “একটি দল ধর্ম ব্যবহার করে গ্রাম-গঞ্জের মা-বোনদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। ধর্ম আর রাজনীতি তারা গুলিয়ে ফেলেছে। দেশের মানুষ তাদের চিনে ফেলেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে তাদের। অন্যথায় দেশের মানুষ আপনাদেরও ফ্যাসিস্ট বলবে। আগামী দিনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করবে।”

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ইফত র ল ইসল ম ব এনপ র রহম ন উপজ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর

মাগুরার সেই শিশুটিকে ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন তার বোনের শ্বশুর। অবশ্য এই মামলার বাকি তিন আসামির পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাকে হত্যার চেষ্টায় শামিল হয় তার ভগ্নিপতি। ওই সময় শিশুটির বোন রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

ধর্ষণের মামলায় দোষ স্বীকার করে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন মাগুরার সেই শিশুটির বোনের শ্বশুর।

আরো পড়ুন:

ফেনীতে যৌতুকের জন্য নববধূকে হত্যা, শ্বশুর গ্রেপ্তার

রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ-জেএসএস গোলাগুলি, নিহত ১

রবিবার (১৬ মার্চ) আদালত সূত্রে ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

৬ মার্চ সকালে শিশুটির বোনের শ্বশুর তাদের ঘরে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করেন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে সারা দেশে তোলপাড় হয়। গ্রেপ্তার হন আসামিরা।

গত শনিবার বিকেলে মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় ওই আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবাবন্দিতে তিনি বলেন, ৬ মার্চ সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তার ছোট ছেলের (বোনের স্বামী) কক্ষে শিশুটিকে একা শুয়ে থাকতে দেখে ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। শিশুটি চিৎকার করলে তার গলা চেপে ধরেন। 

শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ব্লেড দিয়ে শিশুটিকে ক্ষতবিক্ষত করেন। শিশুটিকে অচেতন ফেলে রেখে মাঠে কাজ করতে চলে যান। ঘটনার সময় বাড়ির অন্য সদস্যরা যে যার কাজে বেরিয়েছিলেন। আর শিশুটির বোন বাড়ির এক কোণে রান্নাঘরে মোবাইল ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিলেন।

ঘটনার কিছুক্ষণ পর শিশুটির বোন ঘরে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় প্রতিবেশী এক নারী ওই বাড়িতে আসেন। তারা শিশুটিকে অচেতন দেখে তার মাথায় পানি ঢালেন। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে শিশুটির বোনের শাশুড়ি বাড়িতে এসে প্রথমে শিশুটিকে স্থানীয় এক কবিরাজের বাড়িতে নেন। সেখান থেকে নেওয়া হয় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে মামলার বাদী শিশুটির মায়ের এজাহারের অমিল রয়েছে। বাদী বলেছিলেন, ঘটনা ঘটেছে রাতে। অবশ্য এজাহারে তিনি এ–ও উল্লেখ করেছিলেন, বিয়ের পর থেকে তার বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন মেয়ের শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে।

১ মার্চ মাগুরার শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। সেদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় নেওয়া হয়। জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে।

এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা।

 মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রধান আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি তিন আসামির রিমান্ড চলছে।

রবিবার দুপুরে মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা সদর থানায় সাংবাদিকদের বলেন, মামলার অন্যতম আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য তিন আসামির জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

শাহীন/মাগুরা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ