প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বিদেশি নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নিয়মিতভাবে ইত্যাদিতে তুলে ধরছেন নির্মাতা হানিফ সংকেত।

এবারের ইত্যাদির বিশেষ পর্বে অংশগ্রহণ করেছেন জাপান, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, চীন, সুইডেন, রোমানিয়া, ডেনমার্ক, ইন্দোনেশিয়া, প্যারাগুয়ে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। তারা সবাই বাংলাদেশে বিভিন্ন দূতাবাস ও বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। গুজব নিয়ে নির্মিত একটি নাটিকায় তাদের দেখা যাবে। তা ছাড়াও বিদেশিদের অংশগ্রহণে একটি নৃত্যও থাকবে।

এ বিষয়ে হানিফ সংকেত বলেন, “ওরা অপেশাদার হলেও অনেক পেশাদার শিল্পীরও ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বিশেষ করে বিদেশিদের সময়জ্ঞান, নিষ্ঠা, একাগ্রতা, কষ্ট সহিষ্ণুতা, আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। মাত্র কয়েকদিনের পরিচয়ে বিদেশিদের সঙ্গে যে আত্মিক বন্ধন তৈরি হয় তা কখনোই ভোলার নয়। আশা করি, প্রতিবারের মতো এবারো এই পর্বটি দর্শকদের অনেক আনন্দ দেবে।”

আরো পড়ুন:

ফারহান-কেয়ার প্রেমের ‘বাজি’

মোশাররফ করিমকে নিয়ে আর এইচ সোহেলের ধারাবাহিক

ইত্যাদির এবারের পর্বে ভিন্ন আঙ্গিকে একটি নাচের আয়োজন রয়েছে। এই নাচে অংশ নিয়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় ৪ নায়িকা। তারা হলেন— সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা। এই চার অভিনেত্রীর সঙ্গে রয়েছে একদল নৃত্যশিল্পী।

নৃত্য পরিচালনা করেছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। সব সময় যে ধরনের নাচ এবং নাচের মিউজিক শুনে দর্শকরা অভ্যস্ত, ইত্যাদির নাচগুলো তার চেয়ে একটু ব্যতিক্রম করার চেষ্টা করা হয়।

প্রতিবারের মতো ঈদের পরের দিন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর বিটিভিতে প্রচার হবে ‘ইত্যাদি’। বরাবরের মতো এবারের পর্ব রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে ফাগুন অডিও ভিশন।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক

এছাড়াও পড়ুন:

এত বড় লোকসানের বোঝা সইবেন কী করে

ছোট্ট একটি ভূখণ্ডে সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের খাবারের জোগান নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের জন্যই বিশাল চ্যালেঞ্জের কাজ। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, মূল্যস্ফীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি—এ সবকিছু ছাপিয়ে বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই এ দেশের মানুষ এখনো টিকে আছে, তার সবচেয়ে বড় অবদান কৃষকের। অথচ দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে সবচেয়ে অবহেলার শিকার হন তাঁরা। এবার আলুচাষিরা তাঁদের উৎপাদিত আলু নিয়ে যে সীমাহীন দুর্ভোগ ও লোকসানের মুখে পড়েছেন, তাতে মনে হতেই পারে, আলু উৎপাদন করে তাঁরা কি অপরাধ করে ফেলেছেন?

আমনের মৌসুমে দফায় দফায় বন্যা হওয়ায় চালের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে চালের দাম এখন গত বছরের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। এ অবস্থাতেও শীতের সবজির ওপর ভর করে প্রায় দুই বছর পর গত মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০-এর নিচে নেমেছে। এ ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান কৃষকের। কিন্তু শীতের সবজি চাষে এ বছর তাঁরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। এবার পেঁয়াজ উৎপাদনেও কৃষকেরা চমক দেখিয়েছেন, ফলে ভোক্তারা তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কিন্তু পেঁয়াজেও কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেননি। আলুর ক্ষেত্রেও কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।

এবার যে আলুর উৎপাদনও বেশি হবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। আগাম বুঝতে পেরে হিমাগারের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে হিমাগারের ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কৃষকেরা মানববন্ধন করে, রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ করে হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানান। সরকার কিছুটা ভাড়াও কমান। কিন্তু প্রথম আলোসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হিমাগারের মালিকেরা কৃষকদের চেয়ে ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আলু সংরক্ষণের অনুমতিপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কতটা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অধিকাংশ আলুচাষি।

হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং হিমাগারে সংরক্ষণের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় কৃষকদের মাঠ থেকেই তাঁদের আলু বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ১ কেজি আলু উৎপাদনে যেখানে কৃষকদের খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা, সেখানে মাঠ থেকে মাত্র ১৪ টাকায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। এত বড় লোকসানের বোঝা তাঁরা সইবেন কী করে!

শীতের সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম এতটা পড়ে যাওয়ার পেছনে হঠাৎ করেই হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি উঠেছে। সরকার যদি একের পর এক ফসলে কৃষকের এই ক্রমাগত লোকসানের দিকে নজর না দেয়, তাহলে স্বল্প মেয়াদে বাজারে স্বস্তির দেখা মিললেও দীর্ঘ মেয়াদে বড় সংকট তৈরি করবে। হিমাগারের মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে কেন হাজার হাজার কৃষক লোকসানের মুখে পড়বেন? সরকারকে অবশ্যই কৃষকদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ