অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত: গোলাম পরওয়ার
Published: 16th, March 2025 GMT
অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের ‘রোডম্যাপ’ (রূপরেখা) ঘোষণা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, অহেতুক কোনো বিলম্ব না করে জাতির আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে যতটুকু সময়ের প্রয়োজন, সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পূর্ণ করে অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত।
আজ রোববার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাইয়ের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সঠিক উত্তরণ ও সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যয়বিচারের যে মূল লক্ষ্য, সেটা অর্জনের জন্য সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন।’
জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, অন্তত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে অবিলম্বে একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে নির্বাচনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৫–১৬ বছরে জাতির প্রতি যারা অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যা চালিয়েছে; নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা চালিয়েছে; তাদের বিচারের জন্য যে ট্রাইব্যুনাল হয়েছে; যে আইন হয়েছে; এটাকে আরও ত্বরান্বিত করে জাতির সামনে সেই বিচারও দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন। যাতে জনগণ জানে, ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে মুক্ত হওয়া গণতন্ত্রের এই অভিযাত্রা আর কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
এই আস্থা অর্জনের জন্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিচারের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যারা প্রকৃত অপরাধী, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা হয়েছে, তাদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা উচিত বলে মনে করে জামায়াত। দলটির সেক্রেটারি জেনারেলের ভাষ্য, এ ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে।
প্রতিটি দলের ছোটখাটো কিছু মতপার্থক্য থাকতেই পারে, উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা–উত্তর এই বাংলাদেশে শান্তি–কল্যাণের জন্য মৌলিক বিষয়গুলোতে যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি জাতীয় ঐক্যের স্পিরিট (চেতনা) নিয়ে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে জাতিকে সংঘবদ্ধ রাখতে পারি, সবার কাছে সেই আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র অন ষ ঠ ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগ, তদন্তের আহ্বান সিনেটরদের
বিশ্বব্যাপী পাল্টা শুল্ক আরোপের নাটকীয়তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণকে শেয়ার কিনতে উৎসাহিত করে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে কারসাজি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ট্রাম্প জড়িত ছিলেন কি না- তা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন কয়েকজন মার্কিন সিনেটর।
ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর অ্যাডাম শিফ অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়ের তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যে কে আগে থেকে শেয়ার বাজারের দরপতন সম্পর্কে জানতেন? কেউ কি শেয়ার কিনেছেন বা বিক্রি করেছেন এবং জনগণের খরচে লাভ করেছেন?’
‘আমি হোয়াইট হাউসের উদ্দেশে লিখছি- জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।’, যোগ করেন তিনি।
‘আপনি জানতেন এ শুল্ক বন্ধ হতে চলেছে, তাহলে আপনি কেন আপনার উদ্বোধনী বিবৃতিতে এটি অন্তর্ভুক্ত করেননি? আপনি কেন আপনার সাক্ষ্যে এটি উল্লেখ করেননি?’ নেভাদার একজন ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধি স্টিভেন হর্সফোর্ড বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারকে প্রশ্ন করেছিলেন।
‘আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার কথোপকথন প্রকাশ করি না।,’ গ্রিয়ার উত্তর দিয়েছিলেন।
ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধিরা এ অভিযোগ করছেন কারণ বিশ্বে পাল্টা শুল্ক আরোপের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ খোলার কয়েক মিনিট পরেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘এটাই শেয়ার কেনার দুর্দান্ত সময়!!!’
এর চার ঘণ্টা পর, চীন বাদে অন্য সব দেশ থেকে আমদানি পণ্যের উপর বর্ধিত শুল্ক আরোপের বিষয়টি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। এর পরই ঊর্ধ্বমুখী হয় মার্কিন শেয়ার সূচক।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। গত কয়েক দিন যাবৎ বাজার মারাত্মকভাবে অস্থির থাকায় আমেরিকান বন্ড এবং ডলারের দাম ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছিল।
ওয়াল স্ট্রিটের ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবারও ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে সূচক আট শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে নাসডাক বেড়েছে ১২ শতাংশ। গত ২৪ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ২০০১ সালের ৩ জানুয়ারির পর আর কখনই ১২ শতাংশ চড়েনি নাসডাক। এক দিনের নিরিখে তৃতীয় সর্বোচ্চ সীমায় ওঠার রেকর্ড করেছে এই স্টকের সূচক।
একই চিত্র দেখা গেছে এসঅ্যান্ডপি ৫০০-তে। বুধবার এই মার্কিন শেয়ার সূচকটি সাড়ে নয় শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ২০০৮ সালের পর এটিই তাদের সেরা পারফরম্যান্স।
এর ফলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগে উঠেছে যে, তিনি অর্থনীতির সঙ্গে একটি বিপরীত ‘পাম্প অ্যান্ড ডাম্প’ পরিকল্পনা খেলেছেন; দাম আবার বাড়ার আগে কেবল স্টকের দাম কমিয়ে কেবল সেগুলি কিনে নেয়ার জন্য। সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন