খুলনায় হত্যা ও মাদক মামলায় ৪ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ
Published: 16th, March 2025 GMT
খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের এখলাস হত্যা মামলায় ২ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২ জনের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৪ আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
রোববার খুলনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবীর পারভেজ এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজা পাওয়া আসামিরা হলো- দামোদর পশ্চিমপাড়া এলাকার আজিজুল চৌধুরী এবং একই এলাকার রুবেল সরদার। খালাস পাওয়া আসামিরা হলো- আলাউদ্দিন চৌধুরী, মো.
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাড়ির সামনে এখলাসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয় ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে ফুলতলা থানায় মামলা করেন। ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন চৌধুরী ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এদিকে মাদক মামলায় ২ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২ জনের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। ২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস প্রদান করেন আদালত।
রোববার খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক নীলা কর্মকার এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজা পাওয়া আসামিরা হলো- যশোর জেলার শার্শা উপজেলার ইছাপুর গ্রামের সোহরাব হোসেন এবং একই উপজেলার শংকরপুর গ্রামের ফরিদ বিশ্বাস। খালাস পাওয়া আসামিরা হলো- আবদুর রহিম ও আব্দুল্লাহ আল বাকী। সাজা পাওয়া ২ আসামি পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ডুমুরিয়া থানা পুলিশ ২০১৩ সালের ২৮ এপ্রিল ৪৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় এসআই হান্নান শরীফ বাদী হয়ে মামলা করেন। একই বছরের ২৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ইলিয়াস ফকির ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সেদিন রানার জন্যই খেলেছিল বাংলাদেশ
ম্যাচের আগের দিন দুর্ঘটনায় মানজারুল ইসলাম রানার মৃত্যুসংবাদ পেয়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাশরাফি বিন মুর্তজা। মাঠে নেমে সেই শোককে বানিয়ে ছিলেন প্রেরণা। মাশরাফি-ঝড়ে এলোমেলো হয়ে টেন্ডুলকার-গাঙ্গুলী-দ্রাবিড়ের ভারত অলআউট মাত্র ১৯১ রানে। সেটি বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় তামিম, সাকিব ও মুশফিকের তিন ঝলমলে ফিফটিতে। ৫ উইকেটের জয়ে লেখা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুর্দান্ত এক উপাখ্যান। পোর্ট অব স্পেনে ২০০৭ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ প্রথম আলো থেকে কাভার করেছিলেন উৎপল শুভ্র। পরের দিনের পত্রিকায় প্রকাশিত এই ম্যাচ রিপোর্ট পাঠকদের স্মৃতির ভেলায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ১৮ বছর আগের সেই দিনে…
মানজারুল ইসলাম রানা কি এই ম্যাচটা দেখছিলেন? রহস্যময় অজানা যে ভূবনে চলে গেছেন তিনি, সেখানে কি ক্রিকেট-ফ্রিকেট নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়? সেই জগতের আর কেউ না ঘামালেও কেন যেন মনে হয়, ক্রিকেট অন্তপ্রাণ রানা ঠিকই কুইন্স পার্ক ওভালের দিকে তাকিয়ে ছিলেন কাল।
ত্রিনিদাদের সেই কুইন্স পার্ক ওভালের দিকে, যেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যোগ হলো গৌরবের আরেকটি নতুন অধ্যায়। গত বিশ্বকাপের দুঃস্বপ্ন মুছে দিয়ে বাংলাদেশ দল ফিরিয়ে আনল ১৯৯৯ বিশ্বকাপের স্মৃতি। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আপসেট হিসেবে ’৯৬ বিশ্বকাপে কেনিয়ার কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরাজয়ের পাশেই থাকে সেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়। কাল ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয়ও ক্রিকেটীয় বিচারে আপসেটই। কিন্তু যে আপসেটের পূর্বাভাস দেওয়া যায়, সেটিকে কি আর তেমন আপসেট বলা যায়? বাংলাদেশ দল তো এখানে আসার পর থেকেই বলে আসছিল, ভারত-শ্রীলঙ্কার ভয়ে একদমই কম্পিত নয় তাদের হূদয়। নামে কী আসে যায়! মাঠে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।
তা ভালো বাংলাদেশ খেলল বটে। মাশরাফি-রাজ্জাক-রফিকের বোলিং, তামিম-সাকিব-মুশফিকের ব্যাটিং—এই ম্যাচের যা কিছু হাইলাইটস তার সবই তো বাংলাদেশের অবদান। ভারতের প্রবল পরাক্রান্ত ব্যাটিং লাইন আপ মাত্র ১৯১ রানেই শেষ। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের যে শুরুটা হলো, সেটি অনেককেই ফিরিয়ে নিয়ে গেল ১৯৯৬ বিশ্বকাপে। সে বিশ্বকাপের জয়াসুরিয়া যেন তরুণতর হয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ওপেন করতে নামলেন। মাত্র ১৭ বছরের তামিম ইকবাল এক ইনিংসেই বদলে দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে বাকি বিশ্বের ধারণা। জহির খানের ওভারের প্রথম বল হেলমেটে লাগল। জাতীয় দলে এসেছেন এই সেদিন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ার্মআপ ম্যাচটি ছাড়া আর কোনো বড় দলের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তামিম এরপর কী করতে পারেন? যা করলেন, তা এতদিন অন্য দেশের ব্যাটসম্যানদের করতে দেখে এসেছি আমরা। জহির খানের ওই ওভারেরই শেষ দুই বলে দুই বাউন্ডারি। শেষটি ডাউন দ্য উইকেট বেরিয়ে এসে।
৫৩ বলে ৫১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন তামিম