বগুড়ায় মহাসড়কের পাশে আলুর হাট, যানজটে চরম ভোগান্তি
Published: 16th, March 2025 GMT
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচকে আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশে বসছে আলুর হাট। এতে সপ্তাহে তিন দিন বগুড়া-জয়পুরহাট-হিলি আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিচকে শিবগঞ্জ উপজেলার কিচকে অনেক ব্যাপারী ও পাইকার কেনা আলু সড়কের ওপর স্তূপ করেন। কেউ কেউ সড়কের মধ্যেই যানবাহনে আলু ওঠানো–নামানোর কাজ করেন। এতে এ আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে চলাচলকারী বগুড়া-জয়পুরহাট, বগুড়া-ধামইরহাট, বগুড়া-হিলি-দিনাজপুর রুটের বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।
বগুড়া বাস মিনিবাস কোচ পরিবহন মালিক সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান তালুকদার বলেন, বগুড়া-জয়পুরহাট রুটে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক বাস, মিনিবাস ও দূরপাল্লার কোচ চলাচল করে। কিচকে মহাসড়কের পাশে হাট বসার কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা দেয়। বগুড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া মিনিবাস জয়পুরহাট পৌঁছাতে গড়ে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় লাগার কথা। কিন্তু যানজটের কারণে সকাল ছয়টায় ছেড়ে যাওয়া বাস দুপুরেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। প্রতিবছর আলুর মৌসুমে কিচক হাটে যান চলাচল নিয়ে এ নজিরবিহীন দুর্ভোগ পোহাতে হলেও এদিকে কারও কোনো নজর নেই।
আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে কিচক হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের যানজট হরিপুর থেকে সাধুরিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। শত শত বাস, ট্রাক, ভটভটি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে আটকা পড়ে আছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মোশারফ হোসেন বলেন, পাঁচজন যাত্রী নিয়ে সকাল সাতটা থেকে যানজটে আটকা। তিনি কালাই থেকে মোকামতলা যাচ্ছেন। বেলা দুইটা পর্যন্ত কিচক হাট অতিক্রম করতে পারেননি তিনি।
কিচকে আলুর হাটের যানজটে আটকা পড়া জয়পুরহাটের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এসো-র নির্বাহী পরিচালক মতিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সাতটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনি আলুর হাটের যানজটে আটকা পড়ে আছেন। তিনি বলেন, সড়কের ওপর হাট বসিয়ে এভাবে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ঠেলে দেওয়া চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।
কিচক বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, কিচক হাট ইজারা দিয়ে সরকার গড়ে ২০ লাখ টাকা বছরে আয় করে। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই সরকারি দলের লোকজন হাট ইজারা পান। আর দলীয় নেতারা ইজারা পাওয়ার পর প্রভাব বিস্তার করে সড়কের ওপর হাট বসিয়ে মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউর রহমান বলেন, ‘যত দূর জেনেছি, কিচকে একটি হিমাগারে আলু আনলোডের কারণে যানজট হচ্ছে। তবে হিমাগার কিংবা হাট বসাসহ যে কারণেই হোক, যানজট ও মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল র হ ট র য নজট সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে নববর্ষকে বরণ, শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা ভাস্কর শামীমকে সংবর্ধনা
যশোরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মাধ্যমে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব পালিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কালেক্টরেট চত্বর থেকে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের হয়।
এর আগে দেশব্যাপী বর্ষবরণ শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন।
অনুভূতি ব্যক্তকালে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম বলেন, এই সম্মাননা শুধু আমার একার নয়। যশোরের সব সাংস্কৃতিক কর্মী, সামাজিক ও রাজনীতিক সর্বোপরি গোটা দেশবাসীর। যশোর থেকে শুরু হওয়া পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা আজ প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাঙালিরা সাড়ম্বরে পালন করছে। এই আনন্দ আজ সবার। আজকের এই সম্মাননায় আমি আপ্লুত, খুশি।
অনুষ্ঠানে যশোর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ৩২টির অধিক সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যশোর কালেক্টরেট চত্বরে সমবেত হয়।
জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ এসো এসো গান গেয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সম্মাননা অনুষ্ঠানের পরপরই দেশবাসীর কল্যাণ কামনায় শহরে একটি বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে বেরিয়ে বকুলতলা, দড়াটানা, চৌরাস্তা, কেশবলাল সড়ক হয়ে যশোর ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। এবারের শোভাযাত্রায় সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন প্রাণ প্রকৃতি পাখ পাখালির মোটিফ, ঘোড়ারগাড়িসহ গ্রামবাংলার চিরায়ত বিভিন্ন সামগ্রী বহন করা হয় ও র্যালি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। এসময় বিভিন্ন পেশার মানুষ নববর্ষের বাহারি রঙিন পোশাক পরিধান করে তাদের নিজস্ব বাদ্য বাজিয়ে নেচে গেয়ে তারা নববর্ষকে বরণ করে নেয়।
এদিকে, সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে যশোর পৌরপার্কে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যশোর উদীচী, নবকিশলয় স্কুলে বিবর্তন যশোর ও সুরধুনী ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজ নিজ ভেন্যুতে কবিগান, পালাগান, পঞ্চকবির গান, আধুনিক গান, লোকসংগীত, লোকনৃত্য, বাউল গান পরিবেশন করা হয়।
বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সব বয়সের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ উৎসব দেশে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করবে এমন আশা তাদের।
অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার রওনক জাহান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।