কুমিল্লার বরুড়ায় একটি সড়কের মাঝখানে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। খুঁটিটি সরিয়ে সড়কের একপাশে স্থাপন করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে খুঁটিটি উঠিয়ে পাশে স্থাপন করে বিদ্যুৎ বিভাগ। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নু এমং মারমা মং। তিনি জানান, সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে। পরে এলজিইডি এবং পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দ্রুত খুঁটিটি সরিয়ে নিতে বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশ দিলে তা সরিয়ে নিয়ে সড়কের একপাশে বসানো হয়। 

তিনি বলেন, আগের গাছের খুঁটির পরিবর্তে সেখানে পাকা কংক্রিটের খুঁটি বসানো হয়েছে। এর আগে শনিবার ‘রাস্তার মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়কের কাজ সমাপ্ত’ শিরোনামে সমকালে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি সংশ্লস্টদের নজরে আসে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বরুড়া উপজেলার পরানপুর বাজারের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তরে সমেশপুর গ্রামের দক্ষিণ অংশ পর্যন্ত গ্রামীণ সড়কটির দেড় কিলোমিটার পাকাকরণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। যার বরাদ্দ ধরা হয় দেড় কোটি টাকা। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করা হলে সড়কটির কাজ পায় মেসার্স এসআই এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মাস তিনেক আগে সড়কটির পাকাকরণের কাজে হাত দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। সড়কের পরানপুর বাজার সংলগ্ন অংশে সড়কটির ঠিক মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই কাজ সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে বিল উত্তোলন করে। মাঝখানে খুঁটি থাকায় ওই সড়কে চলাচলকারী মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। 

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আবদুল জলিল বলেন, ‘রাতে ওই স্থানে প্রায়ই ঘটতো দুর্ঘটনা। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় জনগণের আর ভোগান্তি থাকবে না।’

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পয়ালগাছা সাব জোনাল অফিসের এজিএম জাহিদুল হাসান জানান, রাস্তা নির্মাণের সময় বৈদ্যুতিক খুটি থাকলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে পত্রের মাধ্যমে জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারী প্রয়োজনীয় ব্যয় জমা সাপেক্ষে লাইন সরানোর কাজটি করা হয়। বরুড়া উপজেলার সমেশপুর গ্রামে বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তার অভ্যন্তরে রেখে কাজ সম্পন্ন করার বিষয়টি আগে জানা ছিল না। সংবাদ প্রকাশের পর দ্রুততার সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে বিনামূল্য খুঁটি সরানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়কট র ব ষয়ট সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

অসমাপ্ত আধা কিলোমিটারে দুর্ভোগ

১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের সাড়ে ১৫ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৫০০ মিটারের কাজ না করেই ঠিকাদার হাওয়া। এই ৫০০ মিটারই দুর্ভোগে ফেলেছে এলাকাবাসীকে। তারা ধুলায় একাকার হচ্ছেন। ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার টুঙ্গিপাড়া-ঘোনাপাড়া সড়কের চিত্র এটি। স্থানীয়রা দ্রুত এ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করে তাদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সড়ক বিভাগের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,  পিরোজপুর-নাজিরপুর-মাটিভাঙ্গা-পাটগাতী-ঘোনাপাড়া সড়কটি পিরোজপুর, নাজিরপুর, টুঙ্গিপাড়া, জিয়ানগর ভাণ্ডারিয়া উপজেলা থেকে ঢাকা-গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায় যাতায়াতের সহজ পথ। এ সড়কের মধ্যে  সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ডেন্টাল কলেজ, আঞ্চলিক ধান গবেষণা কেন্দ্র, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিআরটিসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও বাস ডিপো, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টুঙ্গিপাড়া সরকারি কলেজ উল্লেখযোগ্য। তাই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির টুঙ্গিপাড়া থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সার্ভিস লেনসহ ৪ লেনে চওড়া করার কাজ শুরু করা হয় ২০২২ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩৪৭ কোটি টাকা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই সড়কের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা থেকে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়কের কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যায়। তার পরই এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল, পণ্য পরিবহন ও মানুষের যাতায়াতে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে হচ্ছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনাও।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের ফোরকান আলী বলেন, সড়কটির প্রায় সব কাজ শেষ হয়েছে। মাত্র আধা কিলোমিটার কাজ না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে গেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গেলে ভোগান্তির শেষ নেই। কখনও কখনও যানজট, ধুলাবালির মধ্যে পড়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে এখানে ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। তাই তিনি দ্রুত এই আধা কিলোমিটার সড়কের কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানান।
পাটগাতী গ্রামের ভ্যানচালক রইচ বিশ্বাস বলেন, সড়কের সব জায়গা ভালো। কিন্তু গিমাডাঙ্গা থেকে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কাজ শেষ হয়নি। এখানে ভ্যান চালাতে গেলে প্রচুর ঝাঁকুনি হয়। এতে বয়স্ক যাত্রীর অসুবিধা হয়। মাঝেমধ্যে ভ্যানের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়। ঘটে দুর্ঘটনা। এ সড়কের ৫০০ মিটার অংশটুকুর কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে।
বাসচালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সড়কটি খুবই সুন্দর হয়েছে। কিন্তু মাত্র আধা কিলোমিটারের কাজ বাকি রয়েছে। এই আধা কিলোমিটার অতিক্রম করার সময় ধুলাবালি ওড়ে। এতে পথচারী ও ছোট যানবাহনের যাত্রীদের কষ্ট হয়। এ ছাড়া বাসের জানালা বন্ধ করতে হয়। কখনও কখনও যানজটে আটকা পড়তে হয়। আধা কিলোমিটার সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হলে এলাকাবাসী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
টুঙ্গিপাড়ার শ্রীরামকান্দি গ্রামের সাইফুল শেখ বলেন, যাতায়াত ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য পাটগাতী হাটে পরিবহনে তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তাই ওই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ ৫০০ মিটার এলাকার কাজ দ্রুত শুরু করে শেষ করার দাবি জানান তিনি। 
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর পরও ওই সড়কের ৫০০ মিটারের নির্মাণকাজের সব বাধা অপসারিত হয়েছে। ২-১ দিনের মধ্যে ফান্ড ছাড় করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। দ্রুত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে। কাজ শুরু হলে শেষ করতে বেশি সময় লাগবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অসমাপ্ত আধা কিলোমিটারে দুর্ভোগ