ইবিতে ১৫ বছরের নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে কমিটি
Published: 16th, March 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গত ১৫ বছরের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
এতে আহ্বায়ক হিসেবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
ইবির ডি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু
ইবিতে আওয়ামীপন্থিদের অংশগ্রহণে ভর্তি কমিটির সভায় বাঁধা
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামান, ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী প্রমূখ।
জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত ২০০৯ সালের ৯ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির পৃষ্টপোষকতাকারীদের চিহ্নিত করতে তথ্য অনুসন্ধানপূর্বক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। গঠিত কমিটিকে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার জন্য বলা হয়েছে।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান খান বলেন, “চিঠি হাতে পেয়েছি। আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। আর অনিয়মের তথ্য জমা দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ করা হয়েছে। কেউ যদি দুর্নীতির কোনো তথ্য দিতে পারেন, তার জন্য অনলাইন ও অফলাইনে জমা দেওয়ার আহ্বান থাকবে। সবার সার্বিক সহযোগিতা কাম্য।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লালমনিরহাটে আদালতে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালত কার্যালয়ে তিনটি পদে মোট ২৪ জন কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে তা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। রোববার দুপুরে লালমনিরহাট শহরের একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় ‘লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক জয়নুল আবেদীন স্বপন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লালমনিরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আফজাল হোসেন, আইনজীবী মো. ময়েজউদ্দিন সরকার, ব্যবসায়ী মো. আবুল কাশেম ও সাহেদুল হক সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিত্যানন্দ রায়কে নিয়োগ বোর্ডের প্রধান করে সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ কার্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে ১৪ জন, জারিকারক পদে ৪ ও অফিস সহায়ক পদে ৬ জন নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি কম্পিউটার অপারেটর কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারিতে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা গত ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। ৫ মার্চ মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় এবং একই দিন নিয়োগপত্র ইস্যু করে উত্তীর্ণদের চাকরিতে যোগদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অফিস সহায়ক ও জারিকারক পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণদের ৫ মার্চ মৌখিক পরীক্ষা হয়। একই দিন উত্তীর্ণদের নিয়োগপত্র ইস্যু করে সেই দিনই চাকরিতে যোগদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে অতিরিক্ত শর্তাবলি মোতাবেক শারীরিক যোগ্যতার সনদ এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন সনদসহ চাকরিতে যোগদান করতে বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলেনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয় নিয়োগের আগে নিজ জেলার সিভিল সার্জনের অনুমোদিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার শর্তাবলি যুক্ত করতে হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও জেলার বাসিন্দা। একই দিনে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কীভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ সংগ্রহ করলেন? আসলে নিয়োগের বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত, তাই সময় বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে তাঁদের চাকরিতে যোগদান করিয়ে নেওয়া হয়, যা অনৈতিক, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীন বলেন, এই নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার পরিলক্ষিত হওয়ায় লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে নিয়োগ বাতিলের দাবিতে ৬, ৭ ও ৮ মার্চ লালমনিরহাট শহরে মাইকিং করে ৯ মার্চ লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড়ে সকাল ১০টায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে জজকোর্ট অভিমুখে মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। এই কর্মসূচি ঘোষণা ও মাইকিং করা হলে ৮ মার্চ লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ মোহা. আদীব আলী স্বাক্ষরিত নিয়োগ স্থগিতসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক সমাজের পূর্বঘোষিত ৯ মার্চের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, নিয়োগ স্থগিত করায় প্রমাণিত হয় যে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি, নিয়োগ-বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা গত জুলাই ২৪ গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এই ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে ১৭ এপ্রিল ১০টায় লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় চত্বরে একই সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও জজকোর্ট অভিমুখে প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
নিয়োগপ্রক্রিয়ায় দুর্নীতির বিষয়ে বক্তব্য জানতে লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু ফাত্তাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি যাঁকে চাকরি পেতে সহায়তা করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁকে তিনি চেনেন না। এ বিষয়ে তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।