বিক্ষোভ থেকে আইনজীবীদের ধর্ষকের পক্ষে না দাঁড়ানোর আহ্বান
Published: 16th, March 2025 GMT
দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন এবং বিচার বিভাগের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ফরিদপুরের সাধারণ ছাত্র-জনতা আজ রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ১১টায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
ফরিদপুর প্রেসক্লাব থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি মজিদ সড়ক অতিক্রম করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় হয়ে ফরিদপুর কোট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘‘দেশে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলেছে। অপরাধীরা শাস্তি ছাড়াই পার পেয়ে যাচ্ছে। বিচার বিভাগের অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে ন্যায়বিচার পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তরা। আমরা চাই, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন জরুরি পদক্ষেপ নেয়।’’
তারা আরো বলেন, ‘‘ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচার বিভাগকে আরো দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে কাজ করতে হবে, যাতে অপরাধীরা দ্রুত শাস্তি পায়।’’
মিছিলে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘‘আমরা ফরিদপুর কোর্ট চত্বরে এসেছি, আমাদের সম্মানিত আইনজীবীদের হুঁশিয়ার করে দিতে, যেন তারা ধর্ষকের পক্ষে না দাঁড়ায়। তাদেরও তো বোন রয়েছে, মা রয়েছে। ধর্ষক অন্য কারো মা-বোনের ক্ষতি করবে না, এটা কে বলেছে? তাই আমরা চাই, ধর্ষকের পাশে কেউ যেন দাঁড়ায় না।’’
বিক্ষোভ মিছিলে ফরিদপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেয়।
ঢাকা/তামিম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আবরার হত্যা: আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় রোববার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার দায়ে দণ্ডিত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রোববার রায় ঘোষণা করা হবে। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেবেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মামলা সংশ্লিষ্ট রোববারের কার্যতালিকায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে আজ।
এর আগে শুনানি শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন হাইকোর্ট। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, খন্দকার বাহার রুমি, নূর মুহাম্মদ আজমী ও রাসেল আহম্মেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল জব্বার জুয়েল, লাবনী আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, শিশির মনির।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।’ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে, তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা। আসামিদের এই ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে একসঙ্গে শুনানি হয়।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। এরপর পেপারবুক থেকে উপস্থাপনের মাধ্যমে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় শুনানি হয়। সেদিন থেকে মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে শুনানি হয়। সর্বশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, খন্দকার বাহার রুমি, নূর মুহাম্মদ আজমী ও রাসেল আহম্মেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল জব্বার জুয়েল, লাবনী আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ শুনানিতে ছিলেন। আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ শুনানিতে অংশ নেন।