আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনে যাত্রী হয়রানি ও প্রতারণা এড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ ব্যবহার করে অথবা সরাসরি কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ে।

রবিবার (১৬ মার্চ) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এবার ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। ফলে টিকিট থাকা সাপেক্ষে কাউন্টারে গিয়েও টিকিট নেওয়া যাবে।

আরো পড়ুন:

গাইবান্ধায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত নারীর পরিচয় মিলেছে 

শিক্ষার্থীদের অবরোধ প্রত্যাহার
সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ট্রেন চলাচল শুরু

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১৪ মার্চ থেকে ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বিপুল চাহিদার প্রেক্ষিতে কিছু অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিকিট কালোবাজারি করতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষ বিভিন্ন আইডি থেকে কেনা টিকিট বেআইনিভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রির চেষ্টা করতে পারে। এতে যাত্রী সাধারণের হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) ব্যবহার করে কিংবা সরাসরি কাউন্টার থেকে টিকিট ক্রয়ের পরামর্শ দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

আরো বলা হয়েছে, ঈদযাত্রায় (২৪-৩০ মার্চ) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ একবার চারটি টিকিট কেনা যাবে। এক্ষেত্রে আইডিধারী ব্যক্তির সহযাত্রীদের নামও ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনুরূপভাবে ফেরত যাত্রার ক্ষেত্রেও (৩-৯ এপ্রিল) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ একবার চারটি টিকিট কেনা যাবে। ঈদযাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) এবং নির্ধারিত কাউন্টার ছাড়া অন্য কোথাও ট্রেনের টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে না। কোনো যাত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) এবং নির্ধারিত কাউন্টার ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা স্থান থেকে টিকিট কিনলে তিনি নিশ্চিতভাবে প্রতারিত হবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী যে ব্যক্তির আইডি ব্যবহার করে টিকিট কেনা হবে, ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোন ও আইডিধারী ব্যক্তির ফটো সম্বলিত আইডি কার্ডসহ তাকে ভ্রমণ করতে হবে। আইডিধারী ব্যক্তি ও টিকিটে উল্লিখিত সহযাত্রী ছাড়া অন্য কেউ ভ্রমণ করতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি নিজের আইডি ছাড়া অন্য কারো আইডি ব্যবহার করে কেনা টিকিটে ভ্রমণ করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোনো প্রতারকচক্র বা কালোবাজারি এমন অন্যের নামে বা অন্য কারো আইডি ব্যবহার করে কেনা টিকিট কারো নিকট বিক্রির চেষ্টা করলে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার জন্য অথবা বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে যাত্রীদের বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ও জিআরপির সহায়তা গ্রহণেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের হটলাইন ১৩১ নম্বরে ডায়াল করে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সব ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ ল দ শ র লওয় র ন র ধ র ত অ য প ব যবহ র কর অন য ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ

বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি

বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। 

এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।

টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ