চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে চায় সরকার: প্রেস সচিব
Published: 16th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফরের মাধ্যমে সরকার দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। প্রধান উপদেষ্টা ২৬ মার্চ চীন সফরে যাবেন।
রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ রোববার এক ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম এ কথা বলেন। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার এই সফর বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া চীনের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রেস সচিব বলেন, এ সফরের চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগ করবে বলে তিনি আশা করছেন।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের মান উন্নয়ন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার এই সফরে আলোচনা হবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, চীন বাংলাদেশে একটি জেনারেল হাসপাতাল করে দেবে বলেছে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা চাচ্ছেন, চীনের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ করে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে হাসপাতাল তৈরি করে।
শফিকুল আলম বলেন, চার দিনের এ সফরে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চীনের হাইটেক পার্ক পরিদর্শন করবেন। এ ছাড়া পিকিং ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন।
উৎপাদনে (ম্যানুফ্যাকচারিং) অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লব ঘটাতে চায় মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো খুব ভালোভাবে ব্যবসা করছে। আমরা চাই তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, প্রধান উপদেষ্টা দেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতির লক্ষ্যে আগামীকাল সারা দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি বলেন, এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক নির্দেশনা দেবেন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কথা শুনবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মডেল মেঘনা আলম কেন নিরাপত্তা হেফাজতে, জানাল পুলিশ
মডেল মেঘনা আলমকে অপহরণের যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)। তাঁকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়ার কারণ জানিয়ে শুক্রবার গণমাধ্যমে একটি বার্তা পাঠিয়েছে ডিএমপি।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্ক মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির অপচেষ্টা এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মেঘনা আলমকে সকল আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁকে অপহরণ করার অভিযোগ সঠিক নয়। আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে মেঘনা আলমের লাইভ চলার মধ্যেই তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী বাসার ‘দরজা ভেঙে’ পুলিশ পরিচয়ধারীরা ভেতরে প্রবেশের পরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা লাইভটি এরপর ডিলিটও হয়ে যায়। ওই দিন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসা থেকে তাঁকে আটকের পর কারাগারে পাঠানো হয়। মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী এ মডেলকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার রাতে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। শুক্রবার আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিটেনশন আইনে সরকার কোনো ব্যক্তিকে আদালতের আনুষ্ঠানিক বিচার ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটক বা বন্দি করতে পারে। এ ধরনের আইন সাধারণত জননিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে প্রয়োগ করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ১০টায় মেঘনা আলমকে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। পরে ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের আদেশের বরাতে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২ (এফ) ধারায় জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত করার জন্য এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে মেঘনা আলমকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আটকাদেশ স্বাক্ষরের দিন থেকে ৩০ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেওয়া হয়। পরে তাঁকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
তাকে আটকের বিষয়ে ভাটারা থানার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বুধবার মেঘনা আলমকে আটকের জন্য বসুন্ধরা এলাকায় এসেছিলেন। সঙ্গে ভাটারা থানার পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন। প্রথমে তিনি দরজা খুলতে চাননি। পরে তাকে আটক করে মিন্টো রোডে নিয়ে যাওয়া হয়।
মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।