ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় ১২ বছরের এক মেয়েশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা শৈলকুপা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে প্রধান আসামি করা হয়েছে শরিফুল ইসলাম শরীফ নামে একজনকে। অপর আসামি হলেন সন্ন্যাসী মণ্ডল। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, বিষয়টি একটু জটিল মনে হচ্ছে। তার পরও পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেছে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বলেন, মেয়েটি তার কাছে যা বলেছে, তা খুবই কষ্টদায়ক। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের জন্য তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ১২ বছর বয়সী মেয়েশিশুটির বাবা পেশায় ভাঙারি ব্যবসায়ী। ব্যবসার কারণে তিনি বাড়ির বাইরেই বেশি থাকেন। গ্রামের শরিফুল ইসলাম শরীফ ৭ মার্চ ও সন্ন্যাসী মণ্ডল ৮ মার্চ তাঁর স্ত্রীর সহায়তায় তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা ১২ মার্চ মেয়েটি তার বাবাকে জানায়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ হয়। একপর্যায়ে মেয়েটির মা বাড়ি থেকে চলে যান। বর্তমানে তিনি নিখোঁজ।

ধর্ষণ মামলার দুই আসামিরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অভিযোগের বিষয়ে দুজনের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমিত বর্মণ বলেন, ঘটনাটি তদন্তে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এত বড় লোকসানের বোঝা সইবেন কী করে

ছোট্ট একটি ভূখণ্ডে সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের খাবারের জোগান নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের জন্যই বিশাল চ্যালেঞ্জের কাজ। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, মূল্যস্ফীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি—এ সবকিছু ছাপিয়ে বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই এ দেশের মানুষ এখনো টিকে আছে, তার সবচেয়ে বড় অবদান কৃষকের। অথচ দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে সবচেয়ে অবহেলার শিকার হন তাঁরা। এবার আলুচাষিরা তাঁদের উৎপাদিত আলু নিয়ে যে সীমাহীন দুর্ভোগ ও লোকসানের মুখে পড়েছেন, তাতে মনে হতেই পারে, আলু উৎপাদন করে তাঁরা কি অপরাধ করে ফেলেছেন?

আমনের মৌসুমে দফায় দফায় বন্যা হওয়ায় চালের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে চালের দাম এখন গত বছরের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। এ অবস্থাতেও শীতের সবজির ওপর ভর করে প্রায় দুই বছর পর গত মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০-এর নিচে নেমেছে। এ ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান কৃষকের। কিন্তু শীতের সবজি চাষে এ বছর তাঁরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। এবার পেঁয়াজ উৎপাদনেও কৃষকেরা চমক দেখিয়েছেন, ফলে ভোক্তারা তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কিন্তু পেঁয়াজেও কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেননি। আলুর ক্ষেত্রেও কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।

এবার যে আলুর উৎপাদনও বেশি হবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। আগাম বুঝতে পেরে হিমাগারের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে হিমাগারের ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কৃষকেরা মানববন্ধন করে, রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ করে হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানান। সরকার কিছুটা ভাড়াও কমান। কিন্তু প্রথম আলোসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হিমাগারের মালিকেরা কৃষকদের চেয়ে ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আলু সংরক্ষণের অনুমতিপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কতটা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অধিকাংশ আলুচাষি।

হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং হিমাগারে সংরক্ষণের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় কৃষকদের মাঠ থেকেই তাঁদের আলু বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ১ কেজি আলু উৎপাদনে যেখানে কৃষকদের খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা, সেখানে মাঠ থেকে মাত্র ১৪ টাকায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। এত বড় লোকসানের বোঝা তাঁরা সইবেন কী করে!

শীতের সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম এতটা পড়ে যাওয়ার পেছনে হঠাৎ করেই হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি উঠেছে। সরকার যদি একের পর এক ফসলে কৃষকের এই ক্রমাগত লোকসানের দিকে নজর না দেয়, তাহলে স্বল্প মেয়াদে বাজারে স্বস্তির দেখা মিললেও দীর্ঘ মেয়াদে বড় সংকট তৈরি করবে। হিমাগারের মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে কেন হাজার হাজার কৃষক লোকসানের মুখে পড়বেন? সরকারকে অবশ্যই কৃষকদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ