বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে সাবেক শ্বশুরের কবজি কাটার অভিযোগ
Published: 16th, March 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারায় বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে যুবকের চাপাতির কোপে তাঁর সাবেক শ্বশুরের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কবজি জোড়া লাগানোর জন্য ওই ব্যক্তিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার রাতে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দেউলা গ্রামে।
কবজি হারানোর শঙ্কায় থাকা ব্যক্তির নাম আতাউর রহমান (৪৭)। তাঁকে চাপাতি দিয়ে কোপানো ব্যক্তির নাম আরিফুল ইসলাম (৩০)। তাঁদের বাড়ি উপজেলার দেউলা গ্রামে। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে পিটুনি দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার ইফতারের পর দেউলা গ্রামের আতাউর রহমান দেউলা বাসস্ট্যান্ডে আসেন। তিনি একটি দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় আরিফুল ইসলাম ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেখানে আসেন। এ সময় তিনি সাবেক শ্বশুরের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে কোমরে লুকিয়ে রাখা চাপাতি দিয়ে আতাউরকে কোপাতে থাকেন। এ সময় তিনি হাত উঁচিয়ে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন। চাপাতির কোপে আতাউরের বাঁ হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে যায়।
আতাউরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, প্রায় বিচ্ছিন্ন কবজি কেটে ফেলা ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব নয়। পরে রাতেই আতাউরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনবার্সন প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে দেউলা গ্রামের আতাউর রহমানের মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের আরিফুল ইসলামের বিয়ে হয়। দাম্পত্য বিরোধের জের ধরে এই দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়। বিষয়টি নিয়ে আতাউর রহমানের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন আরিফুর। ছাড়াছাড়ির পেছনে তাঁর (আতাউর রহমান) ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ আরিফুরের।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আতাউর রহমানের ছোট ভাই আবদুর রাজ্জাক জানান, চাপাতির কোপে তাঁর ভাইয়ের বাঁ হাতের কবজির ৯৩ শতাংশ কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই অংশ জোড়া লাগানো সম্ভব নয় বলে রাজশাহীর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। পরে তাঁরা আতাউরকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার হলেও সফল হয়নি। মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তিনদিন পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি শুনেছেন। মামলা হয়নি এখনো। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র ল ইসল ম উপজ ল র কবজ
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুমন্ত স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে হাত-পা থেঁতলে দিয়েছেন স্বামী
লক্ষ্মীপুরে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে এক গৃহবধূর পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন তার স্বামী, সেই সঙ্গে তাকে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে আঘাত করে শরীর থেঁতলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রগ কেটে কর্তনের শিকার নারীর নাম রিনা বেগম। তার স্বামী আলমগীর হোসেন। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালু হাজী সড়কে ভাড়া থাকেন। সেখানেই ঘটনাটি ঘটেছে।
ররিবার (১৬ মার্চ) রিনার ভাই অ্যাম্বুলেন্স চালক হোসেন আহমেদ রাইজিংবিডি ডটকমকে অভিযোগটির বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া রগ কাটার পায়ের ছবি দিয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন:
গোদাগাড়ীতে ৫ কেজি হেরোইন উদ্ধার, ২ নারী গ্রেপ্তার
মাগুরায় ঘুমিয়ে গেল আছিয়া, জাগিয়ে গেল দেশ
হোসেন আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিনা বেগমের স্বামী আলমগীর ১৫ মার্চ রাতে বটি দিয়ে তার স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে ফেলেন। একইসঙ্গে রিনার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে বটি দিয়ে কোপান। একপর্যায়ে পাথর দিয়ে হাত-পা থেঁতলে দেন তার স্বামী।
আলমগীর লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর বাঞ্চানগর এলাকার কসাই বাড়ির লেদু মিয়ার ছেলে, যিনি পেশায় নির্মাণশ্রমিক।
রিনা বেগমের পরিবারের সদস্যদের কথা বলে জানা গেছে, রিনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ। পরিবারের লোকজন ঢাকা থেকে ফিরে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
হোসেন আহমেদের সঙ্গে হলে তিনি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, বাড়িতে ঘর না থাকায় রিনা ও তার স্বামী আলমগীর কালু হাজী সড়কে সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। শনিবার রাতে রিনা খাবার শেষে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তার স্বামী আলমগীর বাসায় এসে ঘুমন্ত স্ত্রীর মাথায় ধারালো বটি দিয়ে আঘাত করে। পরে তার দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। একপর্যায়ে পাথর দিয়ে দুই হাত-পা থেঁতলে দেয়।
আহত রিনাকে ফেলে রেখে আলমগীর পালিয়ে যায় জানিয়ে হোসেন আহমেদ বলেন, প্রতিবেশীরা রিনাকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাঠান।
হোসেন আহমেদ বলেন, “আলমগীর আমার বোনকে কুপিয়েছে। হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, সে মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত।”
ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে আলমগীর হোসেন। রাইজিংবিডি ডটকম তার বক্তব্য নিতে পারেনি।
সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাদেরকে জানায়নি। তবে জানতে পেরেছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/লিটন/রাসেল