মধ্যরাতে যে মানুষগুলোকে সাদা পোশাকধারীরা তুলে নিয়ে যায়, যারা আর ফেরে না- তাদের আমলনামা লিখেছেন নির্মাতা রায়হান রাফী। ১৩ মার্চ প্রকাশ পেয়েছে ‘আমলনামা’নামের এ ওয়েবফিল্ম। সত্য ঘটনার ওপর নির্মিত এ ওয়েব সিনেমাটি এরইমধ্যে লুফে নিয়েছেন দর্শক।

এদিকে অনেকেই বলছেন ‘আমলনামা’ বানানো হয়েছে আজ থেকে বছর ছয়েক আগে বিচারবহির্ভূত হত্যাকণ্ডের শিকার টেকনাফ পৌরসভা কাউন্সিলর একরামুল হকের ঘটনা থেকে। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নেননি নিহত একরামুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম।

সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। সেখানে লিখেছেন, ‘পরিচালক রায়হান রাফী একটি কাল্পনিক মুভি বানিয়েছে, এই মুভিতে রায়হান রাফী নিজেই প্রথমে স্বীকার করেন যে, মুভিটি কোনো সত্যি ঘটনার সাথে মিল নেই, তিনি তার মন মতো করে কাল্পনিকভাবে এই মুভিটি বানিয়েছেন। আর আপনারা আজ এই মুভি দেখে আমাদেরকে দোষারোপ ও লজ্জিত করছেন।

এরপর লেখেন, ‘আপনারা এই মুভিটা আমার স্বামীর ঘটনা বলে অপপ্রচার করছেন, আমার স্বামী কোনো প্রকার মাদকদ্রব্যের সাথে জড়িত ছিল না। আমার স্বামীকে খুনিরা পরিকল্পিতভাবে এবং নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আজ আপনারা এই মুভি দেখে আমার স্বামীর আসল ঘটনা বলে উল্লেখ্য করছেন। রায়হান রাফী যদি বলে যে এই মুভিটি একরামুল হকের সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে, তাহলে তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করতে বাধ্য হব। আর আমি রায়হান রাফীকে বলব, এই মুভিটি একরামুল হকের আসল ঘটনার সাথে কোনো মিল নেই। এই কথাটা সবার সামনে বলার জন্য অনুরোধ করছি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন রাফী। নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আমলনামা’ কোনো নির্দিষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মাণ নয়, এটা সকল বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডের প্রতিচ্ছবি।’

আরও লেখেন, ‘আমলনামা অনেকগুলো সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত একটি ফিকশন। প্রত্যেক বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ এই সিনেমা।’

ওটিটি মাধ্যম চরকিতে দেখা যাচ্ছে ‘আমলনামা’। রাফীর পরিচালনায় তমা ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, তমা মির্জা, কামরুজ্জামান কামু, সারিকা সাবরিন, গাজী রাকায়েত, গীতাশ্রী চৌধুরী, হাসনাত রিপন, জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক, এ কে আজাদ সেতু প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র স ব ম এই ম ভ ট একর ম ল আমলন ম ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

গতকাল রোববার দুপুরে জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এক তরুণের হাতের কব্জিতে গুরুতর ক্ষত হয় এবং আরও একজন আহত হন।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।

রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর উভয় পক্ষ ঘণ্টা-ব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারি। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক ব্যক্তির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক পক্ষের সমর্থকরা বালতিতে করে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করছেন। তাদের হাতে ছিল টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ডাল-সুরকি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।

সম্প্রতি জাজিরার বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আলোচিত হয়। গত ৫ এপ্রিল সেখানে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এখনও আলোচনায় রয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো ছাব্বিশপারা এলাকায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ