জুরাসিক পার্ক সিনেমার আদলে বিলুপ্ত পাখি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ
Published: 16th, March 2025 GMT
জুরাসিক পার্ক সিনেমায় কৃত্রিমভাবে তৈরি ডিমের মাধ্যমে শত শত বছর পর পৃথিবীতে ফিরে এসেছিল ডাইনোসর। সিনেমার সেই কল্পকাহিনির আদলে একইভাবে মুরগির ডিমের কোষের ডিএনএ পরিবর্তন করে হারিয়ে যাওয়া ডোডো পাখিকে ফিরিয়ে আনতে চান যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে সাদা লেগহর্ন মুরগির ডিমের কোষের ডিএনএতে লাল মোরগের জেনেটিক কোডের একটি অংশ প্রবেশ করিয়ে গবেষণা করছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই পদ্ধতিতে জিনগতভাবে মুরগির বাচ্চার ভ্রূণে বিভিন্ন বিষয় পরিবর্তন করা হবে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যুক্তর করার জন্য ডিএনএর অংশ সন্নিবেশ করানো হবে। বিজ্ঞানীরা চারটি মূল জিন পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন, যা পালকের রং, পায়ের রং, ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার সময় ও মুখের সাজসজ্জার শৈলীসহ সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
বিজ্ঞানী অ্যানা বেরেনসন বলেন, ‘এখানে আমাদের লক্ষ্য, কোন ডিএনএ গুরুত্বপূর্ণ, তা চিহ্নিত করা। তারপরই আমরা অদলবদল করব। আমাদের প্রত্যাশা, গৃহপালিত মুরগিকে সফলভাবে পুনরুজ্জীবিত করতে জিনোম প্রকৌশল পদ্ধতি ব্যবহার করা। এতে ডোডো পাখিকে পুনরুজ্জীবিত করা যেতে পারে। এই পাখি সতেরো শতকে ভারতীয় মহাসাগরের মরিশাস থেকে বিলুপ্তি হয়ে গেছে।
ডোডো পাখির বৈজ্ঞানিক নাম রাফাস কুকুলাটাস। বিলুপ্ত এই পাখি, যা ভারত মহাসাগরের মাদাগাস্কারের পূর্বে মরিশাস দ্বীপের স্থানীয় পাখি ছিল। ডোডোর নিকটতম প্রজাতি ছিল রড্রিগেস সলিটায়ার। এই দুই পাখি রাফিনা নামক উপ-উপজাতি গঠন করে। কবুতর ও ঘুঘু পাখিও এদের পরিবারের অংশ। ডোডোর সবচেয়ে কাছের জীবিত প্রজাতি বলা হয় নিকোবর কবুতর। বিভিন্ন ফসিলের তথ্য থেকে জানা যায়, ডোডোর উচ্চতা ছিল প্রায় ৬২ দশমিক ৬ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার। বন্য অবস্থায় ওজন ছিল ১০ দশমিক ৬ কেজি থেকে ১৭ দশমিক ৫ কেজি।
সূত্র: দ্য টাইমস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম রগ র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে হিন্দুধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। তারা উপাচার্যকে অভিযোগপত্রের একটি কপি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত আব্দুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তার পোস্টটির স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সমালোচনা হয়।
আরো পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ফ্যাসিবাদমুক্ত নববর্ষ
৫ বছর পর কুবিতে নববর্ষ উদযাপন
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী (আব্দুর রহমান, আইন বিভাগ ১৮তম আবর্তন) লাগাতার সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি করে যাচ্ছে। এর মধ্যে সোমবার (১৪ এপ্রিল) একটি পোস্টে সনাতন ধর্মকে ঘৃণিত ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখোনে ‘হিন্দুধর্ম। ইট'স রিকোয়াইর্স টু বি অ্যাগ্রেসিভলি রেপড, (গালি) ইন আ রুড ওয়ে। (গালি)।’ বলা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, এই বক্তব্য শুধু কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান এবং ঘৃণিত করে। এ ধরনের বক্তব্য কোনো সভ্য সমাজ বা শিক্ষাঙ্গনে মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বর্তমানে ২ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞান ও সম্প্রীতির স্থান। এখানে এমন কোনো মত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত নয়, যা অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে।
অভিযোগপত্রে তাদের দাবি, ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘৃণিত কাজ না করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (১৪ এপ্রিল) এম এ হোসাইন নামের একটি পেইজে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে জীবন্ত ছাগলকে পুড়িয়ে ফেলার একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেটার ক্যাপশন অপশনে লেখা ছিল ‘জনশ্রুতি আছে, পৃথিবীর নিকৃষ্ট ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। একটা নিরীহ জীবন্ত প্রাণীকে এভাবে আগুনে পুড়ে মারার অধিকার কি কোনো ধর্মে আছে?’
পরবর্তীতে স্ক্রিনশটটি আরো ছড়িয়ে পড়লে শেয়ারকৃত পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চেয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত আবদুর রহমানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখা হয়েছে।
আইন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সজীব বিশ্বাস বলেন, “আব্দুর রহমান যেভাবে ফেসবুকে আমাদের ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করেছে, আমি তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে একটা ধর্মকে নিয়ে এমনভাবে গালি দিতে পারে? আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো, বিগত বছরগুলাতে যেভাবে ধর্মকে অবমাননার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে, এবারো যেন তার ব্যতিক্রম না ঘটে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবদুর রহমান বলেন, “আমি আমার বক্তব্য প্রক্টর অফিসে দিয়েছি।”
আইন বিভাগের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আলী মোর্শেদ কাজেম বলেন, “আমি এই বিষয়ে অবগত নই। ঘটনা সম্পূর্ণ না জেনে আমি তো কোন বক্তব্য দিতে পারছি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা অভিযোগপত্রটি পেয়েছি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যেহেতু আইন বিভাগের, সেহেতু আমরা ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি শৃংখলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “আমি অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে শোকজ করা হবে। তার লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণের পর নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী