করমুক্ত আয় সীমা ৪ লাখ টাকা করতে সিপিডির সুপারিশ
Published: 16th, March 2025 GMT
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে এই সুপারিশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষক মুনতাসীর কামাল উপস্থিত ছিলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, “জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির তুলনায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেশি। এছাড়া, শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি। সাধারণ মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি। এটি বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা উচিত।”
তিনি বলেন, “উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুন শেষে মূল্যস্ফীতির হার ৭-৮ শতাংশে এ নামিয়ে আনার যে পরিকল্পনার কথা বলেছে, সেটি অর্জন করা অসম্ভব হবে।”
ফাহমিদা খাতুন বলেন, “রপ্তানি আয় ও আমদানি ব্যয়ে একটা ভারসাম্য রয়েছে। আগের তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীলতা দেখা গেছে। এছাড়া ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ৩.
তিনি বলেন, “সীমিত আয়, সুবিধাবঞ্চিত এবং দুর্বল গোষ্ঠীগুলিকে সহায়তা করতে আগামী দিনগুলোতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আর তা রাজস্ব এবং ব্যয় উভয় ক্ষেত্রেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।”
তিনি আরো বলেন, “মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সরকারি ব্যয় কাঠামোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য ক্রমাগত উচ্চ ব্যয়ের বিষয়টিও মোকাবিলা করা উচিত। উচ্চ মূল্যস্ফতির এই সময়ে ক্ষুদ্র কৃষক এবং নিম্ন বা সীমিত আয়ের পরিবারগুলোর দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। বিশেষ করে নারী, যুবক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মতো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আর এমন পেক্ষাপটে ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছে সিপিডি।”
ঢাকা/এনএফ/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাহাদুরের দাম চাওয়া হচ্ছে ৯ লাখ
‘ঘোড়াটির বয়স পাঁচ বছর। নাম বাহাদুর। ভারতীয় মারোয়ারী তাজী জাতের প্রাণীটি দ্রুত দৌঁড়াতে পারে। একে নিয়ে বিভিন্ন ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। অনেক পুরস্কারও পেয়েছি। খয়েরি লাল-সাদা ঘোড়াটির যত্ন নিয়েছি নিজেই। এবারের মেলায় এর দাম ঠিক করেছি ৯ লাখ টাকা। অনেকে বিভিন্ন অংকের দাম বললেও এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ লাখ টাকা দাম উঠেছে।’ জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ৫১৭ বছরের ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর দোল পূর্ণিমার মেলায় কথাগুলো বলছিলেন বাহাদুরের মালিক নওগাঁর ধামইরহাটের আব্দুল মজিদ।
ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক আর দর-দামে এখন মুখর ঘোড়ার মেলা। ক্রেতা-বিক্রেতারা দামাদামি করছেন। সাধ্যের মধ্যে মিললে হচ্ছে বেচাকেনা। এ মেলায় এবার প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছে ভারতীয় মারোয়ারী তাজী জাতের ঘোড়াটি। এ ছাড়া পঙ্খিরাজ, বিজলি, কিরণমালা, বাংলার রানী, সুইটিসহ বাহারি নামের ঘোড়াও রয়েছে। তাদের দেখতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। ক্ষিপ্রতা আর বুদ্ধিমত্তা দেখে পছন্দের ঘোড়া কিনতে ক্রেতাদের মধ্যেও রয়েছে প্রতিযোগিতা।
আয়োজকরা জানান, দেশের একমাত্র ঘোড়া বেচাকেনার হাট গোপীনাথপুর দোলের মেলা। সারাদেশের ক্রেতা-বিক্রেতারা আসেন। দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে মাসব্যাপী চলে মেলা। কিন্তু পশুর মেলা হয় প্রথম ১০ দিন। দোল পূর্ণিমার কয়েকদিন আগে থেকে মেলায় অবস্থান নিয়েছেন ঘোড়া ব্যবসায়ীরা। মহিষ, গরু, ভেড়া ও ছাগলও বেচাকেনা হয় এখানে। দরদাম ঠিকঠাকের পর পাশের একটি মাঠে ঘোড়া নিয়ে গিয়ে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়দৌড়।
নীলফামারীর ডোমার থেকে আবুল হোসেন ঘোড়া কিনতে এসেছিলেন মেলায়। তিনি বাহাদুরের দাম বলেছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা। আরও দুই-একটি দেখার পর তিনি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সওয়ারি ও ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, আগে তাদের বাপ-দাদারা মেলায় ঘোড়া বেচাকেনা করতেন। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও এ পেশায় রয়েছেন। আগে ঘোরদৌড়ের বড় মাঠ থাকলেও এখন সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। এতে বেচাকেনায়ও সমস্যা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম বলেন, গোপীনাথপুরের মেলাটি প্রাচীন মেলা। এখানে বিশালাকৃতির ঘোড়া এসেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রমজানের পবিত্রতা ও নিরাপত্তার জন্য বিনোদনমূলক যাত্রা, সার্কাসের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।