পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাজে গতিশীলতা আনতে নিজস্ব কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভরশীলতা কাটানোর উদ্যোগ নিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। 

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ জন কর্মকর্তাকে বিএসইসিতে নিয়োগ দিতে চান রাশেদ মাকসুদ।

নিজস্ব কর্মকর্তাদের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না জানিয়ে সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সিএসইসিতে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন রাশেদ মাকসুদ। 

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) থেকে তিনজন নির্বাহী পরিচালক, তিনজন পরিচালক, একজন কমিশন সচিব এবং ১২ জন যুগ্ম বা অতিরিক্ত পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তা বিএসইসিতে নিতে চান রাশেদ মাকসুদ। 

এসব কর্মকর্তাকে দ্রুত বিএসইসিতে পাঠানোর দাবি জানিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করার কথা জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। তার বিশ্বাস, এটি করা হলে কমিশনের অনেক বিষয়ের গোপনীয়তা বজায় থাকবে।

৫ মার্চের ‘বিদ্রোহ’ পরবর্তী পদক্ষেপ এবং করণীয় সম্পর্কে অবহিত করার প্রতিবেদনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিএসইসিতে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছেন রাশেদ মাকসুদ।

সেই সঙ্গে বিএসইসিতে হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে এবং দ্রুত প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফেরাতে ৯ দফা সুপারিশ করেছে কমিশন।

অর্থ উপদেষ্টার কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেছেন, বিভিন্ন গুরুতর অনিয়মের কারণে সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে অবসর দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক এবং অতিরিক্ত পরিচালক এস কে মো. লুৎফুর কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রশিদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারিসহ শেয়ারবাজার লুটপাটে সহযোগিতার এবং অবৈধ সম্পদ গড়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এটি তদন্ত রিপোর্টে বেরিয়ে আসছে।

ঘটনার দিন কমিশনের উচ্ছৃঙ্খল এবং উদ্ধত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের অবসরের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছিল। একই সঙ্গে তারা কমিশন যাদের শেয়ার কারসাজি ও অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে, তা প্রত্যাহার এবং সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সুপারিশ গ্রহণ না করতে চাপ সৃষ্টি করে।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে নজিরবিহীন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছু কার্যক্রম এরই মধ্যে কমিশন গ্রহণ করেছে এবং ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় আরও কার্যক্রম গ্রহণ করা আবশ্যক বলে কমিশন মনে করে।

গত ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করেছিলেন সংস্থাটির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন। সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের চেষ্টা করা হয়। বিএসইসি ভবনে হট্টগোল এবং চেয়ারম্যানসহ কমিশনারদের অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গত ৬ মার্চ রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মোহতাছিন বিল্লাহসহ ১৬ জনকে আসামিকে করে মামলা দায়ের করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান।

বর্তমানে মামলার ১৬ আসামির সবাই জামিন পেয়েছেন। গত ৯ মার্চ সাতজন এবং ১০ মার্চ ছয়জন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। পরে অন্য দুজনও জামিন নেন। সর্বশেষ মোহতাছিন বিল্লাহ গ্রেপ্তারের পর জামিন পেয়েছেন। জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় তারা জামিন পেয়েছেন।

ঢাকা/এনটি/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত দ র র কর মকর ত ব এসইস ত র রহম ন য় র কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘হতাশা তাড়িয়ে নতুন গতির সঞ্চার’

জ্যাক মা। চীনা ধনকুবের। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবা থেকে অবসরে যান চীনের শিক্ষক দিবসে। ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা জ্যাক নিজেই এই দিনটিকে বিদায়ের জন্য বেছে নিয়েছিলেন। বিদায়বেলা ৬০ হাজার কর্মীর সামনে দেওয়া জ্যাক মার বক্তৃতা থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক

আজকের এই দিন, এই মঞ্চ আমার চেয়ে আলিবাবার সাফল্য এবং প্রতিষ্ঠানটির নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বেশি মনে করিয়ে দিচ্ছে। বদলাচ্ছে পৃথিবী। এই বদলের প্রভাবও পড়ছে আমাদের ওপর। ফলে সামনে আসছে নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রকৃতিও যাচ্ছে খারাপের দিকে। বাড়ছে আমাদের দুশ্চিন্তা। দরজায় দাঁড়িয়ে যেন টোকা দিচ্ছে নতুন দিন। নতুন হাওয়া। নতুন দিনের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন ও তার ব্যাপকতা এবং মানবিকতা। এই তিনটি লক্ষ্য যদি প্রযুক্তির হাত ধরে আমরা অর্জন করতে না পারি, তবে পৃথিবীর আলো-বাতাস আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে আমাদের জন্য।
উদারতাই বড় শক্তি
এই সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি নিজেকে বড় প্রতিষ্ঠান বা সেরা প্রতিষ্ঠানে দেখতে না পেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। যে প্রতিষ্ঠানেই থাকুন না কেন, আপনার উদারতা এখন বড় শক্তি। এই শক্তি বলে আপনি ছোট প্রতিষ্ঠানে থেকেও দুনিয়া জয় করতে পারবেন। কেউ কেউ মনে করে বড় প্রতিষ্ঠানে তেমন ভুল হয় না। এটি ভুল ধারণা ছাড়া কিছুই নয়। আশপাশের অন্য দশটি প্রতিষ্ঠানের মতোই আলিবাবার ভুলের স্তূপ অনেক বড়। তবে আমরা এই ভুল থেকে ফুল ফুটিয়েছি। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই ক্ষেত্রে সব সিদ্ধান্ত অর্থকেন্দ্রিক ছিল না। প্রতিষ্ঠান এবং মানবিকতাও ছিল আমাদের সিদ্ধান্তের শরীরজুড়ে।
প্রযুক্তি শুধুই ভালোর জন্য
ভালো এবং খারাপ সব কিছুতেই থাকে। আমি বিশ্বাস করি প্রযুক্তি শুধু ভালোর জন্য। এটি মানুষের হতাশা তাড়িয়ে নতুন গতির সঞ্চার করে। স্বপ্ন দেখায় নতুন করে। ভাবতে শেখায় তুমুল গতিতে। আলিবাবার ২০ বছরের যে জার্নি তাতে চোখ রাখলে বলতেই পারি যে, আগামীর দিনগুলোতে এ প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তিতে ভর করে তুমুল গতিতে ছুটে চলবে। গতির এই ট্র্যাকে আলিবাবা তুলে আনবে  বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান ও তাদের কর্মীদের।
কেন করি এত অহংকার!
কত জায়গায় ঘুরেছি ব্যবসার কাজে। একবার গ্রিনিচ মানমন্দির ঘোরার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেখানে চোখ বড় করে ছায়াপথ ধরে ঘুরছি তো ঘুরছি! একসময় গোটা ছায়াপথ শেষও করে ফেলি। খুঁজে পাইনি সূর্য এবং প্রিয় পৃথিবীটাকে। তখন নিজেকে নিয়ে ভাবনায় পড়ে যাই। এত বড় ছায়াপথে পৃথিবীর অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম না অথচ আমি এই পৃথিবীর কোনো এক কোণে পড়ে থাকা কোনো নচ্ছাড়! তবু এই পৃথিবীতে অনেক কিছুই আছে উপভোগ্য। অনেক কিছুই এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যা নিয়ে কাজ করা যায় অনায়াসে। আমি আগ্রহ নিয়ে এসবে পড়ে থাকতে চাই।
মানবিকতা জাগিয়ে তোলার কাজে...
প্রত্যেকের একটা নিজস্ব জগৎ থাকে। সেই জগৎজুড়ে ছড়িয়ে থাকে রাজ্যের স্বপ্ন। আলিবাবা আমার তেমনি অসংখ্য স্বপ্নের একটি।
মানুষ সেই স্বপ্নের পেছনে ছোটে। আমিও ছুটব। চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেওয়া মানে হাত-পা গুটিয়ে অবসরে চলে যাওয়া নয়। নতুন করে ব্যস্ততায় ডুব দেওয়া। শিক্ষা, পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের মধ্যে মানবিকতা জাগিয়ে তোলার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাই। এ কাজগুলোর অপেক্ষাই যেন করেছি এতদিন ধরে।
প্রিয় সবুজের কাছে
অপেক্ষার প্রহর গোনা হয়তো শেষ। কাল থেকে জীবন বইয়ের নতুন পৃষ্ঠা উল্টাব। চলে যাব প্রিয় সবুজের কাছে। সবুজই আমার প্রাণ! এই প্রকৃতি আর মানবিকতার কাছ থেকে আমি অবসর চাই না। তাদের জন্য মাঠে নামব কাল থেকে। তাদের সঙ্গে পথচলার নতুন অধ্যায় শুরু করব জীবনের। সেই জীবন পাহাড় ধরে কখনও আকাশপানে ছুটবে, কখনও ঝরনা থেকে গড়িয়ে নদী-সাগর হয়ে বয়ে চলবে অনন্ত পথের দিকে। এই পথে দেখা হবে আমাদের! 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অবসর ভেঙে টি-টোয়েন্টিতে ফিরতে যে শর্ত দিলেন কোহলি
  • ‘হতাশা তাড়িয়ে নতুন গতির সঞ্চার’
  • ‘একটা ট্রফি জিততে পারলে আমাদের প্রজন্মের জন্য ভালো হবে’
  • পঞ্চপাণ্ডবের উত্তরসূরি হিসেবে অবদান রাখতে চান লিটন
  • ভোরে গ্রেপ্তার, বিকেলে জামিন 
  • বিএসইসির পরিচালক মোহতাছিন বিল্লাহ গ্রেপ্তার
  • ‘দলে যারা আছে তারা যোগ্য, মানিয়ে নিতে সময় লাগতে পারে’
  • পুঁজিবাজার উন্নয়নে সবাইকে কাজ করতে হবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
  • খালেদ মাহমুদ বললেন, ‘আমি জানি না, ওরা কেন মাঠ থেকে অবসর নিতে চায় না’