ফেনীতে যৌতুকের জন্য নববধূকে হত্যা, শ্বশুর গ্রেপ্তার
Published: 16th, March 2025 GMT
ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের যৌতুকের জন্য মারধরের শিকার হয়ে গৃহবধূ মারজান আক্তার ঝুমুর (১৮) মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নিহতের শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ মার্চ) ফেনী মডেল থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলার আলমপুর গ্রামের মারজান আক্তার ঝুমুরের সঙ্গে গত ৮ ডিসেম্বর পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের প্রবাসী সাইদুর রহমানের। ছেলে বিদেশে থাকায় মোবাইলে বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ছেলে প্রবাস থেকে দেশে আসার পর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঝুমুরকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়।
বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা তিন লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণ যৌতুক দাবি করে আসছিল। ঝুমুরের বাবা একজন নির্মাণ শ্রমিক হওয়ায় এ দাবি পূরণ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৪ মার্চ স্বামী সাইদুর রহমান, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি বিবি হাজেরা মিলে তাকে (ঝুমুর) মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে, ঝুমুরের পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১২ দিন আইসিইউতে থাকার পর শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন:
রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ-জেএসএস গোলাগুলি, নিহত ১
আবরার হত্যা মামলা
২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল
নিহতের মা ফরিদা আক্তার বলেন, মৃত্যুর আগে হাসপাতালে ঝুমুর তার স্বামী, শ্বশুর, ও শাশুড়ি তার উপর চালানো নির্যাতনের ঘটনা বিস্তারিত জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, ‘‘যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে এক নববধূর মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে নিহতের শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, নিহতের স্বামী প্রবাস থেকে ছুটিতে এসেছিলেন। ঘটনার পরপর তিনি আবার প্রবাস চলে গিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’’
নিহতের বাবা আবদুল আলিম স্বামী, শ্বশুর, ও শাশুড়িকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেছেন।
ঢাকা/সাহাব/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র পর ব প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালু।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাসের রায় দেন।
রায়ের আগে বিচারক বলেন, ‘উনার (মোসাদ্দেক আলী ফালু) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। উনি তো সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন। আর তার অবৈধ সম্পদ যদি থাকে, সেটা তো অবরুদ্ধ করতে হতো। সেটাও তো করা হয়নি। সুতরাং এ মামলা থেকে তাকে খালাস দেয়া হলো।’
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমদ আলী সালাম খালাসে তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন স্ত্রীসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন ফালু। রায়ের পর তিনি হাসিখুশি মেজাজে নেতাকর্মীদের অভিবাদ গ্রহণ করেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। পরে আদালত প্রাঙ্গন ছেড়ে চলে যান।
২০০৭ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর মতিঝিল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানাও আসামি ছিলেন। মামলাটিতে পরের বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর ফালু ও তার স্ত্রী হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। যার কারণে দীর্ঘদিন মামলার বিচারকাজ বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ফালুর আবেদন খাজির করে দেন এবং স্ত্রীর মামলা গ্রহণ করে অব্যাহতির আদেশ দেন। ফলে ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট মামলাটিতে ফালু পলাতক থাকা অবস্থায় চার্জগঠন করেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইস্যু করে। নোটিশের প্রেক্ষিতে ফালু ওই বছর ১ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। দুদকের তদন্তে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৮৬৬ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ এবং ১০ কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৫১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের তথ্য পায়।
২০০৪ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে মোসাদ্দেক আলী ফালু ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। পরে আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
ঢাকা/মামুন/ফিরোজ