জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় আসামি হিসেবে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার এই আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হলে প্রথম মামলাটি হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এত দিন এই মামলার একমাত্র আসামি ছিলেন শেখ হাসিনা। এখন তাঁর সঙ্গে এই মামলায় আসামি হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে যুক্ত করা হলো।

শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটা মামলা আছে। সেই মামলায় তিনি একাই আসামি ছিলেন। আজকে তাঁর সঙ্গে আসামি হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে যুক্ত করে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ফলে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সহ-আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেন।

মামলায় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এক দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তাজুল ইসলাম।

শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন উপস্থিত ছিলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, তাঁরা দেখেছেন, শেখ হাসিনার যে কমান্ড রেসপনসিবিলিটি, তার সবকিছু বাস্তবায়নের ডানহাত ছিলেন তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সে কারণে তাঁরা কৌশলগত কারণে তাঁকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

তাজুল ইসলাম জানান, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মুঠোফোন এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।

শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনসহ গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাভার এলাকায় যে গণহত্যা হয়েছিল, সেই ঘটনার মামলায় সাভার এলাকার আওয়ামী লীগের আরও তিন নেতাকে হাজির করার জন্য আজ নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

তাজুল ইসলাম জানান, এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালের পুরোনো একটি মামলার শুনানি আগামী ১৮ মে নির্ধারণ করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আল ম ম ন ত জ ল ইসল ম ম নবত ব র ধ ক ত কর আইজ প অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

গুম-খুনে জড়িত সদস্যদের বিচার চেয়ে র‍্যাব কার্যালয়ের সামনে ‘শহীদি মার্চ’ সদর দপ্তরের সাম

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) যেসব সদস্য গত ১৬ বছরে গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিচারের দাবিতে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরায় র‍্যাব সদর দপ্তরের সামনে জুলাই মঞ্চ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আজ শুক্রবার বিকেলে এই কর্মসূচি পালন করে।

এই কর্মসূচি থেকে জুলাই গণহত্যার বিচার, এই গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা, গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানানো হয়েছে।

‘শহীদি মার্চ’ শীর্ষক এই কর্মসূচিতে জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি সাকিব হোসাইন বলেন, র‍্যাব বাংলাদেশে এমন সব কাজ করেছে, যার ফলাফল হিসেবে জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো র‍্যাবকে নিষিদ্ধের পরামর্শ দিয়েছে। র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক নিজে স্বীকার করেছেন, বিগত সময়ে র‍্যাব গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত ছিল। অথচ সাত মাস পার হলেও এখনো র‍্যাবের যে সদস্যরা গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের তালিকা প্রকাশ করেনি র‍্যাব। পাশাপাশি চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে র‍্যাবের যাঁরা গণহত্যায় জড়িত, তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি।

জুলাই মঞ্চের আরেক প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বর্তমানে প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না। যারা স্বৈরাচারের আমলে নিয়োগ পেয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত জুলাই মঞ্চের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

শহীদি মার্চে সংহতি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, বিগত সরকার র‍্যাবকে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সদস্য খারাপ নন। যাঁরা আওয়ামী লীগের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ কিংবা পদোন্নতি পেয়েছিলেন, তাঁরাই হাসিনাকে রক্ষা করতে ছাত্র–জনতার ওপর গুলি চালিয়েছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। পুরো বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না।

জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি অর্নব হুসেইনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে মুতাছিরুল ইসলাম, মুন্তাজুল ইসলাম, সুরাইয়া আন্তা, আব্দুল নুর তালুকদার, ফুহাদ হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনার সহযোগী আসামি সাবেক আইজিপি মামুন
  • জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন রাজনৈতিক নেতারা
  • ২ দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
  • এক মাস গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করবে ইনকিলাব মঞ্চ
  • জাতীয় পার্টিকে বর্জন করুন, রংপুরবাসীর উদ্দেশে রাশেদ খান
  • আমরা স্বদেশে ফিরতে চাই
  • সংবিধান ও বিচার বিভাগের সংস্কার ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয় : মাও. কাইয়ুম
  • গুম-খুনে জড়িত সদস্যদের বিচার চেয়ে র‍্যাব কার্যালয়ের সামনে ‘শহীদি মার্চ’ সদর দপ্তরের সাম
  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব, শুনলেন গণহত্যার বর্ণনা