ফরিদপুরে তরমুজবাহী ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২
Published: 16th, March 2025 GMT
ফরিদপুরের সদর উপজেলার শিবরামপুর এলাকায় ঢাকা-ফরিদপুর মহাসড়কে একটি তরমুজবাহী ট্রাক, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার সংঘর্ষে দুজন নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। রবিবার সকাল ৯টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী জানান, রাজবাড়ীগামী একটি তরমুজবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়, এরপর সেটি পাশের একটি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে মোটরসাইকেলের চালক নয়ন শেখ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
নয়ন শেখের পেছনে থাকা তার মা গুরুতর আহত হন এবং অটোরিকশাচালক শাজাহান শেখ মারাত্মকভাবে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। আহত নয়নের মাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি রাস্তার পাশে থাকা একটি গাছে ধাক্কা দেয়, ফলে গাছটি রাস্তার ওপর পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রুত গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই ট্রাকচালক পালিয়ে যান। পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাদা কাপড় বাটিকে রঙিন হয় যে গ্রামে
কমলপুর কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম। আয়তনে ছোট হলেও দেশজুড়ে কমলপুর গ্রামের বেশ পরিচিতি। কারণ, বাটিক পোশাকের গ্রাম বা বাটিকপল্লি হিসেবে নাম কুড়িয়েছে এটি। এখানকার বাসিন্দারা সারা বছরই বাহারি বাটিকের পোশাক তৈরি করেন। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে এই বাটিকপল্লিতে কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুণে।
কমলপুর গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ল বাটিকপল্লির কর্মব্যস্ততা। তৈরি হচ্ছে রংবেরঙের বাটিকের পোশাক। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে এ বছর নানা ধরনের নকশায় তৈরি করা হচ্ছে বাটিক শাড়ি ও থ্রি-পিস। সাদা কাপড়ের মধ্যে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আর ক্রেতার চাহিদার কথা ভেবে নিত্যনতুন নকশা ফুটিয়ে তুলছেন কারিগরেরা।
কমলপুর বাটিকপল্লির তিনটি কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, প্রথমে প্রিন্ট করার জন্য কাপড় কেটে প্রস্তুত করা হয়। এরপর মোম দিয়ে সেই কাপড়ে নানা ধরনের নকশা করেন কারিগরেরা। রঙের স্থায়িত্ব বাড়াতে রং করার পর কাপড় সেদ্ধ করে একটি দল। সেখান থেকে তুলে কাপড়ে মাড় দিচ্ছে আরেক দল। এরপর সেই কাপড় কয়েক দফা পানিতে ধুয়ে মাঠে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। শুকানোর পর কাপড় ইস্তিরি করে বাজারজাত করার জন্য তৈরি করা হয়।
বাটিকের সিল্ক ও সুতি শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট, লুঙ্গি, বেডশিট, গজ কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরির জন্য এই গ্রামে অন্তত ১০টি কারখানা আছে। শুরুটা কমলপুর থেকে হলেও এখন আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও বাটিকের পোশাক তৈরি হচ্ছে। তবে গুণে ও মানে এখনো সেরা বলে ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে কমলপুরের বাটিকের পণ্য।
কমলপুর বাটিকপল্লির একটি কারখানার মালিক মো. রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের দিকে আমার চাচা লাল মিয়া মেম্বার এই গ্রামে বাটিক শিল্পের যাত্রা শুরু করেন। তাঁর হাত ধরেই বাটিক কুমিল্লার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। চাচা ভারতের কলকাতা ও ত্রিপুরা রাজ্যে কাপড়ে মোম ও রং দিয়ে ব্লক তৈরির কাজ শেখেন। এরপর গ্রামে এসে তিনি বাটিক তৈরির কাজ ছোট আকারে শুরু করেন। কালের পরিক্রমায় বাটিকের চাহিদা বাড়তেই থাকে। বিশ্বের অনেক দেশে যাচ্ছে আমাদের গ্রামের বাটিকের পোশাক। আমাদের তৈরি এই বাটিকের পোশাক গুণে ও মানে অনন্য এবং পরতেও আরামদায়ক।’
বাটিক করার জন্য প্রথমে সাদা কাপড় সংগ্রহ করা হয়