কুষ্টিয়ায় কুমারখালীতে রফিকুল (২৫) ও শাবনুর (২৩) নামের এক দম্পতির ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে কুমারখালী শহর-যদুবয়রা সড়কের গড়াই নদীর ওপর নির্মিত শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।

হামলাকারীরা শাবনুরকে আঘাত না করলেও তার স্বামীর মাথা ও দুই হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন রফিকুল।

আহত রফিকুল প্রামাণিক উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর ভবানী গ্রামের বৌ বাজার এলাকার তাবু প্রামাণিকের ছেলে। তিনি বৌ বাজার এলাকায় নরসুন্দরের কাজ করেন।

আজ রোববার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডে বসে আছেন নরসুন্দর রফিকুল। তার মাথায় ও দুই হাতে সাদা ব্যান্ডেস। পাশে তার স্ত্রী শাবনুর, ভাবি কু্লসুম, দুলাভাই ইজারতসহ অন্যরা।

রফিকুল বলেন, ‘শনিবার রাতে স্ত্রী শাবনুরকে নিয়ে গড়াই সেতুতে ফুসকা খেতে গিয়েছিলাম। পরে আইসক্রিম কিনেছিলাম। সেতুর বাতিগুলো অকেজো থাকায় অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। হঠাৎ একজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার সমস্যা কি? এইডা কিডা?’। আমি বলি, আপনারা যা ভাবতেছেন তা না। এটা আমার বউ। এরপর আরও চারজন আসেন। একজনের হাতে চাইনিজ কুড়াল এবং অপর তিনজনের হাতে হকিস্টিক। তারা কোনো কথা না বলেই মাথায় ও হাতে কোপাতে থাকে এবং হকিস্টিক দিয়ে মারধর করে দ্রুত চলে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি হামলাকারীদের চিনি না। কোনোদিন কথাও হয়নি। কেন হামলা করেছে, তা-ও জানি না। আমি থানায় মামলা করব।’

রফিকুলের স্ত্রী শাবনুর বলেন, ‘আমাদের দু’জনকে স্বামী-স্ত্রী না মনে করে তারা কয়েকজন আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। কেন এবং কারা আমার স্বামীকে হামলা করেছে, বলতে পারছি না।’

তবে রফিকুলের বড় ভাবি কুলসুম খাতুন ও দুলাভাই ইজারত আলী অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ছয় বছর আগে শাবনুরে সঙ্গে রফিকুলের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ছয় বছরের এক ছেলে রয়েছে। তবুও বছরখানেক আগে এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ায় শাবনুর।

তারা জানান, শনিবার রাতে ঘুরে বেড়ানোর নাম করে রফিকুলকে গড়াই সেতুতে নিয়ে যান শাবনুর। আর পরকীয়ার প্রেমিক ও তার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে। তবে পরকীয়া প্রেমিকের পরিচয় দিতে পারেননি তারা।

তবে পরকীয়া প্রেম নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রফিকুল ও শাবনুর।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সোলায়মান শেখ বলেন, রাতে গড়াই সেতুর ওপর এক দম্পতির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়ে স্বামী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ বন র পরক য় র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের

সবে সন্ধ্যা নেমেছে শহরের বুকে। খুলনা নগরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ছোট একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। অর্ডার দিয়ে কেউ টুলে বসে আছেন, কেউ আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। বিক্রেতা দুজনের চার হাত যেন চলছে সমানতালে। একজন ছোট ছোট ফুচকা বানাচ্ছেন, তো আরেকজন ভেলপুরির প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার কখনো একজন পেঁয়াজ–শসা কুচি করে নিচ্ছেন আর আরেকজন বিল রাখা বা টিস্যু এগিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত।

নগরের আহসান আহমেদ রোডের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের একটি ছোট ফুচকা ও ভেলপুরির ভ্রাম্যমাণ দোকানের চিত্র এটি। দোকানের নামটাও বেশ অন্য রকম। ‘ধৈর্য-সহ্য ছোট ফুচকা ও ভেলপুরি স্টোর’। দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এই দোকানের ছোট ফুচকা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

গোলাম রসুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামে। সাত ভাই–বোনের সংসারে রসুলের বড় ভাই ভাজাপোড়া খাবারের ব্যবসা করতেন। বুঝতে শেখার পর থেকেই তাই এতেই হাতেখড়ি হয় রসুলের। তবে তাতে ঠিক পোষাচ্ছিল না। তাই বছর ৩০ আগে কিছু করার আশায় খুলনা শহরে আসেন গোলাম রসুল। তবে এই শহরে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। নানা টানাপোড়েনে কখনো খুলনা, কখনো মোল্লাহাট, আবার কখনো ঢাকায় কেটেছে তাঁর সময়। ৪৮ বছরের এই জীবনে নানা রকম কাজ করেছেন। ব্যবসাও করেছেন অনেক কিছুর। তবে সেসব ব্যবসায় কেবল লোকসানই হয়েছে তাঁর। অবশেষে ‘ছোট ফুচকায়’ তাঁর কপাল খুলেছে।

কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই কথা হয় গোলাম রসুলের সঙ্গে। রসুল বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইছি। নানা রকম ব্যবসাও করছি। গ্রাম থেকে কিনে মাওয়া ফেরিঘাট আর ঢাকায় ডাব বেচছি। ওই ব্যবসায় অনেক মার খাইছি। মানুষ টাকা দেয় নাই। এখনো ৬০-৭০ হাজার টাকা পাব। ডাব ব্যবসায় মার খেয়ে দুই বছর আগে আবারও খুলনা শহরে আসি কিছু করা যায় কী না সেই জন্যি।’ খুলনা এসে আবারও রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে থাকেন রসুল একই সঙ্গে মাথায় ঘুরতে থাকে চিন্তা। এরপর শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। শীত শেষ হতে আবারও অনিশ্চয়তা। এখন কী হবে!

গোলাম রসুল বলেন, ‘গরম চলে আসল, কী করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। পরে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট থেকে কিনে ভেলপুরি বেচছি। কিন্তু এতে হচ্ছিল না। এরপর চিন্তা করলাম আনকমন কিছু করা যায় কি না। গত বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে শুরু করি ছোট ফুচকা বিক্রি।’

দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার জন্য সমব্যথী নারী
  • তৃণমূলের একজন কর্মীকেও হারাতে দেয়া যাবে না : রিয়াদ চৌধুরী
  • শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
  • কক্সবাজারের মেয়েটি
  • নড়াইলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত
  • আত্মপ্রকাশ করল নতুন দল গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি
  • ওল্ড ইজ গোল্ড, আবেগতাড়িত ভক্ত-অনুরাগীরা
  • আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের পর মা-বাবা জানলেন ভ্রূণটি অন্যের ছিল
  • বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান
  • জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের