শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ। তিনি বলেছেন, অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বর্তমানে আগের চেয়েও বেশি দুর্নীতি করছেন, তাঁদের গণধোলাই দিয়ে ঠিক করতে হবে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের পটিয়ায় দলের এক ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। পটিয়ার এ এস রাহাত আলী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এলডিপির পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা শাখা।

অনুষ্ঠানে অলি আহমদ বলেন, ‘এই সরকার যেদিন শপথ গ্রহণ করবে, সেদিন বলেছিলাম, ১৮-এর নির্বাচনে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা, যেসব ইউএনও, যেসব ডিসি, যেসব এসপি কর্তব্যরত ছিলেন, এ দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছে, মুনাফেকি করেছে, তাদের ডিসমিস করতে হবে। এখনো পর্যন্ত কিন্তু ড.

ইউনূস সাহেব সেটি করতে পারেননি। সাহসের অভাব, ভয় পায়; ভয় পেলে দেশ চলবে না, দেশ চালাতে পারবেন না, সাহসের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে অলি আহমদ বলেন, ‘যে কদিন বেঁচে থাকেন, একজন সিংহের মতো বেঁচে থাকেন। দেশকে বাঁচান, দেশকে রক্ষা করেন। বেইমান যারা শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেছে, তাদের কাছ থেকেও আমাদের দেশকে রক্ষা করতে হবে।’

সরকারি কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গ টেনে অলি আহমদ বলেন, ‘এখন অনেক কর্মকর্তা আছে, যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, আগের চেয়েও বেশি দুর্নীতি করছে। তাদের পিটুনি দিতে হবে। জনগণ একত্র হয়ে তাদের ধোলাই দিতে হবে। ইউনূস সাহেব যখন পারছেন না, গণধোলাই দিয়ে এদের ঠিক করতে হবে। হাড্ডি-মাংস-নলা ভাঙচুর করতে হবে। এ সমাজকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’

উপজেলা এলডিপির সভাপতি মুহাম্মদ মনছুর আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন এলডিপির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি এম এয়াকুব আলী। আবদুল কুদ্দুস ও আইযুব আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, চন্দনাইশ উপজেলার সভাপতি মোতাহের মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আকতারুল আলম, পৌরসভার সভাপতি আইনুল কবির, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আহমদ নবী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এম এ জাফর প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত অন ষ ঠ ন এলড প

এছাড়াও পড়ুন:

‘গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে’

গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠগুলোর সহাবস্থান লক্ষ্য করছি। এই রাজনৈতিক সহনশীলতার সংস্কৃতি জারি রাখতে হবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) ইফতার মাহফিল ও ‘গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান এ কথাগুলো বলেন।

শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডুজার সদস্যদের জুলাই আন্দোলনে যে নির্ভীক ভূমিকা ছিল তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি। তিনি আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের জন্য ডুজার সদস্যরাসহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সামিতির আয়োজনে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে যে সহাবস্থান ও সহনশীলতার পরিচয় পেয়েছি, সেটি ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। উপস্থিত ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে আমি সে সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।’

উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডুজা সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে ছাত্রসংগঠনগুলোর যে একতা আমরা দেখেছি, সেটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ভয় ছিল, সেটি দূর করতে আপনাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন। যেকোনো সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়িয়ে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে।

সভায় ছাত্রনেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, বাংলাদেশ ইমলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাগীব নাঈম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এবং স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ।

বক্তব্যে ছাত্রনেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিফতাহ সিদ্দিকীর ইফতার মাহফিলে সিলেটে সুধীজনদের মিলনমেলা
  • এবার মুক্তাদীর-আরিফুল–সমর্থিত নেতা-কর্মীরা এক কাতারে
  • দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের গণধোলাই দিয়ে প্রশাসন থেকে তাড়াতে হবে: কর্নেল অলি
  • আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে এক দিনের ছুটি ঘোষণা
  • সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোববার ছুটি
  • অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাল ছুটি
  • ‘গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে’
  • ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না: গোলাম পরওয়ার
  • ‘পাকিস্তান’ থেকে ‘বাংলাদেশ’ আবুল মনসুর আহমদের বিচার