টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটকে বিদায় জানিয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তবে এটিই যে চূড়ান্ত নয়, তা জানিয়ে রেখেছেন তিনি নিজেই। ফেরার সম্ভাবনা আছে, তবে তাতে রয়েছে একটি বিশেষ শর্ত—ভারতকে পৌঁছাতে হবে অলিম্পিকের ফাইনালে!

২০২৮ সালে ১২৮ বছর পর অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট, তাও আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে কোহলি বলেন, ‘যদি ভারত অলিম্পিক ফাইনালে উঠে, তাহলে সম্ভবত আমি অবসর ভেঙে একটি ম্যাচের জন্য মাঠে ফিরতে পারি। গলায় অলিম্পিকের পদক ঝুলিয়ে নেওয়ার অনুভূতিই হবে অন্যরকম।’

কোহলি মনে করেন, ক্রিকেটের জন্য অলিম্পিকস একটি বড় সুযোগ। তিনি আরও বলেন, ‘অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি ভারতের জন্য দারুণ ব্যাপার। যদি পদক জিততে পারি, সেটা হবে অসাধারণ সাফল্য। এর পেছনে আইপিএলের বড় অবদান রয়েছে। এখন আমরা বিশ্বমঞ্চে আরও বড়ভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারব। তরুণদের জন্য এটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম।’

অবসরের পর জীবন কেমন হবে—এই প্রশ্নে কোহলি বলেন, ‘চিন্তার কিছু নেই। আমি কোনো নাটকীয় ঘোষণা দেব না। এখনো খেলা উপভোগ করছি। জয় পাওয়ার তাড়না, মাঠের উত্তেজনা, সবকিছুই এখনও রোমাঞ্চ জাগায়। যতদিন এই আবেগ থাকবে, ততদিন খেলে যাব। এখন আর কোনো রেকর্ড বা অর্জনের জন্য খেলি না, খেলি ভালোবাসা থেকে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র ট ক হল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠের বিদায় কেন ফেসবুকে

‘সব কিছু নিখুঁতভাবে শেষ হয় না। তার পরও একটা সময় শেষ বলে সামনে এগিয়ে যেতে হয়’– বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে দেওয়া অবসরের ঘোষণায় এই দুটি লাইনে মাহমুদউল্লাহর আক্ষেপটা টের পাওয়া যায়।

কী নিয়ে আক্ষেপ, সেটা সবার জানা। আর মাহমুদউল্লাহ একা নন; মাশরাফি মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম– বাংলাদেশের ক্রিকেটের সোনালি প্রজন্ম হিসেবে খ্যাত এই পাঁচজনের একই আক্ষেপ। মাঠের বদলে তাদের অধিকাংশের বিদায় নিতে হয়েছে ফেসবুক থেকে! যাদের হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সিংহভাগ অর্জন, তাদের এমন আক্ষেপভরা বিদায় কেন? দায়টাই বা কার?

মাশরাফি মুর্তজাকে দিয়ে এই পঞ্চপাণ্ডবের বিদায়ের সূচনা। ১২ মার্চ মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। তবে মুশফিকুর রহিম এখনও টেস্ট থেকে অবসর নেননি। মাশরাফি অবশ্য অবসরের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি। ২০০৯ সালে উইন্ডিজ সফরে চোট পাওয়ার পর থেকে তিনি আর টেস্ট খেলেননি। 

২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে অভিমান করেই টি২০ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়েন। এরপরই গুঞ্জন ওঠে মিরপুরে বিদায়ী ম্যাচ খেলতে চান মাশরাফি। বিসিবি থেকেও আয়োজনের কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কী এক কারণে সেই ম্যাচ হয়নি।  

সাকিব আল হাসান দেশের মাটি থেকে অবসর নেওয়া ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট শেষে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, শেষ টি২০ খেলে ফেলেছেন, দেশের মাটিতে টেস্ট থেকে অবসর নিতে চান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন। কিন্তু দুটোর একটাও হয়নি। 

২০২৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার জেরে গত আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আর দেশে ফিরতে পারেননি। তাঁর নামে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে। তাই সাকিবের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়। 

তামিম ইকবালের অবসর নিয়ে নাটক হয়েছে সবচেয়ে বেশি। জাতীয় দলে খেলবেন নাকি অবসর নেবেন, এ নিয়ে প্রায় দুই বছর নানা আলোচনার পর গত ১০ জানুয়ারি ফেসবুকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। ফলে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেটি জাতীয় দলের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচ হয়ে রইল। 
মুশফিকুর রহিম টি২০ বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের জেরে সমালোচনার শিকার হলে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে কুড়ি ওভারের ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাজ পারফরম্যান্সের কারণে সমালোচনা হলে ওয়ানডে থেকে তিনি অবসরের ঘোষণা দেন ৫ মার্চ। 

গত বুধবার মাহমুদউল্লাহর অবসরের পর একটা বিষয়ে জোরেশোরেই আলোচনা শুরু হয়েছে। কেন তারা মাঠ থেকে অবসর নিতে পারলেন না? মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার সংস্কৃতি কী দেখা যাবে? 

এ বিষয়ে গতকাল কথা বলেছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘ওদের (মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ) ক্যারিয়ারটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য উজ্জ্বল ব্যাপার। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় নিয়ে এসেছিল ওরা। আমি মনে করি মাঠ থেকে অবসর ওদের প্রাপ্য। কেন ওরা মাঠ থেকে অবসর নিল না, সেটা ওরাই ভালো বলতে পারবে।’ 

বিষয়টা নিয়ে আফসোস করেছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারও, ‘মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারলে অবশ্যই ভালো হতো। সেটা তাদের প্রাপ্যও। বাংলাদেশ দলের জন্য যা করেছে, মাঠ থেকে নিতে পারলে খুব ভালো হতো। ভরা স্টেডিয়াম থেকে নিতে পারলে বিদায়টা প্রকৃত অর্থেই সুন্দর হতো।’ 

মাহমুদউল্লাহর বিদায় নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই বিষাদের একটি মুহূর্ত। প্রায় দুই দশক জাতীয় দলের অন্যতম প্রধান ভরসা ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। খেলার প্রতি তাঁর নিবেদন ও পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা মানদণ্ড তৈরি করেছে।’ তবে মাঠ থেকে বিদায় বিষয়ে কিছু বলেননি বিসিবি সভাপতি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএসইসি চালাতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা চান রাশেদ মাকসুদ
  • ‘হতাশা তাড়িয়ে নতুন গতির সঞ্চার’
  • ‘একটা ট্রফি জিততে পারলে আমাদের প্রজন্মের জন্য ভালো হবে’
  • পঞ্চপাণ্ডবের উত্তরসূরি হিসেবে অবদান রাখতে চান লিটন
  • ‘দলে যারা আছে তারা যোগ্য, মানিয়ে নিতে সময় লাগতে পারে’
  • মাঠের বিদায় কেন ফেসবুকে