ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে অনেকটা নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন পেপ গার্দিওলা। চলমান মৌসুমটি এই স্প্যানিশ কোচের নবম মৌসুম ইপিলে। আগের ৮ মৌসুমের মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটিকে ত্তিনি ৬টি শিরোপা জিতেছেন। অথচ চলমান মৌসুমে গার্দিওলা আর তার দল ম্যানসিটির অবস্থা এতটাই করুণ যে, বাকি ম্যাচগুলো থেকে সর্বোচ্চ পয়েন্ট না পেলে, শেষ চারে থেকে মৌসুমে শেষ করা কঠিন হয়ে যাবে।

শনিবার (১৫ মার্চ, ২০২৫) ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ব্রাইটনের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে ম্যানসিটি। ২৯ ম্যাচ শেষে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে তারা। এক ম্যাচ কম খেলা নিউক্যাসল ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে।

ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১১তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। দশ মিনিট পর পেরভিস এস্তুপিনান সমতায় ফেরান সফরকারীদের।

আরো পড়ুন:

ম্যানসিটিতে ‘নতুন মেসি’ নিয়ে আসলেন গার্দিওলা 

হেরে তরুণ ফুটবলার কেনার কথা জানালেন গার্দিওলা

ম্যাচের ৩৯ মিনিটে আবারও সিটিকে এগিয়ে দেন মিশরীয় স্ট্রাইকার ওমর মারমুশ। তবে বিরতির পর খেলা শুরু হলে ৩ মিনিটের মাথায় সিটি ডিফেন্ডার আবদুকোদির খুসানভের আত্মঘাতী গোলের কারণে দুই দলকে এক পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। যা ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ব্রাইটনের প্রথম পয়েন্ট।

এই ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে হালান্ড একটা মাইলফক ছুঁয়েছেন। এই ২৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ১০০ প্রিমিয়ার লিগ গোলে (গোল ও অ্যাসিস্ট মিলিয়ে) অবদান রেখে ফেলেছেন ৯৪ ম্যাচে। যা আগে কখনোই কেউ করেনি। আগের রেকর্ডটি ছিল ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স, নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকার অ্যালান শিয়েরারের। তার লেগেছিল ১০০ ম্যাচ।

এই মৌসুমে সিটির ম্যাচ বাকি আছে আর ৯টি। পরবর্তী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের স্থান পেতে হলে কঠিন সব মহারণ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। গার্দিওলা এই ব্যাপারে বলেন, “আমি মনে করি, শেষ পর্যন্ত ৯টি ম্যাচই জিততে হবে, ৯টি ম্যাচই ফাইনাল।”

নিজেকে ফুটবল মাস্টার দাবি করে এই চ্যালেঞ্জ পারি দিতে পারবেন বলে বিশ্বাস গার্দিওলার, “আমি সবসময় আত্মবিশ্বাসী। আমি একজন মাস্টার। আমি সবকিছুর মধ্যে ইতিবাচকতা খুঁজে পাই। আমি জানি এটি কঠিন হবে।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রেমিট্যান্সের নামে ৭৩০ কোটি টাকা এনেছেন এক ব্যক্তি

প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে করমুক্ত সুবিধার আইনি সুযোগ নিয়ে এক ব্যক্তি ৭৩০ কোটি টাকা দেশে এনেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি। ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় ও ঘটনার সময় উল্লেখ করেননি এনবিআর চেয়ারম্যান। 
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে কর কর্মকর্তাদের ‘অর্থনীতি-আলাপন: রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীর সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মহিদুল হাসান।
প্রত্যক্ষ কর বাড়লেও অর্থনৈতিক বৈষম্য না কমে বাড়ছে কেন– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, প্রবাসে যারা কঠোর পরিশ্রম করেন, বিদেশে টাকা উপার্জন করে ব্যাংকিং চ্যানেলে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। আইন অনুসারে তাদের উপার্জিত অর্থ আয়করমুক্ত। এটা করা হয়েছে প্রবাসী কর্মীদের উৎসাহিত করতে সবাই শুনে আশ্চার্য হবেন, এমন একজন করদাতা পাওয়া গেছে, যিনি ৭৩০ কোটি টাকা নিয়ে এসেছেন এবং ওই ব্যক্তি বলছেন, এটা ওয়েজ আর্নার্স ও করমুক্ত। 

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বৈষম্য না কমে  উল্টো দিকে হাঁটছে, তার কারণ হচ্ছে এসব অনিয়ম। আগে এগুলো হয় দেখিনি অথবা বুঝিনি। অথবা দেখেও না দেখার ভান করছি। তাদের সুযোগ দিচ্ছি। এগুলোই বড় সমস্যা।’ ওই ব্যক্তির নাম জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘নাম না বলাই ভালো। অ্যাকশন নেওয়ার পর আপনারা জানবেন।’ 
সভায় ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা করদাতাদের ভয়ভীতি দূর করা, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় এবং আমদানি-রপ্তানিসহ কর-সংক্রান্ত সব হালনাগাদ তথ্য নিয়মিত অনলাইনে প্রকাশের অনুরোধ করেন।

এর আগে পুঁজিবাবাজর, বীমা ও আর্থিক খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপত্বি করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। সভায় শেয়ার বিক্রি করে বছরে ৫০ লাখ টাকার বেশি মুনাফা হলে তার ওপর যে ১৫ শতাংশ হারে মূলধনি কর দিতে হয়, তা মওকুফ চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। মন্দা বাজারকে টেনে তুলতে এই সুবিধা চান ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
এ প্রস্তাবে সায় না দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এখন পর্যন্ত অনেক কর সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বাজারে দুর্বল কোম্পানির তালিকাভুক্তি আস্থাহীনতার মূল কারণ। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এসব দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে পুঁজি হারিয়েছেন। ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত কোনো কর সুবিধা কাজে আসবে না।

পুঁজিবাজারের দুর্বলতা দূর করতে সুশাসনের ঘাটতি পূরণ করার পরামর্শ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি অর্থনীতির অন্যতম এই ভিত ধ্বংসের জন্য ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকেও (আইসিবিকে) দায়ী করেন। 
আলোচনায় বীমা খাতকে শক্তিশালী করতে নীতিসহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। সংগঠনটির সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘এ খাত অবহেলিত– এটার জন্য আমরা যেমন দায়ী, তেমনি সরকারও দায়ী।’ 
এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বীমা খাতে কোনো সুনাম নেই। এ খাতে গভর্ন্যান্সের ‘জি’ও নেই। বীমা কোম্পানি মনে করে, গ্রাহকের টাকাটা তাদের। মানুষের টাকা এনে তা মেয়াদ পূর্তিতে ফেরত দিতে হবে, এটা বীমা কোম্পানিগুলো ভুলে যায়।
এ ছাড়া অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) তাদের বাজেট প্রস্তাবে ভ্যাট সফটওয়্যারের বাস্তবায়ন, ঋণ অ্যাকাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার, মূসক নিরীক্ষা কার্যক্রম সমাপ্তির সময় সুনির্দিষ্ট করার প্রস্তাব দিয়েছে। আগামী অর্থবছর থেকে এলসি বা ঋণপত্র খোলার ওপর আবগারি শুল্ক কমানোর আশ্বাস দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ