ভোলাহাটে চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ
Published: 16th, March 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় ভিজিএফের চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের জেরে রবিবার সকাল থেকে চাল বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে, ফলে সাধারণ নিম্নবিত্ত জনগণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে জানা যায়, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে গোহালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম গ্রুপের কর্মী মাসুদ রানা ইউপি সদস্য নূর হোসেনের কাছে ভিজিএফ কার্ড দাবি করেন। নূর হোসেন জানান, তার কাছে সীমিতসংখ্যক কার্ড রয়েছে, যা দিয়েই তার ওয়ার্ডের মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। এই বিষয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মাসুদ রানা ও তার ভাই মইনুর নূর হোসেনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিএনপির অপর গ্রুপের সদস্যরা এসে মাসুদ রানার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোহালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.
অন্যদিকে, হামলার শিকার ইউপি সদস্য নূর হোসেন বলেন, তিনি কার্ডের সংখ্যা কম থাকায় মাসুদ রানাকে কার্ড দিতে পারেননি, তবে তাকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাসুদ রানা ও তার ভাই তার ওপর হামলা চালান, যা পরে বড় আকারের সংঘর্ষে রূপ নেয়।
অপরদিকে, অভিযুক্ত মাসুদ রানা দাবি করেন, তিনি কার্ড চেয়েছিলেন, কিন্তু তা পাননি। তবে তিনি কোনো মারধরের ঘটনায় জড়িত নন, বরং ধাক্কাধাক্কি হয়েছে মাত্র।
ভোলাহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইয়াজদানি জর্জ বলেন, নূর হোসেন বিএনপির একজন কর্মী হলেও তিনি আমার অনুসারী নন। তাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি, তবে এই ধরনের ঘটনা দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। যারা এতে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ ভোক্তারা চাল না পেয়ে ফিরে গেছেন, যা তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং চাল বিতরণ পুনরায় শুরু করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ব এনপ চ ল ব তরণ স ঘর ষ র ব এনপ র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
দলকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা খুলনার তিন নেতার
জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে রওশন এরশাদপন্থী জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন খুলনার তিন নেতা। আজ শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা ওই ঘোষণা দেন।
এই তিন নেতা হলেন, জাতীয় পার্টির (রওশন) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মোল্যা শওকত হোসেন ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মাসুদুর রহমান। তাঁরা জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সালে সরকার পতনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি ক্ষমতাচ্যুত হয়। আমরা আশা করেছিলাম অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণের পাশে থেকে দল রাজনীতি করে যাবে। কিন্তু দেখলাম জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা ১৯৯০ সালের পর থেকে নিজস্ব রাজনীতিতে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং প্রায় সময়ই ক্ষমতাসীনদের ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। মূলত ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর জাতীয় পার্টি কার্যকর বিরোধী দল বা ক্ষমতাসীন দল কোনোটাই হতে পারেনি। শীর্ষ নেতারা তাঁদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারকে দীর্ঘতর করতে জাতীয় পার্টি অনুঘটকের কাজ করেছে, যাতে তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের সায় ছিল না। সর্বশেষ দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে অনুগত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতীয় পার্টি এই দায় এড়াতে পারে না।’
জাতীয় পার্টির ওই নেতা বলেন, ‘আমরা চাই দেশে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার জাতিকে বড় ধরনের সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে। আমরা রাষ্ট্রের পূর্ণ সংস্কার চাই। যাতে করে ভবিষ্যতে জনগণের দোহাই দিয়ে আর কোনো স্বৈরশাসক জাতির কাঁধে চেপে বসতে না পারে।’