খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে টাকা-স্বর্ণালংকার লুট, পালানোর সময় দুজনকে গণপিটুনি
Published: 16th, March 2025 GMT
মাদারীপুরে অচেতন করে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুজনকে পিটুনি দিয়েছেন লোকজন। আজ রোববার ভোরে সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ পিটুনিতে আহত দুজনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় অসুস্থ অবস্থায় গৃহকর্তা ও তাঁর স্ত্রীকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে সদর উপজেলার পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামের গোলাম রহমান ফকিরের বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজে আসেন কয়েকজন শ্রমিক। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ইফতারির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন তাঁরা। খাবার খেয়ে বাড়ির লোকজন অচেতন হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ ভোরে ঘর থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। সাহ্রি শেষে নামাজ পড়তে বের হয়ে প্রতিবেশীরা গোলাম রহমানের ফকিরের ঘরের দরজা খোলা দেখতে পান। তাঁরা ভেতরে ঢুকে বাড়ির লোকজনকে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিকদের দেখতে না পেয়ে তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে বের হন। পাশের হাজমকান্দি এলাকায় ইজিবাইকে রাজমিস্ত্রি ও এক শ্রমিককে আটক করে পিটুনি দেন তাঁরা।
পিটুনিতে আহত দুজন হলেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা হাসানপুর গ্রামের আক্কাস খাঁর ছেলে আমিন খাঁ (২৫) ও দিঘলিয়া এলাকার রুবেল মিয়াকে (৩৫)। তাঁদের কাছ থেকে লুট হওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করে পুলিশ। আহত দুজন এবং গৃহকর্তা ও তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি করা হয় মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে।
গোলাম রহমান ফকিরের মেয়ে তানিয়া আফরোজ বলেন, ‘এরা মুখোশধারী ডাকাত। এদের কঠিন বিচার হওয়া উচিত। যারা ছদ্মবেশে এই জঘন্য কাজটি করেছে, তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।’
মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ভোরে গণপিটুনিতে আহত দুজনসহ চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সবাই শঙ্কামুক্ত। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদুর রহমান বলেন, লুট হওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। আটক দুজন পুলিশি হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি।। ঘটনাস্থল থেকে ইরান নামে আরও একজন পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র আহত দ রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ছায়ানটের অনুষ্ঠানে গাজায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা
রাজধানীর রমনা বটমূলে শেষ হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪৩২-এর অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আজ সোমবার বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শেষের আগমুহূর্তে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
নীরবতা পালনের আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে, গাজায় ভয়াবহ মানবতার বিপর্যয় এবং গণহত্যায়, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনবাসী আপন ভূমি রক্ষায় যে সংগ্রাম করছেন, তার প্রতি আমরা সংহতি জানাই। ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে সবাইকে এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ করছি।’
এর আগে সূর্যোদয়ের পর পর শুরু হয় বর্ষবরণের ছায়ানটের অনুষ্ঠান। এবারে অনুষ্ঠানের মূলভাব ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। ছায়ানটের ৫৮তম এই অনুষ্ঠান সাজানো হয় নতুন আলো, প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসার গান ও আত্মবোধনের জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।
বাংলা বর্ষবরণের এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।
দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে গত তিন মাস ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে চলে গানের মহড়া। আর ৮ এপ্রিল রমনার বটমূলে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়।