পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী বাবা ও চার বছরের ছেলে নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের পাটুল বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলেই শিশু জুনায়েদ আহমেদের মৃত্যু হয়। বাবা সুলাইমান খাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

সুলাইমান উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কর্মী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, ছেলেকে নিয়ে সকালে সুলাইমান মোটরসাইকেলে পার্শ্ববর্তী খানমরিচ ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে দিনভর অবস্থান করার পর বিকেলে তিনি বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে দিলপাশার ইউনিয়নের পাটুল বাজারে পৌঁছালে ভাঙ্গুড়া থেকে চণ্ডীপুরগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে মোটরসাইকেলের। এতে শিশু জুনায়েদ ছিটকে পড়ে ট্রাকের চাকার পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুরুতর আহত হন সুলাইমান। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তির পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে টাঙ্গাইলে পৌঁছানোর পর সুলাইমান মারা যান।

সুলাইমানের চাচাতো ভাই রমজান আলী বলেন, সুলাইমান বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছিলেন। ঘটনার পর থেকে তাঁর জ্ঞান ছিল না। ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ট্রাকটিকে জব্দ করা হয়েছে। তবে ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়িতে ফিরল তার নিথর দেহ

ধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত শিশুটির নিথর দেহ মাগুরায় তার গ্রামের বাড়িতে ফিরেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে মাগুরা স্টেডিয়ামে পৌঁছে তার মরদেহ।

এর আগে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে রওনা হয়। স্টেডিয়াম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তাকে নেওয়া হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে। আজ রাতেই নোমানী ময়দানে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ সময় সঙ্গে ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠন হাসনাত আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, মাগুরা জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাগুরা স্টেডিয়ামে অবতরণ করে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারটি। এ সময় শিশুটির মা ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুর মা বলেন, ‘আমার মনিরে বেলেট (ব্লেড) দিয়া কেটে কেটে হত্যা করতে চেয়েছিল ওরা। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’

এর আগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটি।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) চিকিৎসা চলছিল শিশুটির। গতকাল বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দু‘বার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির। 

আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। 

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধীদের ফাঁসি চাইলেন শিশুটির বোন
  • কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিশুটির মা, অপরাধীদের ফাঁসি চাইলেন বোন
  • আটদিনের লড়াইয়ে সঙ্গী ছিল পুরো দেশ, চোখের জলে বিদায়
  • শিশুটির দাফন সম্পন্ন, অভিযুক্তের বাড়িতে ক্ষুব্ধ জনতার আগুন
  • শিশুটির প্রথম জানাজায় হাজারো মানুষ
  • বাড়িতে ফিরল তার নিথর দেহ