প্রায় ৫০ বছর আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়েছিলাম। এ থেকেই আমার বয়স সম্পর্কে আপনারা খানিকটা আন্দাজ করতে পারবেন। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প দিয়েই একটু শুরু করি।

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত মাত্র একবার বাংলায় সমাবর্তন বক্তৃতা দেওয়া হয়। বাকিগুলো ছিল ইংরেজিতে। ১৯৭০ সালে তৎকালীন বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী প্রথমবার তাঁর সমাবর্তন বক্তৃতা বাংলায় দেন। এই দুঃখের কথা বলার একটা কারণ আছে। মিস নাদিয়া অনোয়ারকে (এআইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য) ধন্যবাদ, তিনি আমাকে বাংলায় বলার আদেশ দিয়েছেন বলাই ভালো। নাদিয়া হয়তো মনে করেছেন, তাহলেই আমি হয়তো খানিকটা বলতে পারব। আমার ইংরেজির জ্ঞান সম্পর্কে তাঁর হয়তো সন্দেহ আছে। (হাসি)

কিন্তু সমস্যা হলো, আমি কোনো দিন সমাবর্তন বক্তৃতা করিনি। কোনো সমাবর্তনে হাজিরও ছিলাম না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ঢাবিতে কোনো সমাবর্তন হয়নি। আমি ছাত্র হিসেবে তখন বিদেশে ছিলাম। তাই নিজের ডিগ্রি তখন গ্রহণ করতে পারিনি।

যাঁরা উপস্থিত থেকে হাতে ডিগ্রি নিলেন, তাঁরা সৌভাগ্যবান। আমি মার্কিন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলাম, তাই আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেখে আমার কৌতূহল হয়। আমি যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিউ স্কুল ফর সোশ্যাল রিসার্চ’–এ উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার সময় থিসিস ডিফেন্স দেওয়ার চার দিন পরই দেশে চলে আসি। ফলে সেখানেও আমি ডিগ্রি গ্রহণের অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারিনি। সে জন্য আপনাদের আন্তরিক মোবারকবাদ।

আরও পড়ুননর্থ সাউথের উপাচার্য: সবাইকে একই স্কেলে মাপার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে২৭ অক্টোবর ২০২৪

কায়রোতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব কায়রো, বৈরুতে আছে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত। এগুলো ঊনবিংশ শতাব্দীতে তৈরি হয়েছিল আরব দেশের পরিবেশে আমেরিকার জাগতিক শিক্ষা, ইহলৌকিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য। সেটা দিয়ে আরব জাতির অনেক উপকার তাঁরা করেছেন।

তবে মার্কিন দেশ আর বাংলাদেশের সমাজ যে এক সমাজ নয়, তাদের পার্থক্য যে যোজন যোজন দূরত্বব্যাপী, মহাসাগর পরিমাণ, সেটা আপনারা সবাই জানেন। তাদের সঙ্গে তুলনা করে সময় নষ্ট করব না।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ক

এছাড়াও পড়ুন:

জীবন আমাদের ডাকছে দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য: সলিমুল্লাহ খান

প্রায় ৫০ বছর আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়েছিলাম। এ থেকেই আমার বয়স সম্পর্কে আপনারা খানিকটা আন্দাজ করতে পারবেন। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প দিয়েই একটু শুরু করি।

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত মাত্র একবার বাংলায় সমাবর্তন বক্তৃতা দেওয়া হয়। বাকিগুলো ছিল ইংরেজিতে। ১৯৭০ সালে তৎকালীন বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী প্রথমবার তাঁর সমাবর্তন বক্তৃতা বাংলায় দেন। এই দুঃখের কথা বলার একটা কারণ আছে। মিস নাদিয়া অনোয়ারকে (এআইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য) ধন্যবাদ, তিনি আমাকে বাংলায় বলার আদেশ দিয়েছেন বলাই ভালো। নাদিয়া হয়তো মনে করেছেন, তাহলেই আমি হয়তো খানিকটা বলতে পারব। আমার ইংরেজির জ্ঞান সম্পর্কে তাঁর হয়তো সন্দেহ আছে। (হাসি)

কিন্তু সমস্যা হলো, আমি কোনো দিন সমাবর্তন বক্তৃতা করিনি। কোনো সমাবর্তনে হাজিরও ছিলাম না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ঢাবিতে কোনো সমাবর্তন হয়নি। আমি ছাত্র হিসেবে তখন বিদেশে ছিলাম। তাই নিজের ডিগ্রি তখন গ্রহণ করতে পারিনি।

যাঁরা উপস্থিত থেকে হাতে ডিগ্রি নিলেন, তাঁরা সৌভাগ্যবান। আমি মার্কিন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলাম, তাই আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেখে আমার কৌতূহল হয়। আমি যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিউ স্কুল ফর সোশ্যাল রিসার্চ’–এ উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার সময় থিসিস ডিফেন্স দেওয়ার চার দিন পরই দেশে চলে আসি। ফলে সেখানেও আমি ডিগ্রি গ্রহণের অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারিনি। সে জন্য আপনাদের আন্তরিক মোবারকবাদ।

আরও পড়ুননর্থ সাউথের উপাচার্য: সবাইকে একই স্কেলে মাপার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে২৭ অক্টোবর ২০২৪

কায়রোতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব কায়রো, বৈরুতে আছে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত। এগুলো ঊনবিংশ শতাব্দীতে তৈরি হয়েছিল আরব দেশের পরিবেশে আমেরিকার জাগতিক শিক্ষা, ইহলৌকিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য। সেটা দিয়ে আরব জাতির অনেক উপকার তাঁরা করেছেন।

তবে মার্কিন দেশ আর বাংলাদেশের সমাজ যে এক সমাজ নয়, তাদের পার্থক্য যে যোজন যোজন দূরত্বব্যাপী, মহাসাগর পরিমাণ, সেটা আপনারা সবাই জানেন। তাদের সঙ্গে তুলনা করে সময় নষ্ট করব না।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান

সম্পর্কিত নিবন্ধ