গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দের ব্যবহার না করতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর বক্তব্যের সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগেরও নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি। সারা দেশে নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে রোববার সকাল ১১টায় ঢাকায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানববন্ধন করে টিআইবি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বলেছে, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি সুপারিশ পুলিশের অব্যাহত স্বৈরতান্ত্রিক চর্চার প্রতিফলন। ধর্ষণের সংবাদ কম করে প্রচারের পরামর্শ দিয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী কার্যত ধর্ষকের সুরক্ষার পথ প্রশস্ত করতে চাইছেন।

এতে আরও বলা হয়, দেশে নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতন ও ধর্ষণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি এর মাত্রা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ঘরে-বাইরে, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই কন্যাশিশুসহ সব বয়সী নারী ভয়াবহ সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। নৃশংসতার মাত্রা ও সংখ্যা বিবেচনায় নারীর প্রতি সহিংসতায় দেশবাসী আতঙ্কে আছে। এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার সাম্প্রতিক প্রবণতা ব্যাপক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় অপব্যাখ্যাকে পুঁজি করে নারী ও কন্যাশিশুর বহুমাত্রিক অধিকার হরণ।

এর আগে শনিবার ডিএম‌পি ক‌মিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানান। এর বদলে তিনি ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ শব্দ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে ডেইলি স্টার ভবনে গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমি দুটো শব্দ খুব অপছন্দ করি, এর মধ্যে একটি হলো ধর্ষণ। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটা ব্যবহার করবেন না। আপনারা ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নিপীড়ন’ বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।’

যেসব ঘটনা জনমনে আতঙ্ক বা ভয় সৃষ্টি করে, তা কম দেখানোর অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এটা আপনারা করবেন, আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব। তবে যদি একটু “রিজনেবল” করে দেখানো যায়।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট আইব স জ জ ত আল ব যবহ র ন অন র ধ ড এমপ ট আইব

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দের মেজাজে নাই, স্বাধীনতা দিবসে এবারও হচ্ছে না কুচকাওয়াজ: স্বরাষ্ট্র সচিব

‌‘আমরা আনন্দ করার মেজাজে নাই, তাই নরমালি গত বিজয় দিবসে যেমন হয়নি এবারও স্বাধীনতা দিবসে কুচকাওয়াজ হচ্ছে না।’ এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল ফিতর ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত সভা শেষে এ কথা বলেন তিনি।

২৬ মার্চ কুচকাওয়াজ হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত ১৬ ডিসেম্বর হয়নি, এই ২৬ মার্চেও কুচকাওয়াজ হচ্ছে না।’ কুচকাওয়াজ কেন হচ্ছে না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘নরমালি গতবার যেমন হয়নি এবারও হচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আমরা ওয়ারমুডিং আছি, আনন্দ করার মেজাজে নাই।’

সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আজকের সভায় গতানুগতিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপনারা জানেন, রমজান চলছে, স্বাধীনতা দিবস ও ঈদের ছুটি এই তিন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এর আগের মিটিংয়ে আমরা ঈদের ছুটি নিয়ে ও বেতন ভাতা নিয়ে শ্রমিকদের যে অসন্তোষ থাকে সেগুলো বন্ধে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে। যেমন শ্রমিকদের বেতন নির্ধারিত সময়ে যাতে দেওয়া হয় সেজন্য বিকেএমই’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া আরও বিভিন্ন বিষয় যেমন, ঈদযাত্রায় যেন চাঁদাবাজি, ছিনতাই না হয়। বিভিন্ন শপিংমলগুলোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।’

২৬ মার্চ নিয়ে কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি আছে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি দেখছি না। আমরা কোনো হুমকিও দেখছি না।’  

পোশাক শ্রমিকদের ঈদের ছুটি অন্যান্য বছরের মতো ধাপে ধাপে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা হতে পারে, সে বিষয়ে মালিকরা ওয়ার্কাউট করবেন। তবে আমরা বলেছি বেতন, ভাতা যাতে নির্ধারিত সময়ে পায়। কোনো প্রতিষ্ঠার যাতে ধ্বংস না হয়।’

ঈদে ঢাকা ফাঁকা হয়ে যায়, সে সময় চুরি ঢাকাতি হয়, সে বিষয়ে বিশেষ কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি থাকবে। ইত্যোমধ্যেই দেখেছেন পুলিশ আগে চেয়ে শক্ত হয়েছে, আরও শক্ত হবে। আমরা কোনো হুমকি দেখছি না।

দেশের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কি আগের থেকে স্বাভাবিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আপনারা বিবেচনা করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ