নিজেদের ওয়েবসাইট ব্যবহারে আগ্রহী ব্যক্তিরা রোবট না মানুষ, তা জানার জন্য ‘ক্যাপচা’(বিশেষ ফন্টে লেখা শব্দ বা ছবির ধাঁধা) সমাধান করতে বাধ্য করে থাকে বিভিন্ন ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটে থাকা ক্যাপচার তথ্য সঠিকভাবে লিখতে না পারলে সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যায় না। কিন্তু এবার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে ভুয়া ক্যাপচার মাধ্যমে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে একদল সাইবার অপরাধী।

সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যালওয়্যারবাইটস জানিয়েছে, নতুন ধরনের এই সাইবার হামলার ক্ষেত্রে সাধারণত অনলাইনে সিনেমা, গান, ছবি বা সংবাদের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করা হয়। এরপর কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে ক্যাপচা সমাধান করতে বলা হয়, যা আসলে একটি প্রতারণার ফাঁদ। যদি কেউ ক্যাপচায় নির্দেশিত ধাপ অনুসরণ করেন, তাহলে ওয়েবসাইটগুলো গোপনে উইন্ডোজ ক্লিপবোর্ডে একটি টেক্সট স্ট্রিং কপি করে। এরফলে ক্যাপচার ‘আই অ্যাম নট রোবট’ চেক বক্সে টিক দেওয়ার পরপরই ব্যবহারকারীদের অজান্তে তাঁদের যন্ত্রে এমএসএইচটিএডটএক্সই কমান্ড চালু হয়ে যায়, যা কাজে লাগিয়ে সাইবার অপরাধীরা দূর থেকে ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে থাকে।

আরও পড়ুনক্যাপচা সমাধানে মানুষের মতোই দক্ষ হয়ে উঠেছে চ্যাটজিপিটি২৭ জানুয়ারি ২০২৫

এ ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে ম্যালওয়্যারবাইটস। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, যেকোনো ওয়েবসাইটের নির্দেশনা অনুসরণ করার আগে তা যাচাই করা উচিত। এ ছাড়া ক্ষতিকর ওয়েবসাইট ও স্ক্রিপ্ট ব্লক করার জন্য সব সময় জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা সফটওয়্যার ও ব্রাউজার এক্সটেনশন ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে অপরিচিত বা সন্দেহজনক ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় জাভাস্ক্রিপ্ট নিষ্ক্রিয় রাখতে হবে।

আরও পড়ুনচাকরির সাক্ষাৎকারের প্রলোভনে ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে হ্যাকাররা২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, ক্যাপচার মাধ্যমে আগে লুমা স্টিলার নামের ম্যালওয়্যার ছড়ানো হলেও সম্প্রতি সেকটপআরএটি নামের আরও উন্নত ম্যালওয়্যার ছড়ানো হচ্ছে। ম্যালওয়্যারটি শুধু তথ্য চুরিই নয়, আক্রান্ত স্মার্টফোন বা কম্পিউটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগও দিয়ে থাকে। আর তাই অনলাইনে বিভিন্ন সুবিধা পেতে তাড়াহুড়ো করলে বা অসাবধান থাকলে ব্যবহারকারীরা এ ধরনের প্রতারণার শিকার হতে পারেন। ক্যাপচার মাধ্যমে ম্যালওয়্যার প্রবেশ ঠেকাতে সন্দেহজনক ওয়েবসাইট দ্রুত বন্ধের পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।

সূত্র: জেডডিনেট

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য লওয ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

দিনাজপুরে সাড়ে ৫৫০ বছরের পুরোনো মসজিদে নামাজে আসেন দূরদূরান্তের মুসল্লিরা

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চৌরগাছা গ্রামে আছে কয়েক শ বছরের পুরোনো মসজিদ। এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন দূরদূরান্তের মুসল্লিরা। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা একনজর মসজিদটি দেখতে আসেন।

মসজিদ চত্বরের প্রধান ফটকের সামনে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একটি সাইনবোর্ড আছে। সেখানে দেওয়া তথ্যমতে, এটি প্রায় ৫৫০ বছর আগের তৈরি মসজিদ। মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন এ শুরা মসজিদ। এটি দেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। সুলতানি আমলের এ মসজিদের নির্মাণকাল নিয়ে আছে নানা জনশ্রুতি। এ মসজিদকে কেউ সৌর মসজিদ, কেউ শুরা মসজিদ, আবার কেউ শাহ সুজা মসজিদ নামে চেনেন।

জনশ্রুতি আছে, জিনেরা এক রাতের মধ্যে মসজিদটি তৈরি করেছেন। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এটি ষোড়শ শতকের গৌড়ের সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহর আমলের (১৪৯৩-১৫১৮) নিদর্শন। আর এ তথ্যই এলাকার বেশির ভাগ মানুষের কাছে বেশি স্বীকৃত।

চার ফুট উচ্চতার মজবুত প্ল্যাটফর্মের ওপর চুন-সুরকি, ইট আর কালো পাথরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে মসজিদের অবকাঠামো। মসজিদের দেয়ালে অসংখ্য খোপকাটা মৌলিক টেরাকোটার অলংকরণ। মসজিদটি প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিমাংশে নামাজকক্ষ আর নামাজের কক্ষের পূর্ব পাশে বারান্দা। মসজিদের ওপর বর্গাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট নামাজকক্ষ এবং পূর্ব ভাগে ছোট তিন গম্বুজবিশিষ্ট একটি বারান্দা আছে।

মসজিদে প্রবেশের জন্য পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি করে খিলানকৃত প্রবেশপথ আছে। বারান্দার উভয় পাশে আছে একটি করে প্রবেশপথ। এর ভেতরের অংশে কিবলা দেয়ালে আছে পাথরের তৈরি অলংকৃত কারুকাজে ৩টি অবতল মিহরাব। আর বাইরে দেয়ালের গায়ে দুই সারি ইটের প্যানেল নকশা। মসজিদের ভেতর-বাইরের দেয়াল এবং মিহরাবে অলংকৃত আছে ফুলের টেরাকোটা, যা সমসাময়িক সুলতানি আমলের মসজিদ স্থাপত্যে দেখা যায়।

গাইবান্ধা জেলা থেকে শুরা মসজিদ নামাজ পড়তে এসেছেন সরকারি চাকরিজীবী মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, প্রতি শুক্রবার দূরদূরান্ত থেকে এখানে লোকজন আসেন। তাঁরা বিভিন্ন মানত করতে আসেন। আমারও ইচ্ছা, বিরল কৃতিত্বের এই মসজিদে নামাজ পড়ব; নিজের জন্য, আত্মীয়স্বজন ও মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করব।’

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, মসজিদটি ষোড়শ শতকের গৌড়ের সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহর আমলের নিদর্শন

সম্পর্কিত নিবন্ধ