সিটির সামনে ৯ ফাইনাল দেখছেন গার্দিওলা
Published: 16th, March 2025 GMT
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ের সম্ভাবনা শেষ অনেক আগেই। লিগে ম্যানচেস্টার সিটির লক্ষ্য এখন শীর্ষ চারে থাকা যেন আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করে নেওয়া যায়। কিন্তু পেপ গার্দিওলার দল এখন সেই লক্ষ্যকেও বড্ড কঠিন বানিয়ে ফেলেছে। এতটাই যে, ১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের বাইরে থাকার সম্ভাবনা আছে যথেষ্টই।
তবে শঙ্কা থাকলেও আশা তো হারিয়ে ফেলা যায় না। ম্যানচেস্টার সিটি কোচও তাই আশাবাদী। তবে সে জন্য সিটিকে ৯টি ফাইনাল জিততে হবে বলে মনে করেন গার্দিওলা। এই ‘৯ ফাইনাল’ মানে প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বাকি ম্যাচ।
টানা চারবারের শিরোপাজয়ীদের এবার সেরা চারে থাকাও শঙ্কায় পড়েছে গতকাল রাতে ব্রাইটনের সঙ্গে ২–২ ড্র করায়। ২৯ ম্যাচ খেলে সিটির পয়েন্ট এখন ৪৮, অবস্থান পাঁচ নম্বরে। পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরে থাকা নিউক্যাসলের পয়েন্ট ৪৭, তবে দলটি ম্যাচ খেলেছে ২৮টি। অর্থ্যাৎ, নিউক্যাসল তাদের ২৯তম ম্যাচটি জিতলে ম্যানচেস্টার সিটি ছয় নম্বরে নেমে যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে শীর্ষ চারে থাকতে ম্যানচেস্টার সিটিকে বাকি ম্যাচগুলোতে যত বেশি সম্ভব পয়েন্ট আদায় করে নিতে হবে। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের দিকেও, যাতে তারা পয়েন্ট হারায়।
গার্দিওলার মতে তাঁর দলকে এখন বাকি ৯ ম্যাচ ‘ফাইনাল’ ধরে নিয়ে খেলতে হবে, ‘আমি সব সময়ই আত্মবিশ্বাসী। এমন অনেক সময়ই এসেছিল, যখন শঙ্কা ছিল। কিন্তু একটা না একটা উপায় খুঁজে পেয়েছিলাম। এখন আমাদের হাতে লিগে ৯টা ম্যাচ বাকি আছে। ৯টাই ফাইনাল।’
লিগে সিটির যে ৯টি ম্যাচ বাকি আছে, তার মধ্যে নিজেদের মাঠে খেলা লেস্টার সিটি, ক্রিস্টাল প্যালেস, অ্যাস্টন ভিলা, উলভারহ্যাম্পটন ও বোর্নমাউথের বিপক্ষে। এর মধ্যে অ্যাস্টন ভিলা ও বোর্নমাউথ এখন পয়েন্ট তালিকার আট ও নয় নম্বরে আছে। দল দুটির পয়েন্ট সিটির চেয়ে খুব একটা কম নয়, যথাক্রমে ৪৫ ও ৪৪।
অন্যদিকে প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচগুলোর চার দলই পেছনের দিকের থাকলেও চ্যালেঞ্জ কম নেই। কারণ, এর মধ্যে একটি হচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (বর্তমানে ১৫ নম্বরে)। অন্য তিনটি দল হচ্ছে ফুলহাম (৯) এভারটন (১৪) ও সাউদাম্পটন (২০)।
‘৯ ফাইনালের’ মধ্যে সিটির প্রথম ম্যাচ ২ এপ্রিল লেস্টার সিটির বিপক্ষে। তার আগে ৩০ মার্চ এফএ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বোর্নমাউথের বিপক্ষে খেলবে গার্দিওলার দল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
তারা শুধুই পরিপূরক নন, ঈদ সিনেমার চালিকাশক্তিও
দক্ষিণ এশীয় সিনেমায় সব সময়ই নায়কদের আধিপত্য বেশি লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের ছবিতেও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে শুধু নায়ক নয়, নায়িকারাও ছিলেন। তাদের অভিনয়, গল্পে প্রভাব, চরিত্রের গভীরতা এবং দর্শকের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করেছে– নায়িকারা এখন শুধুই পরিপূরক নন, বরং সিনেমার মূল চালিকাশক্তি হতে পারেন। ঈদের ছয় সিনেমায় আলাদা চমক নিয়ে হাজির হন ইধিকা পাল, শবনম বুবলী, তমা মির্জা ও নুসরাত ফারিয়ারা। ঝলক দেখিয়েছেন দীঘি, সুনেরাহ ও শিমুও। ঈদের ছবির এই নায়িকাদের দাপুটে উপস্থিতি নিয়েই এ আয়োজন।
শাকিবের বিপরীতে ইধিকার আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি
‘প্রিয়তমা’ দিয়ে বাংলাদেশি দর্শকের মনে জায়গা করে নেন ইধিকা পাল। এরপর কলকাতায় দেবের বিপরীতে ‘খাদান’ করেছেন। ‘প্রিয়তমা’ ও ‘খাদান’ ব্যবসায়িক সাফল্য পাওয়ার ইধিকা হয়ে উঠেছেন দুই বাংলার বড় নায়িকা। এবার ‘বরবাদ’ দিয়ে নতুন করে ইধিকা দেখিয়ে দিলেন, তাঁর অভিনয়ের কারিশমা কতটা পরিণত। ঈদে সবচেয়ে বেশি হলে প্রদর্শনী চলছে মেহেদি হাসানের ‘বরবাদ’ সিনেমাটির। শাকিব খানের বিপরীতে সিনেমাটির নায়িকা ইধিকা পাল। তাঁর চরিত্রের নাম নীতু। সিনেমাটিতে নিজের সেরাটা দিয়েছেন ইধিকা। কোনো কোনো জায়গায় সিনেমার প্রাণ শাকিব খানকেও ছাপিয়ে যেতে চেয়েছিলেন অভিনয় দিয়ে। রোমান্টিক দৃশ্য, অসহায়ত্ব থেকে বদলে যাওয়া সব ভূমিকাতে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন ইধিকা। দর্শক ইধিকার অভিনয়কে গ্রহণ করেছে ইতিবাচকভাবে এবং অনেকেই বলছেন, তাঁর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিন টিকে থাকার রসদ।
‘জংলি’তে ইন্টার্ন চিকিৎসক বুবলী
বাণিজ্যিক সিনেমায় বুবলীকে সব সময়ই রোমান্টিক চরিত্রে দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু ‘জংলি’ ছবিতে তিনি হাজির হয়েছেন একেবারে অন্য রূপে। সাদামাটা একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক। সিনেমায় তাঁর চরিত্রে ছিল সাহসিকতা আর গতিময়তার। বুবলীর শারীরিক ফিটনেস, সংলাপ বলার ধরন আর চরিত্রের গভীরতা বেশ প্রশংসিত হয়েছে। বুবলী যে শুধু বাণিজ্যিক সিনেমার নায়িকা, তেমনটি কিন্তু নয়। সিয়ামের বিপরীতে এর আগে ‘টান’ ওয়েব ফিল্মেও চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন প্রশংসাও। ‘দেয়ালের দেশ’ ছবিতেও তাঁর অনবদ্য অভিনয় অভিনেত্রী হিসেবে পূর্ণ স্বীকৃতি দিয়েছে দর্শক। সেই বুবলী ‘জংলি’তে সাদামাটা চরিত্রে দারুণ কারিশমা দেখিয়েছেন। এম রাহিম পরিচালিত ছবিটিতে সিয়ামের সঙ্গে আরেক নায়িকা ছিলেন দীঘি। ছবিটির নূপুর চরিত্র দীঘির করা। চরিত্রটির উপস্থিতি খুবই কম হওয়ায় খুব একটা আলো ফেলতে পারেননি দীঘি।
পরিণত অভিনয় তমা মির্জার
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তমা মির্জা বরাবরই চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে ভালোবাসেন। শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘দাগি’ ছবিতে তিনি ঠিক তেমনই এক চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে অভিনয় দারুণ পরিণত। হল থেকে বের হওয়ার পর তমার চরিত্রের আবেশ নিয়ে বের হতে পারবেন দর্শক। চরিত্রটি দর্শকদের হৃদয়ে প্রভাব ফেলতে বাধ্য করবে। নিশোর বিপরীতে এর আগে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তমা মির্জা। কিন্তু ‘দাগি’র জেরিন চরিত্রটি সুড়ঙ্গের চেয়ে আরও দারুণ কিছু। তাঁর এই সরল অভিনয় সিনেমাটিকে দিয়েছে শক্ত ভিত্তি। ঈদে এই ছবির মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো, তমা গ্ল্যামার নয়, অভিনয় দিয়েই মন জয় করতে পারেন। সিনেমাটিতে আরেক অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালও আছেন। তবে তাঁর উপস্থিতি ছিল কম। তবে যতটা ছিলেন, ততটা পরিণত অভিনয় দিয়ে দর্শকদের তৃপ্ত করতে সমর্থ হয়েছেন।
গানে নজরকাড়া ফারিয়া
ঈদে মুক্তি পাওয়া ব্যতিক্রমী ধারার ছবি ‘জ্বীন’, যেখানে ভৌতিক গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন নুসরাত ফারিয়া। এই ছবিতে তিনি ছিলেন এক রহস্যময়ী নারী, যিনি প্রেম এবং অতিপ্রাকৃত ঘটনার আবর্তে ঘুরপাক খেয়েছেন। ফারিয়ার অভিনয়, মেকআপ এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ চরিত্রের সঙ্গে খুব একটা মানানসই ছিল না। ফলে সিনেমার থ্রিল বজায় থাকেনি খুব একটা। সিনেমাটির গান আলোচিত হলেও সিনেমাটি তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। ছবিতে ফারিয়া গ্রামের এক মেয়ের চরিত্র করেছেন। চরিত্রটি পুরোপুরি হয়ে উঠতে বেশ দুর্বলতা ছিল। তবে ছবির গানগুলোতে ফারিয়া ছিলেন পরিণত। তাই গান দিয়েই আলোচিত হতে হয়েছে তাঁকে।
ঈদে মুক্তি পাওয়া আরেক ছবি ‘অন্তরাত্মা’তে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন ভারতীয় অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। ছবিটি এক প্রকার প্রচারণা ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়। এ ছাড়া নানা কারণে সুবিধাজনক অবস্থান নিতে পারেনি। ফলে সিনেমার নায়িকা দর্শনা বণিকের অভিনয়ও তেমন আলোচনায় আসেনি। ‘অন্তরাত্মা’ নামে যে একটা ছবি মুক্তি পেয়েছে, দর্শক অনেকে সেটা জানেনও না। এদিকে ঈদের আরেক সিনেমা ‘চক্কর ৩০২’। পুলিশি তদন্ত ঘরানার সিনেমাটি মোশাররফ করিমকে ঘিরেই মূলত এগিয়েছে।