নরসিংদীতে উদ্ধারকৃত গাজা বিক্রির অভিযোগে ডিবি’র ওসি বদলি
Published: 16th, March 2025 GMT
পুলিশের উদ্ধার করা গাজা বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ওসি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কামরুজ্জামানকে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তি’র কথা বলা হয়েছে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে নরসিংদী পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
এ দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাছাড়া আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?’’
জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তিনি বিষয়টি কামরুজ্জামানকে অবহিত করে উদ্ধারকৃত গাজা ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর বিচারিক প্রক্রিয়ায় আদালতে উপস্থাপন করা হলে, আদালত জব্দকৃত গাজা ধ্বংস বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, কামরুজ্জামান জব্দকৃত গাজা মাধবদী আলগী এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন। প্রতি কেজি গাজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও তিনি ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাজা ধ্বংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।
এ দিকে মালখানার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর শামীম এক প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। প্রতিবেদনে তিনি জানান, গত ১১ মার্চ তিনি কোনো মাদকদ্রব্য ধ্বংস করতে দেখেননি। কামরুজ্জামান বারবার তাকে ডিবি অফিসে ডেকে এনে টাকা নেওয়ার চাপ দিয়েছেন। টাকা নিতে না চাইলে তিনি হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কাগজে-কলমে সব ঠিক থাকলেও এখানে বিশাল অনিয়ম হয়েছে উল্লেখ করে শামীম বলেন, ‘‘গত দুই মাসে আদালত প্রাঙ্গনে কোনো মাদকদ্রব্য পোড়াতে দেখিনি।’’
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘আমাদের অফিসার আলামত জব্দ করেছে। তা ধ্বংস তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে। কোর্ট রিসিভ করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে না করে নাই, সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কোনো জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।’’
গাজা বিক্রির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার আপনারা যাচাই করে দেখেন। আমি বিক্রি করলে কোর্ট কী ধ্বংস করলো?’’
নরসিংদী পুলিশ সুপার মো.
হৃদয়//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ধ ব স কর ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা এমএসএফের
মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। তারা বলেছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা ছাড়া কাউকে আটক রাখা আইন পরিপন্থী ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।
আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানায় এমএসএফ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কোনো মামলা না করে মেঘনা আলমকে দুই দিন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে রেখে তৃতীয় দিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এমএসএফ মনে করে, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত রাখতে সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ নিতে পারে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির চেষ্টা করা এবং দেশকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে মেঘনাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। কিন্তু তিনি কী ধরনের ষড়যন্ত্র করেছেন, তা ডিএমপির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে বলা হয়নি।
আরও পড়ুনবিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ, মডেল মেঘনা কারাগারে১১ এপ্রিল ২০২৫উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আজ প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সে ক্ষেত্রে ক্ষতিকর কাজ থেকে তাঁকে নিবৃত্ত রাখার জন্য আটক করতে পারেন। মডেল মেঘনা আলম ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত। যে কারণে তাঁকে গতকাল রাতে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন।
আরও পড়ুনমডেল মেঘনা আলমকে ‘নিরাপত্তা হেফাজতে’ রাখার কারণ হিসেবে যা বলল পুলিশ১১ এপ্রিল ২০২৫