চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ বিসিএস কি ৪৮তম
Published: 16th, March 2025 GMT
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে যে আরও ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের কথা উঠেছে, তা কি ৪৮তম বিসিএস হতে যাচ্ছে? অঘোষিতভাবে সেই দিকেই এগোচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সম্প্রতি পিএসসি চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম প্রথম আলোকে এই কথা জানিয়েছেন। নতুন বিসিএস বা বিশেষ বিসিএস, যা–ই হোক, চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়ার এই বিসিএস ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের দিকেই মোড় নিচ্ছে।
চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক সায়েদুর রহমান। সম্প্রতি নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমানে চিকিৎসকদের বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার বয়স ৩২ বছর। এটাকে দুই বছর বাড়িয়ে চিকিৎসকদের বিসিএস পরীক্ষার বয়স ৩৪ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনপানি উন্নয়ন বোর্ডে বড় নিয়োগ, পদ ২৭৭, নারীদের আবেদনে উৎসাহিত করা হয়েছে০৮ মার্চ ২০২৫অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের সময় বঞ্চিত হয়ে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের কারণে চিকিৎসকেরা গত বুধবার তাঁদের বেতন-ভাতা নিয়ে ধর্মঘট করেছিলেন। তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে বর্তমান সরকার আন্তরিক। অন্তর্বর্তী সরকার শিগগিরই কিছু সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাঁদের এসব দাবি পূরণ করার চেষ্টা করবে।
আরও পড়ুন৪৭তম বিসিএস পরীক্ষা: বিষয়ভিত্তিক মডেল টেস্ট-১ ১২ মার্চ ২০২৫সরকারের আশ্বাসের ভিত্তিতে চিকিৎসকেরা গত বুধবার আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন জানিয়ে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তবে এখনো কিছু ইন্টার্ন চিকিৎসক শিক্ষার্থী ক্লাসে অনুপস্থিত রয়েছেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি, সবাই যেন নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন।’ চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষার জন্য আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠবে। এক সপ্তাহের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ার কাজটি শেষ হবে বলেও জানান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান।
বিনা মূল্যে আইটি প্রশিক্ষণে নতুন বিজ্ঞপ্তি, ২ লাখ টাকার কোর্স শেষে কর্মসংস্থান, যাদের সুযোগনতুন বিসিএস থেকে কেন, আগের বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেই তো চিকিৎস নিয়োগ দ্রুত সময়ে দেওয়া যাবে—এমন প্রশ্নে পিএসসির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আগের দুটি বিশেষ বিসিএসে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একটি ৩৯তম আরেকটি ৪২তম বিশেষ বিসিএস। এগুলো বেশ আগে নেওয়া হয়েছে ও আগের সরকারের আমলের। নতুনভাবে না নিলে নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক উঠতে পারে। সে জন্য নতুন বিসিএস থেকেই দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। নতুন বিসিএস হলে কোনো বিতর্ক থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুনখাদ্য অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, ১৩ থেকে ১৯তম গ্রেডে পদ ১৭৯১১১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ ষ ব স এস চ ক ৎসকদ র চ ক ৎসক ন দ র রহম ন সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম ৯ টাকা করার দাবি তরুণ চিকিৎসকদের
শিশু-কিশোর ও তরুণদের নাগালের বাইরে নিতে প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম সর্বনিম্ন ৯ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তরুণ চিকিৎসকরা।
দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত তরুণ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হলে ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় হবে।
শনিবার (১৫ মার্চ) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে তামাকপণ্যের ব্যবহার হ্রাসকরণে তরুণ চিকিৎসকদের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তারা।
কর্মশালায় হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিত্যপণ্যের তুলনায় বাংলাদেশে তামাকপণ্য সস্তা। ফলে, শিশু-কিশোর ও তরুণরা সহজেই এ ক্ষতিকর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন। তাই, তাদের নাগালের বাইরে নিতে তামাকপণ্যের ওপর বেশি কর আরোপ ও মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
কর্মশালায় আরো বলা হয়, বর্তমানে সিগারেটের চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই, আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্র করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলে শিশু-কিশোর ও তরুণরা ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে প্রতি শলাকা বিড়ির সর্বনিম্ন দাম ১ টাকা করার দাবি জানানো হয়। এটি বাস্তবায়ন করা হলে, ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মোতালিব শান্ত বলেন, “চিকিৎসক হিসেবে আমাদের তামাকের ক্ষতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তামাকপণ্যের ক্ষতি সম্পর্কে জোরালো প্রচার চালাতে হবে।”
শিশু-কিশোর ও তরুণদের হাতের নাগালের বাইরে নিতে তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান তিনি।
কর্মশালায় তরুণ চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার কমাতে চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে রোগীদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার কমাতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং তামাক পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর ও মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপদেষ্টা ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরামর্শক নাইমুল আজম খান, সমন্বয়ক ডা. অরুনা সরকার ও কমিউনিকেশন অফিসার আবু জাফরসহ অন্যরা।
ঢাকা/হাসান/রফিক