বাউফলে তরমুজের ট্রলারে ডাকাতি: পিটুনিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত
Published: 16th, March 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে তরমুজভর্তি ট্রলারে ডাকাতির সময় লোকজনের পিটুনিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত মো. কবির (৩৫) ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ বালিয়া গ্রামের মফিজল ব্যাপারীর ছেলে।
এদিকে ডাকাতির ঘটনায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের কপালবেরা গ্রামের তরমুজচাষি ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম (৫৮) বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুনবাউফলে তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির সময় পিটুনিতে একজন নিহত, আহত ৩১৪ ঘণ্টা আগেপুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে গলাচিপার চরকাজল থেকে শহীদুল ইসলাম ট্রলারে করে তরমুজ নিয়ে চাঁদপুর যাচ্ছিলেন। দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে তেঁতুলিয়া নদীর বাউফলের তালতলী মোহনা এলাকায় পৌঁছালে সাত থেকে আটজনের সশস্ত্র একটি ডাকাত দল ট্রলার নিয়ে তরমুজভর্তি ট্রলারটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে ধুলিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় গিয়ে তারা তরমুজের ট্রলারের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ সময় ডাকাতেরা ট্রলারের চালকসহ ট্রলারে থাকা তিনজনকে কুপিয়ে আহত করে। তাঁরা এক ডাকাতকে জাপটে ধরে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। অন্য ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। আটক ব্যক্তিকে স্থানীয় লোকজন পিটুনি দেন। খবর পেয়ে গতকাল ভোরে গুরুতর আহত ওই ব্যক্তিসহ ট্রলারের লোকজনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পিটুনিতে গুরুতর আহত ব্যক্তিকে প্রথমে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা দেড়টার দিকে তিনি মারা যান।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। আর নিহত ডাকাতের পরিচয় পাওয়ায় মামলার তদন্ত ও অন্য ডাকাতদের শনাক্ত করতে সুবিধা হবে। খুব কম সময়ের মধ্যে ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জ শহরের আলোচিত পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। সর্বশেষ শনিবার দান বাক্সের টাকা রূপালী ব্যাংকে জমার পর পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিাটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রতি তিন মাস বা তার কিছু বেশি সময় পরপর মসজিদের দান বাক্সগুলো খোলা হয়। তাতে প্রতিবারই কয়েক কোটি টাকা পাওয়া যায়। সর্বশেষ শনিবার ১১টি দান বাক্স খুলে মিলেছে ২৮ বস্তা টাকা। গণনা শেষে পাওয়া গেছে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার।
সেনা সদস্য, পুলিশ ও আনসারের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে মোট ৩৯৪ জন মানুষ টাকা গণনায় অংশ নেন। সব টাকা রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা করা হয়েছে। বিদেশি মুদ্রা আর অলংকারের মূল্য নির্ধারণ করে সেসব টাকাও ব্যাংকে রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেছেন, দান বাক্সে পাওয়া টাকার লভ্যাংশ থেকে অসহায় জটিল রোগীদের অনুদান দেওয়া হয়। মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসার এতিম ছাত্রের সব খরচ, আনসার সদস্যদের বেতনসহ মসজিদ পরিচালনার যাবতীয় খরচও মেটানো হয়। জমানো টাকা থেকে পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের আরও দুটি শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়া একটি আধুনিক পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। ৬ তলা বিশিষ্ট নতুন মসজিদ কমপ্লেক্সে একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ৫ হাজার নারী মুসল্লির জন্যও পৃথক ব্যবস্থা থাকবে।
কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম দিকে নরসুন্দা নদীর দক্ষিণ তীরে হারুয়া এলাকায় প্রায় পৌনে দুইশ’ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ১৯৭৯ সাল থেকে। তখন থেকে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন। সাধারণত পৌর মেয়ররা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।