Prothomalo:
2025-03-16@11:24:41 GMT

রাষ্ট্রহীন

Published: 16th, March 2025 GMT

হয়েছে, চল যাই অন্য দুনিয়ায়

রাষ্ট্রহীন এক বিদেহ বৈদেশে,

পরান তড়পায় লোবানে ধূপঘ্রাণে

ধরবি কোন হাতে এ হাত অবশেষে!

সুদূর নিঃসীম যাবার কথা ছিল

সকল রেখা–কোণ মিলায় যেইখানে,

সাধের রংধনু রাঙাবে তোর তনু

মাতবে পাখি দল মিছিলে ও স্লোগানে।

তোর কি মনে নেই রাষ্ট্রহীন ভূমি

সাজাব আমাদের পুষ্পশয্যায়,

ধর্ম ভালোবাসা, জাতি ও আলিঙ্গনে

লুপ্ত আপনায় আনত লজ্জায়।

তুই কি ভুলেছিস মধুর শীৎকার

ফোটানো অঙ্কুর নতুন উদ্‌গমে,

কেবল বারুদের বোমার চিৎকার

মরণ উদ্‌গার রক্তে দমে দমে।

মরেছে যারা তোর আমার আমাদের

ফুটবে তারা হয়ে সেখানে সে আকাশে,

উল্কা আঁখিজল লবণে দেবে স্নান

না-কাঁদা কান্নার ওয়াহি সে বাতাসে।

আয় রে যাব চল ভেঙে এ সীমারেখা

আমার ত্রিভঙ্গে বাইবি তুই খেয়া,

অদেখা জলস্রোত অন্তঃঅবাধ্য

প্রেমে ও হাহাকারে হৃদয় দেওয়া–নেওয়া।

ক্ষতের পুঁজে পুঁজে কুসুম চয়নের

গাইবে কোন গান গন্ধ–ফেরিওলা,

অন্ধ বধিরের পঙ্গু পাগলের

প্রকাশ বিস্ফারে শিল্পছলাকলা।

আমরা উড়ে যাব, ছেড়ে ও ছুড়ে যাব

এ দীন জীবনের ব্যর্থ শ্বাসগুলি,

নখরে দাঁতে আঁকা গ্রাফিতি সময়ের

চিহ্ন মরীচিকা অশ্রুজল, ধূলি।

কী গান বুলবুলি তুলেছে পিঞ্জর

ভাঙবে নচ্ছার সুরের ঠোঁটে ঠোঁটে,

কে মরে বেঁচে যায়, কে বেঁচে তড়পায়

কার–বা মরাদেহে কামিনী ফুল ফোটে।

স্বপ্ন বাস্তব কল্পছায়াছবি

আমরা মুছে যাই চতুর ক্যামেরায়,

কোলাজে–মন্তাজে শব্দে–নি–শব্দে

কাহিনি ভাঙাচোরা অচিন অভিপ্রায়।

ঘটন–অঘটনে মাতাল মুহূর্ত

কোন সে স্পন্দনে বইছে ধমনিতে,

আকাল–মহাকাল জন্ম–মৃত্যুর

সন্ধি রচিতেছে রক্তগোধূলিতে।

তুই কি ধরেছিস দুহাতে আঁজলায়

থ মারা আকাশের অশ্রুবারিধার,

শ্রাবণ–প্লাবনের বানে কি ভেসেছিস

পাঁজরভাঙা ঝড়ে উতলা চারিধার!

বজ্রচাবুকের দগ্ধ ক্ষত নিয়ে

মানুষ লালে লাল, দাসের চির দাস,

উড়ছে দমকায় উল্টাপাল্টায়

শীর্ণ পত্রের জীর্ণ ইতিহাস।

তুই কি পড়েছিস পাঠের আড়ালের

অন্য বয়ানের কথা ও রূপকথা?

না–মানা হৃদয়ের অ–শ্রুত উচ্চার

রুহের সংগীতমুখর নীরবতা।

আয় রে চলে যাই, সবেগে দলে যাই

ক্লান্ত পরাজিত ছিন্ন পাতাদের,

শূন্য শাখে শাখে নতুন ফুলকুঁড়ি

মাতাবে সুগন্ধে রাস্তা আমাদের।

আমরা না থাকব তবুও রাষ্ট্রের

রূপসী প্রহেলিকা জড়ানো সীমানায়,

দেহেরও আগলের শিকল ভেঙেচুরে

মুক্ত আত্মার ছড়াব রোশনাই।

আমরা গা’ব গান বেতাল বিরাগের—

তোমরা সুখে থাকো, অসুখে ধুঁকে থাকো!

নীল ও নিঃসীম হে প্রিয় ভূমি আজ

আসছি, আমাদের তোমারি বুকে রাখো।

তোমারি দুধে–ওমে মেটাব তৃষা-ক্ষুধা

তোমারি তন্দ্রায় ঘটাব জাগরণ,

তোমার দিগন্তে ব্যাপ্ত বেলোয়ারি 

জড়াবে আমাদের মরণ আ-মরণ।

তোমারি রচনার ধূসর পৃষ্ঠায়

পড়ব জীবনের লুপ্ত কথামালা,

হারানো ভূগোলের বাতাস মাটি জল

স্বপ্ন আল্পনা নৃত্যগানপালা।

অধরা অসীমার কোন সে মোহনায়

মিলছে অন্তর গুপ্ত আয়োজনে,

সেখানে মারি ডুব উতল নিশ্চুপ

এ হাতে হাত রাখো ও-মন এই মনে।

বন্দী কেন র’ব সোনার কারাগারে

মিথ্যা চকমকি শিকল ছলনায়,

মুক্তি কিছু নাই, সকলি ফন্দির

অন্ধ দোল খাই শূন্য দোলনায়।

তুই কি ভুলেছিস মরেছিলাম কেন

আতশবাজি ফোটা জীবন–উৎসবে?

কেন এ হৃদয়ের আগুন জ্বেলেছিলি

শৈত্যমরা দেহ জাগিয়ে কলরবে!

সে আঁচে প্রাণ বাঁচে, সখা হে রাস্তার

কিসের অপেক্ষা কিসের অপচয়,

বারুদ বুকে ধরি, গ্রেনেড বাঁধি হৃদে

কেবল তোর লাগি জীবন সঞ্চয়!

রাষ্ট্রহীন এক বিদেহ বৈদেশে

গড়ব দুজনায় সাধের সংসার,

সে আশে পথ মেশে রাঙাভা দিগন্তে

গোধূলিপটে হোক প্রেমের সঞ্চার.

..

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন কমিশনকে যে ৩ বার্তা দিলেন ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। আজ রোববার আগারগাও নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ও ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।

মিলার বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিবর্তনে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কী ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমরা তা জানতে এসেছি। নির্বাচন কমিশন কী কাজ করছে, তা সংক্ষিপ্তভাবে জেনেছি। 

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনকে মূলত তিনটি বার্তা দিয়েছি। প্রথমত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই দেশের জন্য একটি অন্যতম অংশীদার এবং আমরা এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়ে আপনার পাশে আছি। দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে তার অংশীদারিত্বকে সব দিক থেকে আরও শক্তিশালী করতে চায়। এবং আমরা এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়াসকে সমর্থন করতে এসেছি, যাতে তারা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে। তৃতীয়ত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবে। আমরা একটি সুনির্দিষ্ট আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি আমাদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করব। এছাড়া বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ চাইলে আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবো।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে তাদের কোনো দ্বিমত নেই। পাশাপাশি তারা নির্বাচনে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে চায়।

সিইসি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মূলত জানতে চেয়েছিলেন যে, আগামী নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি কী, বাজেট কত। নির্বাচন সুষ্ঠ করতে হলে আর কী কী প্রয়োজন। আমরা বলেছি, বাজেটে কোনো সমস্যা নেই। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতির তথ্য আমরা জানিয়েছি। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ওনারা আমাদের শুধুমাত্র নির্বাচনে নয়, দেশের সার্বিক উন্নয়নে যে কোনো ধরনের সাহায্য করতে চান। আমাদের কী প্রয়োজন, সেটা জানতে চান। আমরা বলেছি, ইউএনডিপি ইতিমধ্যে একটা প্রয়োজনীয় অ্যাসেসমেন্ট করেছে। একটা টিম পাঠিয়েছিল। তারা আগামী মাসে একটা কর্মশালা করতে চান। সেখানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা থাকবেন। ভোটের আগে পোলিং এজেন্ট, ভোটার এডুকেশন ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে চেয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ইসিতে কোনো কাজ লুকিয়ে ছাপিয়ে করছি না। যা করছি, একেবারে স্বচ্ছতার সঙ্গে করছি। এমন কোনো দিন নেই যে, আমাদের কেউ কথা বলছে না মিডিয়ার সঙ্গে৷ আশা করছি, সবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে পারব।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘অতীতে যা হয়েছে, ভুলে যান। এটা বর্তমান। দয়া করে ‘কনফাইন টু দি কারেন্ট সিচুয়েশন’। সবাই যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে পরিবেশ আমরা তৈরি করে দেব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ