সরিষাবাড়ীতে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা ঘেরাও, অভিযুক্ত শিক্ষক আটক
Published: 16th, March 2025 GMT
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মাদ্রাসায় ১২ ও ১৩ বছর বয়সী দুই ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার রাতে বিক্ষুব্ধ লোকজন প্রায় আড়াই ঘণ্টা মাদ্রাসাটি ঘেরাও করে রাখে।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গতকাল রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই ছাত্র ওই মাদ্রাসার আবাসিকে থাকে। কয়েক দিন আগে পর্যায়ক্রমে তাদের দুজনকে ওই শিক্ষক ধর্ষণ করেন—এমন অভিযোগ তোলেন স্বজনেরা। ছাত্রদের স্বজনেরা বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানান। স্থানীয় লোকজন গতকাল রাতে ওই মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নেন। ধীরে ধীরে লোকজন বাড়তে থাকে। তাঁরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে মাদ্রাসায় ওই শিক্ষক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। প্রথমে পুলিশ ও পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন জানান, ওই শিক্ষক প্রায় দুই থেকে তিন মাস ধরে ওই ছাত্রদের ধর্ষণ করে আসছিলেন। আজ (গতকাল) বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। এরপর স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসা ঘেরাও করেন। লোকজন ব্যাপক উত্তেজিত ছিল। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দুই ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই মাদ্রাসা ঘেরাও করেন। লোকজন শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্লোগানও দিচ্ছিলেন। কোনোভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। অনেক কষ্টে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বুঝিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। শিক্ষক ও ছাত্রদের পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় ল কজন পর স থ ত শ ক ষকক গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে নববর্ষকে বরণ, শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা ভাস্কর শামীমকে সংবর্ধনা
যশোরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মাধ্যমে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব পালিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কালেক্টরেট চত্বর থেকে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের হয়।
এর আগে দেশব্যাপী বর্ষবরণ শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন।
অনুভূতি ব্যক্তকালে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম বলেন, এই সম্মাননা শুধু আমার একার নয়। যশোরের সব সাংস্কৃতিক কর্মী, সামাজিক ও রাজনীতিক সর্বোপরি গোটা দেশবাসীর। যশোর থেকে শুরু হওয়া পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা আজ প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাঙালিরা সাড়ম্বরে পালন করছে। এই আনন্দ আজ সবার। আজকের এই সম্মাননায় আমি আপ্লুত, খুশি।
অনুষ্ঠানে যশোর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ৩২টির অধিক সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যশোর কালেক্টরেট চত্বরে সমবেত হয়।
জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ এসো এসো গান গেয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সম্মাননা অনুষ্ঠানের পরপরই দেশবাসীর কল্যাণ কামনায় শহরে একটি বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে বেরিয়ে বকুলতলা, দড়াটানা, চৌরাস্তা, কেশবলাল সড়ক হয়ে যশোর ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। এবারের শোভাযাত্রায় সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন প্রাণ প্রকৃতি পাখ পাখালির মোটিফ, ঘোড়ারগাড়িসহ গ্রামবাংলার চিরায়ত বিভিন্ন সামগ্রী বহন করা হয় ও র্যালি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। এসময় বিভিন্ন পেশার মানুষ নববর্ষের বাহারি রঙিন পোশাক পরিধান করে তাদের নিজস্ব বাদ্য বাজিয়ে নেচে গেয়ে তারা নববর্ষকে বরণ করে নেয়।
এদিকে, সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে যশোর পৌরপার্কে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যশোর উদীচী, নবকিশলয় স্কুলে বিবর্তন যশোর ও সুরধুনী ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজ নিজ ভেন্যুতে কবিগান, পালাগান, পঞ্চকবির গান, আধুনিক গান, লোকসংগীত, লোকনৃত্য, বাউল গান পরিবেশন করা হয়।
বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সব বয়সের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ উৎসব দেশে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করবে এমন আশা তাদের।
অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার রওনক জাহান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।