ইউরোপের পানীয়ে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
Published: 16th, March 2025 GMT
একের পর এক হুমকি দিয়েই চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষ মিত্র ইউরোপকেও ছেড়ে কথা বলছেন না। গত শুক্রবার আবারও ইউরোপের ওয়াইন, কনিয়্যাক ব্র্যান্ডি ও অন্যান্য পানীয়ে ২০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্প কোথায় গিয়ে থামবেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছে। বাদ পড়েনি ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)। ইইউ জানিয়েছে, তারাও পরের মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হুইস্কি ও অন্যান্য পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ট্রাম্পের স্পষ্ট বার্তা, অন্যান্য দেশ যতবার তাঁদের পণ্যে শুল্ক চাপাবে, ততবারই ‘প্রত্যাঘাত’ করবেন তিনি। খবর বিবিসি।
ফলে ইইউ সেই ঘোষণা কার্যকর করলে তাদের মদের ওপরও শুল্ক কার্যকর করা হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, এই ‘শুল্ক ও পাল্টা শুল্কের’ লড়াই কীভাবে শেষ হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই দোলাচলের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি শ্লথ হয়ে পড়বে—সেই আশঙ্কা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহকারী কানাডা। তারাও ট্রাম্প–শুল্কের জবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও)। এর মধ্যে কানাডার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসচিবের বৈঠক হওয়ার কথা। তবে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ ঘনিয়ে উঠছে।
এরই মধ্যে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্ববাণিজ্যের আকার ১ দশমিক ২ লাখ কোটি ডলার বেড়ে ৩৩ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। শেষ ত্রৈমাসিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে ভারত ও চীনের মতো দেশের বাণিজ্য। তবে শুল্ক যুদ্ধের প্রভাব এই বৃদ্ধিতে কতটা প্রভাব ফেলে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট মহলের।
মেরি টেইলর নামের এক মার্কিন আমদানিকারক বিবিসিকে বলেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা তাঁদের জীবিকার জন্য বড় হুমকি। এই শুল্ক কার্যকর করা হলে এই শিল্পের জন্য বিপর্যয়কর হয়—রেস্তোরাঁ, বার ও পরিবেশকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
টেইলর প্রতিবছর ইউরোপ থেকে ২০ লাখ বোতল পানীয় আমদানি করেন। প্রথম জমানায় ট্রাম্প এসব পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। সেই ধাক্কা একভাবে সামলেছেন তিনি। কিন্তু ২০০ শতাংশ শুল্ক একেবারে ভিন্ন বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
ট্রাম্পের এই ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণায় সপ্তাহের শেষ দিন গত শুক্রবার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শেয়ার সূচকের পতন হয়েছে।
ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অ্যালকোহলভিত্তিক পানীয় আমদানি করে, সেগুলো হলো ফ্রেঞ্চ ওয়াইন, ইতালিয়ান ওয়াইন, ফ্রেঞ্চ স্পিরিটস, ডাচ বিয়ার, স্প্যানিশ ওয়াইনস, ডাচ স্পিরিটস, আইরিশ স্পিরিটস, ইতালিয়ান স্পিরিটিস, আইরিশ বিয়ারস ও ইতালিয়ান ভারমৌথস।
এবার ক্ষমতায় আসার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পুরোনো মিত্র ঠিক, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র র ইউর প আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এমআরটি পুলিশ-মেট্রো কর্মচারীদের হাতাহাতি, ট্রেন বন্ধের হুঁশিয়ারি
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মীকে এমআরটি পুলিশ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে অভিযোগ করে বিচার দাবি করেছে মেট্রোরেলের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী দায়ী পুলিশ সদস্যদের একদিনের মধ্যে স্থায়ী বরখাস্ত না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি তথা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে ১৭ মার্চ সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
রোববার রাত দুইটার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মেট্রোরেলের কর্মীরা। ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’ এর ব্যানারে বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো, এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা পুলিশের উপপরিদর্শক মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত এবং পরিদর্শক রঞ্জিত, কন্সটেবল শাস্তি দিতে হবে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এমআরটি পুলিশ বিলোপ করে মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় নিজস্ব বাহিনী গঠন করতে হবে। স্টেশনে দায়িত্ব পালন করা মেট্রো কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয়পত্র এবং অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে পারবে না। আহত কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একাধিক কর্মী জানান, ১৭ মার্চ সকাল থেকে ট্রেন চালানো হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে দুজন মহিলা পরিচয়পত্র না দেখিয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করে, স্টেশনের সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। নির্ধারিত পোশাক পরিহিত না হওয়ায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে পুলিশের এপিবিএন দুইজন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে, তা না লাগিয়ে চলে যান। মেট্রোর কর্মীরা কারণ জানতে চাইলে, তারা এবং কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে তর্কে জড়ান। কর্মরত কর্মীর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে। আরেকজন কর্মীকে এমআরটি পুলিশ বক্সে তুলে নিয়ে মারধর করে। এছাড়াও বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে উপস্থিত অন্যান্য কর্মী ও যাত্রীরা এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে।