২.২ ওভারে ১/৩। এরপর ১৮.৪ ওভারে ৯১/১০!

পাকিস্তানের নতুন শুরুর এই দশা! বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নতুন যুগের সূচনা করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। সেটা করার পথে প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেল দলটি।  

ক্রাইস্টচার্চে আজ টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে সালমান আগার দল গুটিয়ে গেছে মাত্র ৯১ রানে। যা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন। নিউজিল্যান্ড এই রান তাড়া করেছে ৯ উইকেট আর ৫৯ বল হাতে রেখে। তাতে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে কিউইরা।

টি–টোয়েন্টির মেজাজ অনুসারে পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেন না বলে বাবর ও রিজওয়ানকে নিউজিল্যান্ড সফরের দলে রাখা হয়নি। এই দুজনের জায়গায় আজ ওপেন করেন মোহাম্মদ হারিস ও অভিষিক্ত হাসান নওয়াজ। তিন নম্বরে উইকেটে আসেন অধিনায়ক সালমান।

নতুন রূপের এই ব্যাটিং লাইনআপ শুরুতেই কাইল জেমিসন ও জ্যাকব ডাফির তোপের মুখে পড়ে। প্রথম ২.

২ ওভারে ১ রান তুলতেই যায় ৩ উইকেট। দুই ওপেনারই ফিরেছেন শূন্য হাতে। পাওয়ার প্লেতে উঠেছে ৪ উইকেটে ১৪ রান।

অধিনায়ক সালমান খেলেন ওয়ানডে মেজাজে ২০ বলে ১৮ রানের ইনিংস। অবশ্য তিনি আর কী করতে পারতেন! যেভাবে অন্য প্রান্ত থেকে একের পর উইকেট পড়েছে, তাতে ধরে খেলার চেষ্টাকেই যথাযথ মনে করেছেন তিনি। সেটিও টিকেছে ২০ বল পর্যন্ত।

রান করেছেন শুধু খুশদিল শাহ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানের সেরা পারফর্মার খুশদিল আজ করেছেন ৩০ বলে ৩২। তাঁর এই ইনিংস ও জাহানদাদ খানের ১৭ রানের ইনিংসে ভর করে কোনোমতে ১০০ রানের কাছাকাছি পৌঁছায় পাকিস্তান। ডাফি উইকেট নিয়েছেন ১৪ রানে ৪টি, জেমিসন ৮ রানে ৩টি।

এত ছোট পুঁজি নিয়ে আর যা–ই হোক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব নয়! আইপিএলে কারণে বড় তারকারা এই সিরিজটি না খেললেও নিউজিল্যান্ড দলে ফিন অ্যালেন ও টিম সাইফার্ট, মার্ক চ্যাপম্যানের মতো পরীক্ষিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার আছেন। নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার সাইফার্ট ও অ্যালেন ৫.৫ ওভারে ৫৩ রান তুলে ফেলেন। এরপর সাইফার্ট ৪৪ রান করে ফিরলেও অ্যালেন ১৭ বলে ২৯ রানে রানে অপরাজিত থাকেন। সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি ১৮ মার্চ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ১৮.৪ ওভারে ৯১ (খুশদিল ৩২, জাহানদাদ ১৭; ডাফি ৪/১৪, জেমিসন ৩/৮)।
নিউজিল্যান্ড: ১০.১ ওভারে ৯২/১ (সাইফার্ট ৪৪, অ্যালেন ২৯*; আবরার ১/১৫)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: কাইল জেমিসন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘পোলারে মাইর্যা ফালাইছে, নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো’

বরগুনায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করার পর বাবাকে হত্যার ঘটনায় পরিবারটি শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। একদিকে কিশোরীটির দুর্দশা, অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে আর্থিক অনিশ্চয়তা তাদের ঘিরে ধরেছে। ওই পরিবারের প্রবীণ নারী ছেলে হারিয়ে, নাতনির অবস্থা দেখে আক্ষেপ করে বলছিলন, ‘আমরা বাঁচমু ক্যামনে? পোলারে মাইর্যা ফালাইছে। নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো। এহন আমাগো দ্যাখবে কেডা?’

পরিবারটির ভাষ্য, বরগুনা সদরের বাড়ি থেকে ৪ মার্চ বিকেলে প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ওই কিশোরী (১৪)। পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে সিজিত রায় নামের এক বখাটের নেতৃত্বে কয়েকজন মুখে কাপড় গুঁজে কিশোরীকে অপহরণ করে। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরের দিন ৫ মার্চ সকালে ওই কিশোরীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পার্কে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা (৩৭) ওই দিন রাতেই বরগুনা সদর থানায় সিজিত রায়সহ দুজনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন। পরের দিন স্থানীয় জনতা দুজনকে ধরে পুলিশে দেয়। পুলিশ সিজিতকে আটক করে এবং তার বন্ধুকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়। কিশোরীর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে এবং ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে শাসাতে থাকে আসামিপক্ষ। এরপর ১১ মার্চ কর্মস্থলে গিয়ে নিখোঁজ হন কিশোরীর বাবা। ওই দিন রাত সোয়া ১২টার দিকে মুঠোফোনের রিংটোনের সূত্র ধরে বাড়ির পাশের ঝোপ থেকে কিশোরীর বাবার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামির বাবাসহ চারজনকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, এসব ঘটনার ধকলে সেই কিশোরী এখন নির্বাক। সে খাবার খাচ্ছে না, সারাক্ষণ চুপচাপ থাকছে, কারও সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলছে না। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আর নীরবে চোখের পানি ফেলে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটির সবাই দিশাহারা। প্রতিবেশী ও অন্যরা সাময়িকভাবে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করলেও দীর্ঘ মেয়াদে কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। টাকার অভাবে কিশোরীকে চিকিৎসকের কাছেও নিতে পারছেন না বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

ছয়জনের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন কিশোরীর বাবা। ছোট্ট কাঠ-টিনের জরাজীর্ণ ঘর ও তার চারপাশ দেখে দারিদ্র্য টের পাওয়া যায়। কিশোরীর মা বললেন, ‘আমাগো আর কী জিগাইবেন? এর চাইতে আমাগো মাইর্যা হালাইলেও বাঁইচ্চা যাইতাম।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম গতকাল দুপুরে কিশোরীর বাড়িতে যান। তিনি পরিবারটির খোঁজখবর নেন। তিনি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, হত্যা মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ধর্ষণ মামলার আসামিরা কারাগারে আছে। পরিবারটি কঠিন সময় পার করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাদের এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল হালিম আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ও তার এক বন্ধুকে আটক করা হয়েছিল। এরপর তাদের ওই কিশোরীর মুখোমুখি করা হয়। তখন একজনকে কিশোরী শনাক্ত করেনি। তাই মুচলেকা রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিশোরীর বাবা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে একজনের ব্যাপারে তদন্ত করে এই ঘটনায় জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল তদন্ত করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেদিন রানার জন্যই খেলেছিল বাংলাদেশ
  • ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর
  • বরগুনার সেই পরিবারটির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান, পাশে থাকার আশ্বাস
  • মাগুরার শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা, বোন ছিলেন রান্নাঘরে
  • কখন আসছেন হামজা, গন্তব্য কোথায়?
  • দেশে বয়ে চলেছে বছরের প্রথম তাপপ্রবাহ
  • নুরুল–সাদমানের সেঞ্চুরি, জিতেছে তাঁদের দল ধানমন্ডি ও অগ্রণী ব্যাংকও
  • ‘পোলারে মাইর্যা ফালাইছে, নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো’
  • ৯১ রানে অলআউট হয়ে ৯ উইকেটে হারল পাকিস্তান