ঈদযাত্রা: ২৬ মার্চের ট্রেনের টিকিট মিলছে আজ
Published: 16th, March 2025 GMT
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ)। রবিবার (১৬ মার্চ) তৃতীয় দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। অগ্রিম টিকিটের শতভাগই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।
সকাল ৮টা থেকে মিলছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট। আর পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে। আজ যারা টিকিট কিনবেন তারা আগামী ২৬ মার্চ ভ্রমণ করতে পারবেন।
এর আগে, গত ৯ মার্চ রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চের টিকিট ১৬ মার্চ, ২৭ মার্চের টিকিট ১৭ মার্চ, ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ, ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ ও ৩০ মার্চের টিকিট ২০ মার্চ পাওয়া যাবে। এছাড়া, চাঁদ দেখার ওপর ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।
আরো পড়ুন:
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু আজ, ফিরতি টিকিট ২৪ মার্চ
কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি
ঈদযাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাত বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু, এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে দুটি এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে।
এছাড়া, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ থেকে ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ঈদের পর যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
ঢাকা/হাসান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ ঈদ স প শ ল এক জ ড়
এছাড়াও পড়ুন:
ত্রিশালে একের পর এক শ্রমিক অসুস্থের ঘটনায় কারখানায় ছুটি ঘোষণা, তদন্ত কমিটি
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত কাজ (ওভারটাইম) করার সময় গতকাল বুধবার তাঁরা কারখানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। ত্রিশালের রামপুর ইউনিয়নের বীর রামপুর এলাকায় ‘জেওসি বিডি গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেড’ নামের একটি কারখানায় ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর আজ কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কারখানার শ্রমিক ও কর্মকর্তারা জানান, কারখানায় কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকেরা গতকাল বেলা ১১টার পর থেকে অসুস্থবোধ করতে থাকেন। শ্রমিকেরা প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে কাজ করার পর রাত ১০টা পর্যন্ত ওভারটাইম করেন। গতকাল সন্ধ্যার পর হঠাৎ শ্রমিকেরা অচেতন হয়ে পড়তে থাকেন। এ অবস্থায় ১৩ জনকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নিয়ামুল হোসাইন বলেন, শ্রমিকেরা দুপুর ১২টা থেকে অসুস্থবোধ করলে কারখানার চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়। শরীরে চিনির পরিমাণ কমে যাওয়া, গরমের কারণে পানিশূন্যতা থেকে এমনটি হতে পারে। দিনের বেলায় শ্রমিকেরা অসুস্থ হলেও কেউ হাসপাতালে আসেনি। তিনি বলেন, শ্রমিকদের সবার রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, রাত নয়টার পর হাসপাতালের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ জন শ্রমিককে ভর্তি করা হয়। তাঁদের অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। রাত ১২টার পর শ্রমিকেরা কিছুটা সুস্থ অনুভব করতে থাকেন।
আজ বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকদের চিকিৎসা চলছে। কারখানাটির বিভিন্ন পদের কর্মীরা শ্রমিকদের ঘিরে আছেন। চিকিৎসাধীন তাহমিনা আক্তার (২৫) জানান, তাঁরা কারখানায় সকাল সাতটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করেন। সকালে কাজ শুরুর পর বেলা ১১টার পর হঠাৎ একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কারখানার মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। লাঞ্চের পর আরও কয়েকজন অচেতন হয়ে পড়েন। ইফতারের পর অন্যরা অসুস্থ হতে থাকলে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়। আগে দু-একজন অসুস্থ হলেও গতকালের মতো পরিস্থিতি কোনো দিন হয়নি।
কারখানার সেকশন ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিউটির চাপ একটু বেশি ছিল। রোজায় অনেকের শরীর দুর্বল ছিল। দুপুরের পর দু-তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়। ইফতারের পর আরও ১০ জন অসুস্থ হলে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করি। তাঁরা এখন সুস্থ। খাবার বা অন্য কোনো কারণ থেকে এ সমস্যা হয়নি।’ তিনি বলেন, শ্রমিকেরা আজ কারখানায় এলেও গতকালের পরিস্থিতির কারণে বিশ্রামের জন্য আজ ছুটি দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এমদাদ উল্লাহ খান বলেন, ১০ জন নারী শ্রমিক ভর্তি হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগের বয়স ২০ থেকে ২২। সবার একই ধরনের উপসর্গ ছিল—মাথা ঘোরাচ্ছিল, অচেতন হয়ে যাচ্ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, অসুস্থ শ্রমিকেরা ওভারটাইমের কাজ করছিলেন। চিকিৎসায় আজ তিনজনের কিছুটা মাথা ঝিমঝিম ভাব থাকলেও বাকিরা অনেকটা সুস্থ। সাইকোলজিক্যাল ইলনেস থেকে শ্রমিকদের এমন হয়েছে। তবে তদন্ত করলে প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।
ঘটনা তদন্তে কমিটিএ ঘটনায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপমহাপরিদর্শক আহমাদ মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে অসুস্থ হয়ে ১০ জন শ্রমিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। আজ তাঁদের প্রতিনিধি দল হাসপাতালে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে। শ্রমিকেরা অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় আজ ও কাল কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অতিরিক্ত কাজের চাপে শ্রমিকেরা অসুস্থ হয়েছে কি না তা তদন্তের পর বলা যাবে।