ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম চালাতে আর ভালো লাগে না কোহলির
Published: 16th, March 2025 GMT
ক্রিকেটারদের মধ্যে আর কারোরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এত বেশি অনুসারী নেই। শুধু ইনস্টাগ্রামেই বিরাট কোহলির অনুসারী ২৭ কোটি। এর বাইরে ফেসবুকে তাঁকে অনুসরণ করেন ৫ কোটি ১০ লাখ আর এক্সে ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ।
অথচ ভারতীয় এই ক্রিকেটারের নাকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন পোস্ট করতে আর ভালো লাগে না। ল্যাব ইন্ডিয়ান স্পোর্টস সামিটের এক অনুষ্ঠানে এমন কথা জানিয়েছেন কোহলি নিজেই। এসব থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেন? কারণ জানাতে গিয়ে কোহলি বলেছেন, ‘এখন আমি আর এত বেশি পোস্ট করি না। অনেকেই এতে খুশি নয়, কিন্তু এটা আমি সচেতনভাবেই করছি। কারণ, ওই প্রবাহ ধরে রাখা একটু বেশিই হয়ে যায়। শারীরিকভাবে এটা আমার অনেক শক্তি কেড়ে নেয় বলে মনে হয়—যেটা আমি খেলায়, নিজের জীবন বা আশপাশের মানুষকে দিতে পারি। আমি তা অপচয় করতে চাই না।’
আরও পড়ুন‘ডান্ডিয়া’ নাচের পর ভাইরাল রোহিত–কোহলি ১০ মার্চ ২০২৫এখনো অবশ্য মাঝেমধ্যে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত ছবি দিতে দেখা যায় কোহলিকে। কিন্তু সেটিও নাকি অতীতে করা তাঁর বিভিন্ন বাণিজ্যিক চুক্তিরই অংশ। নিজের ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনকে সম্পূর্ণ আলাদা করে ফেলার ইচ্ছা ভারতীয় এই তারকার, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো এমন অনেক কিছুই করতে হয়, যেটা করার বিষয়ে আমি অতীতে সম্মতি দিয়েছি। কিন্তু যদি এখন জিজ্ঞেস করেন, ব্যক্তিগত জিনিসগুলো আমি আর না দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন। পরবর্তী জীবনে আমি যা–ই করি না কেন, অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব এসব থেকে।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে বিরাট কোহলি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ, স্বজন ও এলাকাবাসীর হাসপাতাল ভাঙচুর
কুমিল্লা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই তরুণের স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের নিচতলায় ভাঙচুর করেছেন।
গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকায় ‘কুমিল্লা ট্রমা সেন্টার’ নামের বেসরকারি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে থাকা ইমরান হোসেন (২১) নামের এক তরুণকে মৃত ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, রোগীর চিকিৎসায় তাদের কোনো অবহেলা বা ভুল ছিল না।
মৃত ইমরান হোসেন কুমিল্লা নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দ্বিতীয় মুরাদপুর এলাকার দুবাইপ্রবাসী হুমায়ুন মিয়ার ছেলে। হুমায়ুন মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে ইমরান সবার বড়। দরজির কাজ শিখে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইমরান।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও রোগীর স্বজনেরা। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির দুটি ভবনের বেশির ভাগ অংশের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে সরে পড়েন বেশির ভাগ চিকিৎসক ও কর্মীরা। ১৪ তলাবিশিষ্ট নতুন ভবনের নিচতলায় ভাঙচুর করা চেয়ারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে। প্রথমে পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আতঙ্কে হাসপাতাল থেকে অনেক রোগীকে নিয়ে যান স্বজনেরা।
ঘটনাস্থলে থাকা ইমরান হোসেনের চাচা জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সম্প্রতি ইমরান হোসেনের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয়। গত বুধবার তাঁকে ট্রমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার ইমরানের অস্ত্রোপচার করা হয়। অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে চিকিৎসক বলেন, অপারেশন সাকসেসফুল। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার বলেন, রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে, তাঁকে আইসিইউতে নিতে হবে। এই বলে ইমরানকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আমরা বারবার চেষ্টা করলেও আমাদের খুব বেশি রোগীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হতো না। সর্বশেষ রোববার বিকেলে অনেক কষ্টে আমি আইসিইউতে গিয়ে দেখি—রোগীর কোনো সাড়াশব্দ নেই। তখনই আমার মনে হয়েছে, ইমরান আর বেঁচে নেই। এরপর আমরা চিৎকার করলে সেখানে কর্মরত ব্যক্তিরা বলেন, রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হবে। এরপর তাঁরা লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যান। বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি।’
জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ভাতিজার চিকিৎসার পেছনে তিন লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আমাদের বলা হয়েছিল, অপারেশন খরচ ২৫ হাজার টাকা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। যখন ভর্তি করি, তখন বলেছিল, ঢাকা থেকে বড় সার্জন এসে অপারেশন করবে, কিন্তু তারা কুমিল্লা ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করিয়েছে। তাদের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
গতকাল রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ সফিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোগীর বড় ধরনের সমস্যা ছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি তাকে বাঁচানোর জন্য। এখানে চিকিৎসক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা নেই। ভুল চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বিষয়টি বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’