সবুজ গম্বুজের খান জামে মসজিদের তিন শতাব্দীর ইতিহাস
Published: 16th, March 2025 GMT
প্রবেশপথের শুরুতেই সুউচ্চ মিনারটি নজর কাড়ে। মিনারের ওপর সবুজ রঙের গোলাকৃতি গম্বুজ। এই মিনার থেকেই আজান দেওয়া হয় রোজ ৫ ওয়াক্ত। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বাগিচাহাটের শঙ্খ নদের তীরে খান জামে মসজিদটি প্রায় ৩০০ বছর ধরে বহন করে চলেছে মোগল রাজত্বের ইতিহাস।
বাগ-ই-শাহ হাট থেকে বাগিচাহাট। শাহি সৈন্যদের বাগান অর্থাৎ যেখানে তাদের সমাহিত করা হয়েছে। খান মসজিদের প্রাঙ্গণে এমন ২২টি বাঁধানো কবর চোখে পড়ে। এক সারিতে ১৩টি আরেক সারিতে ৯টি। আরাকানদের সঙ্গে শঙ্খের তীরে প্রায়ই যুদ্ধ হতো মোগলদের। সেসব যুদ্ধে যেসব উচ্চপদস্থ সেনা নিহত হতেন, তাঁদের কবর দেওয়া হতো মসজিদের প্রাঙ্গণে।
বাংলার মোগল সুবাদার শায়েস্তা খানের ছেলে উমেদ খান অভিযান পরিচালনা করেন চট্টগ্রামে। আরাকানদের পরাজিত করে রামু পর্যন্ত হটিয়ে অঞ্চলটি তাদের দখলে নিয়ে আসে মোগলরা। তবে বর্ষাকাল হওয়ায় রামুর পাহাড়ি অঞ্চলে তাদের অবস্থান করা কঠিন হয়ে যায়। এ কারণে শঙ্খ নদের দুই পাড়ে সীমান্ত নির্ধারণ করেন তাঁরা। দুই পাড়ে সীমান্তরক্ষী নিযুক্ত হন আধু খান ও লক্ষণ সিংহ হাজারী। আধু খানের নামে পরে ২২টি মসজিদ, দিঘি ও হাটের পত্তন হয়। তারই একটি বাগিচাহাটের খান জামে মসজিদ ও দিঘি। ১৮ শতকের প্রথম দিকে এসব মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি।
প্রায় ১৮ শতক জমির ওপর অবস্থিত খান জামে মসজিদটি মূলত ওই ২২টি কবরের জন্যই বিখ্যাত। মূল ভবনের মাঝবরাবর একটি বড় গম্বুজ ও দুই পাশে দুটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। বর্তমান মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল হক মাস্টার (৭৫) বলেন, পুরোনো মসজিদ ভবনে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় প্রায় ২৫ বছর আগে তৎকালীন মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রচেষ্টায় মসজিদটি সম্প্রসারণ করে দোতলা ভবন করা হয়। সে সময় সড়কসংলগ্ন আজান দেওয়ার জন্য যে মিনারটি ছিল, তা ভেঙে ফেলা হয়। ২২টি কবরের মধ্যে সড়কের পাশের ভিন্ন রঙের উঁচু কবরটি তৎকালীন সময়ের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা শের-ই-জামালের। তিনি আধু খানের ছেলে ছিলেন।
পরবর্তী সময়ে দোহাজারী, লোহাগাড়া, মিরসরাই, চট্টগ্রাম শহরের জামাল খান, রহমতগঞ্জসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে আধু খান ও লক্ষণ সিংহ হাজারী নানান স্থাপনা নির্মাণ করেন। চন্দনাইশ গাছবাড়িয়া খানহাট, লোহাগড়া আধুনগরে খানহাট এসবই আধু খানের ও তাঁর বংশধরদের নির্মাণ। জামাল খানের নামকরণ হয় আধু খানের ছেলে শেরে জামাল খানের নামে, রহমতগঞ্জের নাম তাদের আত্মীয় রহমত খানের নামে, জোরারগঞ্জ হচ্ছে লক্ষণ সিংহ হাজারীর ছেলে জোরার সিংহ হাজারীর নামে।
মসজিদের পানির চাহিদা পূরণের জন্য ২৪ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে খান দিঘি। এ ছাড়া মসজিদের ভেতরে একটি কক্ষে রয়েছে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদযাত্রা: ২৬ মার্চের ট্রেনের টিকিট মিলছে আজ
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ)। রবিবার (১৬ মার্চ) তৃতীয় দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। অগ্রিম টিকিটের শতভাগই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।
সকাল ৮টা থেকে মিলছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট। আর পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে। আজ যারা টিকিট কিনবেন তারা আগামী ২৬ মার্চ ভ্রমণ করতে পারবেন।
এর আগে, গত ৯ মার্চ রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চের টিকিট ১৬ মার্চ, ২৭ মার্চের টিকিট ১৭ মার্চ, ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ, ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ ও ৩০ মার্চের টিকিট ২০ মার্চ পাওয়া যাবে। এছাড়া, চাঁদ দেখার ওপর ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।
আরো পড়ুন:
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু আজ, ফিরতি টিকিট ২৪ মার্চ
কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি
ঈদযাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাত বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু, এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে দুটি এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে।
এছাড়া, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ থেকে ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ঈদের পর যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
ঢাকা/হাসান/রাজীব