রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজ আহমেদ ওরফে ইজাজ নামে এক ব্যক্তি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। হত্যা মামলায় এদিন ভোরে ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ইজাজ শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ পুলিশের। তবে তার মৃত্যুর পর নানা প্রশ্ন তুলেছে ইজাজের পরিবার।
  
পুলিশ জানায়, এজাজের বাসা হাজারীবাগ থানা এলাকায়। তিনি মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের ‘ডান হাত’ হিসেব পরিচিত। ১০ মার্চ ডাকাতি মামলায় যৌথ বাহিনী তাকে মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন মোহাম্মদপুর থানার মামলায় তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। ওই দিনই জামিন পান তিনি।

এজাজের বাবা শাহ আলম খান সমকালকে বলেন, তাঁর ছেলের কিডনিতে পাথর ছিল। গ্রেপ্তারের পর তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। এজাজ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে তার কিডনির সমস্যা আরও বেড়ে যায়। জামিন পাওয়ার পর জিগাতলার জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। জামিনে থাকা সত্ত্বেও শনিবার ভোরে হাসপাতাল থেকে ডিবি ও মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ এজাজকে ফের গ্রেপ্তার করে। অসুস্থ থাকায় সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঈদের পর এজাজের ‘বার এট ল’ করতে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ১০ মার্চ গ্রেপ্তারের আগেই এজাজ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর ১১ মার্চ তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। 

ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এজাজকে ওয়ার্ড থেকে ডায়ালাইসিস বিভাগে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। স্বজন মরদেহটি জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যান। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ফের লাশ মর্গে পাঠায়।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান সমকালকে বলেন, এজাজ জামিন পাওয়ার পর জানতে পারি তিনি জুলাই-আগস্টে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি। এর পর তাকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছিল। পরে জানা যায়, তিনি জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গতকাল ভোরে ডিবির সহায়তায় হাসপাতাল থেকে তাকে হেফাজতে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তার স্বজন সঙ্গে ছিলেন। 

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ১৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন, সুইডেন আসলাম ও পিচ্চি হেলালের সঙ্গে এজাজ জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকেই তিনি বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছিলেন। সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি। শতাধিক সন্ত্রাসী সদস্য রয়েছে তার। এজাজের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। 

একটি সূত্র জানিয়েছে, এজাজের নেতৃত্বে কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয় ও কোপানো হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছরের শিশুকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ, বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

নীলফামারীতে সাত বছরের এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে আবু বকর সিদ্দিক (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ১১ মার্চ দুপুরে সদর উপজেলায় সাত বছর বয়সী এক শিশুকে প্রতিবেশী আবু বকর সিদ্দিক পেঁপে দেওয়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নেন। বাড়িতে গেলে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন তিনি। প্রথমে ঘটনা জানাজানি না হলেও শুক্রবার ভুক্তভোগী শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন সে বিষয়টি পরিবারকে জানায়। পরে তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয়রা অভিযুক্ত আবু বক্করকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাকে আটক করে পুলিশে দেন এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে আবু বক্করকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমআর সাঈদ জানান, অভিযুক্তি আবু বক্কর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এদিকে, দুপুরে ভুক্তভোগী শিশুকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ